এত সংকটে কখনও পড়েননি সাকিব
প্রকাশিত : ১৩:০৮, ২৯ অক্টোবর ২০১৯ | আপডেট: ১৩:১০, ২৯ অক্টোবর ২০১৯
ক্রিকেটারদের আন্দোলনের পর থেকে নানা ইস্যুতে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় জাতীয় দলের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে সংবাদমাধ্যমের ‘হটকেক’ ইস্যু এখন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার!
ভারত সফরে সাকিবের অংশগ্রহণে অনিশ্চয়তা থেকে শুরু করে এখন ফিক্সিং ইস্যুতেও তার নামটি জড়িয়েছে সবশেষ।
জুয়াড়িদের অনৈতিক প্রস্তাব গোপন রাখার অভিযোগে নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছেন সাকিব। জানা গেছে, বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) তাকে ১৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে। এর ফলে সব ধরনের ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার অথবা আগামীকাল বুধবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সাকিবের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি আইসিসি জানাবে বলে জানিয়েছে বিসিবির একাধিক সূত্র।
পাশাপাশি ক্রিকেটারদের ধর্মঘট চলাকালে একটি টেলিকম কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) প্রধান নাজমুল হাসান পাপন।
বিসিবি’র সঙ্গে সাকিব আল হাসানের মুখোমুখি অবস্থান এখন। কিন্তু এটাই কি প্রথম? এত বড় সংকটে কি কখনও পরেছেন তারকা ক্রিকেটার?
ইতিহাস বলছে, সাকিব আল হাসানের সঙ্গে বোর্ডের দ্বন্দ্ব নিয়মিত ঘটনা।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০১৪ সালে একটি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে সাকিব আল হাসান টেলিভিশন ক্যামেরার দিকে একটি অঙ্গভঙ্গি করার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেটা নিয়ে আলোচনার ঝড় ওঠে।
এরপর সাকিবকে ৩ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা ও ৩ লাখ টাকা জরিমানা করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ডিসিপ্লিনারি কমিটি।
এছাড়া, বোর্ডের শৃঙ্খলাভঙ্গ ও আচরণগত সমস্যার অভিযোগে ২০১৪ সালের ৭ জুলাই সাকিব আল হাসানকে ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক সব ধরনের ক্রিকেট থেকে ছয় মাসের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল বিসিবি।
শাস্তি হিসেবে পরবর্তী দেড় বছর দেশের বাইরে কোনও টুর্নামেন্টে খেলার জন্য এই অলরাউন্ডারকে অনাপত্তিপত্র না দেয়ারও ঘোষণা দিয়েছিল বিসিবি। এরপর আবেদনের প্রেক্ষিতে সাকিব আল হাসানের শাস্তি কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় বোর্ড। এতে দেশের হয়ে জাতীয় দলে ও ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার ক্ষেত্রে সাকিবের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা ছিল, তা তিন মাস কমে যায়।
এরপর ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ চলাকালীন সাকিব আল হাসান এক ভক্তের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরবর্তীকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সাকিব তার নিজ ফেসবুকে ব্যখ্যা দেন।
এছাড়াও সাকিবকে নিয়ে রয়েছে আরও বেশ কিছু অভিযোগ। বিশ্বকাপ ক্রিকেট শুরুর আগে যে আনুষ্ঠানিক ছবি তোলার আয়োজন করা হয় সেখানে অংশ নেননি সাকিব আল হাসান।
গত ২৯ এপ্রিল ঢাকায় মিরপুর শের-এ-বাংলা স্টেডিয়ামে এই আয়োজন হয়, যেখানে সাকিব স্টেডিয়ামে গিয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু ফটোসেশনে অংশ না নিয়ে বেরিয়ে যান।
অন্যদিকে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের আগে ও পরে সাকিব আল হাসান অধিনায়কত্ব নিয়ে অনীহা প্রকাশ করেন। বলেন, এই বিষয়ে বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করার আছে।
তখন নাজমুল হাসান পাপন সাংবাদিকদের বলেন, টেস্ট খেলতে না চাওয়ার কারণেই সাকিব অধিনায়কত্ব নিয়ে অনীহা প্রকাশ করেন।
এর আগে ২০১৭ সালে সেপ্টেম্বরে টেস্ট থেকে বিশ্রাম নিতে ছয় মাসের ছুটি চেয়েছিলেন সাকিব। বিসিবি তখন তিন মাসের ছুটি মঞ্জুর করেছিল। এজন্য দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজ খেলা হয়নি সাকিব আল হাসানের।
সম্প্রতি ক্রিকেটারদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার পর থেকেই আবার আলোচনায় এবারে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফরমার সাকিব আল হাসান। তবে সব মিলিয়ে চরম সংকটে আছেন সাকিব। এত সংকটে কখনও পড়েননি তারকা অলরাউন্ডার।
একে//