ইতিহাস গড়ার চ্যালেঞ্জে বাংলাদেশ
প্রকাশিত : ১৭:২৩, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯
অপ্রত্যাশিত, দুর্বোধ্য পিচই নাকি পেয়েছে বাংলাদেশ, যার ফায়দা নিয়েছে প্রতিপক্ষ। চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা শেষে এমন অভিযোগই করেছিলেন স্বাগতিক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এই দুর্বোধ্য, চাওয়ার বিপরীত উইকেটে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে চূড়ান্তভাবে পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। জয়ের আশাটা তাই দুঃস্বপ্নেই পরিণত হয়েছে।
চট্টগ্রামের উইকেটে আগে ব্যাট করে অন্তত তিন'শ রান করা দল হারে না। ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে, এই টেস্টে হারার সম্ভাবনা নেই আফগানদের। কেননা, প্রথম ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ৩৪২ রান। অন্যদিকে ফলোঅনের শঙ্কায় থাকা বাংলাদেশ কোনও রকম দুশো ছাড়িয়েছে প্রথম ইনিংসে। তাই স্বাভাবিকভাবেই নির্ভার সফরকারীরা।
শনিবার সকালে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ২০৫ রানেই। যাতে আফগানিস্তান লিড পায় ১৩৭ রানের। তৃতীয় দিন শেষে যে লিডকে পাহাড়সম করে ফেলেছে রশিদ খানের দল। এ দিন শেষে তাদের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ২৩৭ রান। অর্থাৎ ৩৭৪ রানের লিড নিয়েছে আফগানরা। হাতে অক্ষত আছে আরও দুটি উইকেট।
রোববার ব্যাট হাতে না নেমে আফগানরা যদি ছেড়েও দেয়, তবুও এ টেস্টে বাংলাদেশের জেতাটা আপাতত অসম্ভব। কারণ টেস্ট ইতিহাসে চতুর্থ ইনিংসে আড়াই শ রানও তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই টাইগারদের। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ২১৭ রান তাড়া করে জিতেছিল বাংলাদেশ। সেটাও এক দশক আগে; দ্বিতীয় সারির ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। ওই ম্যাচটাই ছিল টেস্টে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড।
সুতরাং এ মুহূর্তে জয়ের স্বপ্ন দেখাটাই হবে বোকামি, বরং তা না দেখাই ভালো। উল্টো এই টেস্ট ড্র করতেই যে সর্বোচ্চ বেগ পেতে হবে সাকিব-মুশফিকদের! তার ওপর জয়! তা পেতে নতুন ইতিহাস গড়তে হবে টাইগারদের।
সকালে চার রানের মধ্যে আফগানিস্তানের দুই উইকেট ফেলে দিয়ে লড়াই জমিয়ে দেয়ার একটা আভাস দিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব। কিন্তু তা ওই পর্যন্তই। এরপর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হতাশা বাড়তে থাকে স্বাগতিকদের। এ ইনিংসে স্বস্তি বলতে ওপেনার ইব্রাহিম জাদরানকে শতক বঞ্চিত করা। ছয়টি চার ও চারটি ছক্কা মারা ইব্রাহিম আউট হয়ে গেছেন ব্যক্তিগত ৮৭ রানে।
আর প্রথম ইনিংসে অল্পের জন্য সেঞ্চুরি মিস করা আসগর আফগান আজ আউট হয়েছেন সই ৫০ রানে। পরে ওয়ানডে মেজাজে খেলতে নামা রশিদ আউট হওয়ার আগে ২২ বলে ছয়টি চার হাঁকিয়ে করেন ২৪ রান। রশিদের পর সাকিব যখন আরেকটি উইকেট তুলে নিয়ে আফগানদের লেজটা মুড়িয়ে দিতে চাইলেন, ঠিক তখনই দেখা দিল আলোক স্বল্পতা। যার ফলে সেখানেই দিন শেষ করে দেন আম্পায়াররা। দেখা যাচ্ছে, ভাগ্যও সহায় হচ্ছে না টাইগারদের।
কিন্তু এ ম্যাচ ড্র বা জিততে হলে ম্যাজিকাল কিছু করার সঙ্গে ভাগ্যেরও সাহয়তা প্রয়োজন খুব করে। অন্যদিকে, হারাটা যেমন সহজ, তেমনি জয় পাওয়াটাও কঠিন। তবে অসম্ভব নয়। কিন্তু ড্র করাটা নিতান্তই অসম্ভব। কেননা, টাইগারদের ব্যাটিং এবং চতুর্থ ও পঞ্চম দিনের পিচের কন্ডিশন। তার সঙ্গে যোগ হবে আফগান স্পিন। সব মিলে অল্পতেই গুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
এনএস/