বার বার যেসব বিতর্কে জড়িয়েছেন সাকিব
প্রকাশিত : ১৭:০৩, ৩০ অক্টোবর ২০১৯
বহুবার বিতর্কে জড়িয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তবে ভারতীয়রা মনে করে সাকিব যদি বাংলাদেশের না হয়ে ভারতের হতো তাহলে তার আরও সুখ্যাতি হতো। আনন্দবাজার তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, তার পারফরম্যান্স আরও নজরে পড়ত। ক্রিকেটার সাকিবের আড়ালে রয়েছে অন্য এক স্বত্তা। তিনি বিতর্কিত। একাধিক বার বিতর্কে জড়িয়েছেন।
আইসিসি-র বিচারে সম্প্রতি দুই বছরের জন্য নির্বাসিত বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের সেই সব বিতর্কিত মুহূর্ত আরও একবার দেখে নেওয়া যাক।
২০১৯ বিশ্বকাপের আগে দলের ফোটোসেশনে ছিলেন না সাকিব। বিশ্বকাপের স্কোয়াডে থাকা ক্রিকেটারদের নিয়ে জার্সি উন্মোচনে উপস্থিত ছিলেন না সাকিব। দলের আনুষ্ঠানিক ফটোশুটেও তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। সাকিবের অনুপস্থিতি নিয়ে দেশে ঝড় বয়ে যায়।
সেই সময়ে বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার যে দেশের বাইরে ছিলেন এমনও নয়। বাংলাদেশেই ছিলেন বাঁ হাতি অলরাউন্ডার। তবুও তিনি দলের ফোটোসেশনে উপস্থিত থাকেননি।
ফোটোসেশন যে দিন হয়েছিল, তার আগের দিন আইপিএল খেলে দেশে ফিরেছিলেন সাকিব। সকালে মাঠেও এসেছিলেন। কিন্তু, ফোটোসেশনের ঘণ্টা খানেক আগে মিরপুর ছেড়ে চলে যান তিনি। বাংলাদেশের নতুন জার্সিতে কেন যে তিনি ফোটো তোলেননি তা থেকে যায় অজানাই। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন বিষয়টাকে ভাল ভাবে নেননি।
নিধাহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচে সতীর্থদের মাঠ ছেড়ে চলে আসতে বলে নতুন এক বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন সাকিব। তখন তিনি ছিলেন দেশের অধিনায়ক। দ্বীপরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ম্যাচ শেষের দিকে দারুণ উত্তেজক হয়ে ওঠে। শেষ ওভারে বাংলাদেশের জেতার জন্য দরকার ছিল ১২ রান। শেষমেশ বাংলাদেশ ম্যাচটা জিতলেও মেজাজ হারান সাকিব। মাঠ ছেড়ে চলে আসতে বলেছিলেন ব্যাটসম্যানদের।
শ্রীলঙ্কার ১৫৯ রান তাড়া করতে নামে বাংলাদেশ। জেতার জন্য শেষ ওভারে দরকার ছিল ১২ রান। শেষ ওভারের প্রথম বলটি ছিল বাউন্সার। পরের বলটিও বাউন্সার। দ্বিতীয় বলে মুস্তাফিজ রান আউট হলেও দ্বিতীয় বাউন্সারের জন্য লেগ আম্পায়ার নো বল ডাকেন। কিন্তু, শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররা আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান। তাদের সম্মিলিত প্রতিবাদের মুখে আম্পায়ার নো-বলের সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেন।
আম্পায়ারের এ হেন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা প্রতিবাদ জানান। মাঠের বাইরে চতুর্থ আম্পায়ারের সঙ্গে তর্কাতর্কি বাধে সাকিবের। ব্যাটসম্যানদের মাঠ ছেড়ে চলে আসতে বলেন তিনি। ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ থামান ব্যাটসম্যানদের। জেতার জন্য ৪ বলে তখন দরকার ১২ রান। মাহমুদুল্লাহ ছক্কা হাঁকিয়ে বাংলাদেশকে ফাইনালে তোলেন। টানটান উত্তেজনায় বাংলাদেশ ম্যাচ জিতলেও জরিমানা হয়েছিল সাকিবের।
প্রথম বার সাকিবকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল ২০১৪ সালে। কুৎসিত অঙ্গভঙ্গি করায় জরিমানা হয়েছিল সাকিবের।
সে বার শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচ চলাকালীন টেলিভিশন ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেছিলেন সাকিব। সেই ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছিল। বোর্ড প্রথম বার সাকিবকে ৩ ম্যাচ নিষিদ্ধ করে। বোর্ডের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি সাকিবকে বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছিল বোর্ডের ডিসিপ্লিনারি কমিটি।
সেই বছরই ফের শাস্তির মুখে পড়েছিলেন তিনি। বোর্ডের শৃঙ্খলাভঙ্গ ও আচরণগত সমস্যার অভিযোগে ২০১৪ সালের ৭ জুলাই ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক সব ধরনের ক্রিকেট থেকে ৬ মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল সাকিবকে। পরবর্তী দেড় বছর দেশের বাইরে কোনও টুর্নামেন্টে খেলার জন্য সাকিবকে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট দেবে না বলে জানিয়েছিল বিসিবি। পরে অবশ্য তার আবেদনের প্রেক্ষিতে বোর্ড শাস্তি কমায়।
সম্প্রতি বোর্ডের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে নেমেছিলেন ক্রিকেটাররা। তার নেতৃত্বে ছিলেন সাকিব। ১১ দফা দাবি পেশ করেছিলেন ক্রিকেটাররা। তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, দাবি না মানা পর্যন্ত তারা খেলবেন না। বাংলাদেশের ক্রিকেটে এই ধরনের বিদ্রোহের ঘটনা ছিল নজিরবিহীন। পরে অবশ্য বোর্ড ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলে বরফ গলায়।
এসি