ঢাকা, মঙ্গলবার   ২২ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

প্রয়াত ক্রিকেটার কাদিরের কিছু জানা-অজানা তথ্য

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:৪৭, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ১৫:৫২, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

না ফেরার দেশে চলে গেলেন পাকিস্তান জাতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার আব্দুল কাদির। শুক্রবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৬৩ বছর বয়সে মৃত্যু হয় কিংবদন্তি ক্রিকেটারের। বিস্ময় স্পিনারের ১৬ বছরের ক্রিকেট জীবনে যেমন রয়েছে সাফল্যের অনন্য নজির, আবার তেমনই রয়েছে ব্যর্থতার নিদর্শন। দেখে নেওয়া যাক তার বিষয়ে কিছু জানা-অজানা তথ্য।

১৯৫৫ সালে পাকিস্তানের লাহৌরে তার জন্ম। পুরো নাম আব্দুল কাদির খান। পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রথম খেলতে আসেন ১৯৭৫-’৭৬ মৌসুমে। হাবিব ব্যাঙ্ক লিমিটেডের হয়ে শুরু তার ক্রিকেট সফর।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন ১৯৭৭ সালে। ঘরের মাঠ লাহৌরেই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট। ড্র হয়ে যাওয়া ম্যাচে সেইভাবে ছাপ ফেলতে পারেননি তিনি। ২২ বছরের কাদিরের প্রথম শিকার ইংল্যান্ডের বব উইলিস।

তার টপ স্পিন বোলিংয়ের জন্য বিখ্যাত ছিলেন কাদির। কেরিয়ারে কাদির খেলেছেন ৬৭টি টেস্ট এবং ১০৪টি ওয়ান-ডে। তার সংগ্রহে রয়েছে ২৩৬টি টেস্ট উইকেট এবং ১৩২টি একদিনের উইকেট। টেস্টে ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব রয়েছে ১৫ বার। ম্যাচে দশ উইকেট নিয়েছেন পাঁচ বার।

টেস্টে তার সেরা বোলিং ৫৬ রানে ৯ উইকেট। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৯৮৭ সালে লাহৌরের গদ্দাফি স্টেডিয়ামে নিজের এই রেকর্ড করেন তিনি। একদিনের ক্রিকেটে সেরা বোলিং ১৯৮৩-র বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে। ৪৪ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট পেয়েছিলেন সে দিন।

ফিঙ্গার স্পিনার বিশ্ব ক্রিকেট অনেক পেলেও কাদিরই প্রথম রিস্ট স্পিনার। তার লেগ ব্রেক এবং গুগলি ত্রাস সৃষ্টি করত ব্যাটসম্যানদের মনে। তার সঙ্গে ছিল তার অদ্ভুত বোলিং অ্যাকশন। অনেকে নাচের সঙ্গেও তুলনা করেছেন সেই বোলিং অ্যাকশনের।

কাদিরের আরও এক ক্ষমতা তাকে আলাদা করে দেয় বাকি বোলারদের থেকে। তিনি এক ওভারের ছ’টি বল ছয় রকমভাবে করতে পারতেন। যার মধ্যে গুগলি করতেন দুই রকমের। পাকিস্তানের অধিনায়ক ছিলেন পাঁচটি টেস্টে। যদিও সেই স্মৃতি সুখের ছিল না। পাঁচটির মধ্যে চারটি টেস্টেই হেরে যায় পাকিস্তান।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন ১৯৯৩ সালে। যদিও টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছিলেন ১৯৯০ সালে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে খেলে।

অবসরের পর পাকিস্তান ক্রিকেটে নির্বাচক ও কমেন্টেটরের ভূমিকা পালন করেছিলেন কাদির। তবে খেলোয়াড় হিসেবে বিতর্কে না জড়ালেও ২০০৪ সালে ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় সৃষ্টি হয় বিতর্ক।

পাকিস্তান টেলিভিশন (পিটিভি)-এর হয়ে ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই জানি সব পাকিস্তানি পেসার বল বিকৃত করে।’ তার এই বক্তব্য বিতর্ক সৃষ্টি করে। তার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে দেয় সেই টিভি চ্যানেল।

২০০৮ সালে তাকে পাকিস্তানের মুখ্য নির্বাচকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু মুম্বাই হামলার ফলে বাতিল হয়ে যায় ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজ। শ্রীলঙ্কার টিমবাসে সন্ত্রাসী হামলার জন্য খেলা হয়নি সেই সিরিজও। শেষ হয়ে যায় কাদিরের নির্বাচক হিসেবে দ্বিতীয় ইনিংসে।

ইংরেজ ওপেনার গ্রাহাম গুচ একবার এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, ‘শেন ওয়ার্নের থেকে কাদির অনেক ভাল স্পিনার ছিলেন।’ রিচি বেনোর অল টাইম গ্রেটেস্ট ইলেভেনেও জায়গা পেয়েছিলেন কাদির।

সম্প্রতি অসুস্থই ছিলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন লেগ স্পিনার। তাকে লাহোরের হাসপাতালেই চিকিৎসা করানো হচ্ছিল। এই কিংবদন্তির প্রয়াণের সংবাদে পাক ক্রিকেট মহলে নেমে এসেছে শোকের ছায়া৷

তার মৃত্যুতে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড টুইট করে জানায়, ‘কিংবদন্তি আবদুল কাদির প্রয়াণে পিসিবি শোকস্তব্ধ। তার পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি জানাই সমবেদনা।’


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি