সিরিজে ফিরতে পাকিস্তানের লক্ষ্য ১৮৩
প্রকাশিত : ২১:১৭, ৭ অক্টোবর ২০১৯ | আপডেট: ২১:৩০, ৭ অক্টোবর ২০১৯
ওয়ানডে সিরিজ জিতলেও টি-২০ লড়াই শুরু হতেই লঙ্কানদের কাছে প্রথম ম্যাচে হেরেছে পাকিস্তান। তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয়টিতে আজ লাহোরে মুখোমুখি দু’দল। যে ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করেতে নেমে শুরুতে দুটি উইকেট হারালেও রাজাপাকশের ফিফটিতে ১৮২ রানের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে লঙ্কনরা। ফলে সিরিজে ফিরতে পাকিস্তানকে করতে হবে ১৮৩ রান।
সোমবার লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠেয় ম্যাচটিতে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় সফরকারী শ্রীলঙ্কা।
এদিন ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১৬ রানেই উইকেট হারায় সফরকারী দল। ইমাদ ওয়াসিমের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন আগের ম্যাচের নায়ক দানুশকা গুনাথিলাকা। ১০ বলে তিন বাউণ্ডারিতে ১৫ রান করেন তিনি। এরপর রানাউটে কাটা পড়েন আরেক ওপেনার আভিস্কা ফার্নান্ডো। শাদাব খানের থ্রোতে মাত্র ৮ রানে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ফলে ৪১ রানেই দ্বিতীয় উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।
এরপরের গল্প শুধুই ভানুকা রাজাপাকশের। লাহোরে এদিন ব্যাটহাতে পাকিস্তানি বোলারদের ওপর রীতিমত রাজত্ব করেন লঙ্কান এই টপ অর্ডার। ৩১ বলে চার ছক্কা ও দুই চার মেরে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচেই প্রথম ফিফটি পেয়ে যায় ভানুকা। ঝড় তুলে ইনিংসের ১৭তম ওভারে শাদাব খানের বলে যখন আউট হন, ভানুকার নামের পাশে তখন মূল্যবান ৭৭ রান। তার ৪৮ বলের এই ঝোড়ো ইনিংসে ছিল ছয়টি ছক্কা ও চারটি চারের মার।
এর আগে আসিফ আলির ডিরেক্ট থ্রোতে রান আউটে কাটা পড়েন আরও এক লঙ্কান। তিনি হলেন শেহান জয়সুরিয়া, ২৮ বলে চারটি চার মেরে ৩৪ রান নিয়ে ফেরেন তিনি। ১৬তম ওভারে তার আউটের মধ্য দিয়েই মূলত খেলায় ফেরে পাকিস্তান। কেননা, এরপরের তিন ওভারেই শ্রীলঙ্কার চারটি উইকেট তুলে নেয় স্বাগতিক বোলার-ফিল্ডাররা। যাতে ১৩৪/২ থেকে মুহুর্তেই লঙ্কানদের স্কোর হয়ে যায় ১৫৫/৬।
তবে শেষ দিকে দলীয় অধিনায়ক দাসুন শানাকার দৃঢ়তায় আগের ম্যাচের চেয়েও চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাড় করায় শ্রীলঙ্কা। নির্ধারিত ওভার শেষে তাদের স্কোর দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ১৮২ তে। ১৫ বলে এক ছয় ও তিন চারে ২৭ রানের ঝড় তুলে অপরাজিত থাকেন শানাকা।
পাকিস্তানের পক্ষে আগের ম্যাচে তরুণ পেসার হাসনাইন হ্যাটট্রিক করলেও আজ ছিলেন সবাই নিষ্প্রভ। ফিল্ডাররা তিনটি রান আউট ঘাটালে ইমাদ ওয়াসিম, শাদাব খান ও ওয়াহাব রিয়াজ একটি করে উইকেট পান।
ম্যাচটি নিয়ে পাকিস্তানের অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ বলেছেন, দলের সামর্থ্য নিয়ে আমার কোনও সংশয় নেই। তবে একই সঙ্গে মনে রাখতে হবে, শ্রীলঙ্কাও শক্ত প্রতিপক্ষ। আর টি-২০ ফরম্যাটটাই এমন যে, এখানে নিজেদের দিনে যে কোনও দলই আসলে জিততে পারে। প্রথম ম্যাচেই সেটা সবাই প্রত্যক্ষ্য করেছে। তাই, এখানে নিজেদের সেরাটা দেয়ার কোনও বিকল্প নেই।
এদিকে এই সিরিজ দিয়ে পাকিস্তান দলে ফেরা তিন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের মধ্যে ফাহিম আশরাফ সফল হলেও ব্যর্থ হয়েছেন আহমেদ শেহজাদ, উমর আকমল। ২০১৮ সালের জুনে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ টি-২০ খেলা শেহজাদ প্রথম ম্যাচে করেন মাত্র ৪ রান। যে কারণে আজকের ম্যাচে তার পরিবর্তে দলে জায়গা পেতে পারেন আরেক ওপেনার ফখর জামান।
আর ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ টি-২০ খেলা উমর আকমল করেন ওই ম্যাচে ফেরেন শূন্য রানেই। এ ম্যাচে তাকে বসিয়ে হারিস সোহেলকে একাদশে সুযোগ দিতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে এই দুজনের উপরই নিজের আস্থার কথা জানিয়েছেন পাক দলনেতা সরফরাজ আহমেদ। যদিও তার নিজের ফর্ম নিয়েও চিন্তিত দলটির থিঙ্ক ট্যাঙ্ক।
তবে শেষ মুহুর্তে, স্বাগতিক একাদশে দুটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। যাতে আহমেদ শেহজাদ, উমর আকমল বাদ না পড়লেও বাদ পড়েছেন ইফতেখার ও ফাহিম। এদের পরিবর্তে সুযোগ পেয়েছেন ফখর জামান ও ওয়াহাব রিয়াজ।
অন্যদিকে প্রথম ম্যাচে এক নম্বর টি-২০ দলের মত খেলা শ্রীলঙ্কা আজও পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চায়। সে লক্ষ্যে অপরিবর্তিত একাদশ নিয়েই মাঠে নামে তারা।
শ্রীলঙ্কা:
দানুশকা গুণাথিলাকা, অভিশকা ফার্নান্দো, ভানুকা রাজাপাকসা, দাসুন শানাকা (ক্যাপটেন), শেহান জয়সুরিয়া, ইসুরু উদানা, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, মিনোদ ভানুকা, লক্ষণ সান্দকান, কাসুন রাজিথা ও নুয়ান প্রদীপ।
পাকিস্তান:
ফখর জামান, আহমেদ শেহজাদ, বাবর আজম, উমর আকমল, সরফরাজ আহমেদ (ক্যাপটেন), আসিফ আলী, ইমাদ ওয়াসিম, ওহাব রিয়াজ, শাদাব খান, মোহাম্মদ আমির ও মোহাম্মদ হাসনাইন।
এনএস/