ইমার্জিং এশিয়া কাপ
আবারও শিরোপা বঞ্চিত হলো বাংলাদেশ
প্রকাশিত : ১৬:৩৭, ২৩ নভেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ১৬:৪৩, ২৩ নভেম্বর ২০১৯
ইমার্জিং এশিয়া কাপের শিরোপা
প্রথমবারের মত ইমার্জিং এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেও পাকিস্তনের কাছে হেরে যায় বাংলাদেশ। দলটির দেয়া ৩০২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ঝোড়ো শুরু করলেও পাক পেসারদের তোপের মুখে পড়ে ২২৪ রানেই গুটিয়ে গিয়ে বড় পরাজয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে শান্ত-সৌম্যরা। ফলে অধরাই থাকলো টাইগারদের শিরোপা স্বপ্ন।
এদিন ওপেনিংয়ে নেমে বিধ্বংসী চেহারায় হাজির হয়েছিলেন সৌম্য। শুরুতে সামিন গুলকে পরপর দুই বলে ছক্কা ও চার হাঁকিয়ে দলীয় ২৩ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ১৫ রানে সাজঘরে ফেরেন এই বাহাতি।
তার বিদায়ের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার মোহাম্মাদ নাঈমও। মোহাম্মাদ হাসনাইনের বলে ইমরান রফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ১৬ রান করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন এই তরুণ। তাদের বিদায়ে কিছুটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
তবে সে চাপ সামলে নিয়ে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত ও ইয়াসির আলী। দু’জনের অর্ধশত পার্টনারশিপে ১৫ ওভারে ৯১ রান তোলে বাংলাদেশ। তবে এ জুটিকে আর এগুতে দেননি পাকিস্তানি বোলার আমাদ বাট। ৩১ বলে ২২ রান করে তার এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন ইয়াসির।
এর কিছুক্ষণ পরেই বিদায় নেন নাজমুল হাসান। খুশদিল শাহ'র বলে উমার খানের হাতে ক্যাচ দিয়ে অধিনায়ক যখন ফেরেন দলের স্কোর তখন ২১ ওভারে ১১৯। আশা জাগানো অধিনায়ক (৪৬) ফেরেন ফিফটি থেকে মাত্র চার রান দূরে থাকতেই। তার ৫৩ বলের ইনিংসে ছিল পাঁচটি চারের মার।
এরপর একপ্রান্তে আফিফ দারুণ ব্যাটিং করে দলকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলেও পরপর দুই উইকেট (জাকির হাসান ৯ ও মাহিদুল ইসলাম ৫) হারিয়ে আরও চাপে পড়ে টাইগাররা। যে চাপ আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি দল
এসময় এক রানের আক্ষেপ নিয়ে ফেরেন আফিফ হোসেনও (৪৯)। তার ৫৩ বলের ইনিংসে ছিল চারটি চার ও একটি ছক্কার মার। শেষদিকে মেহেদি হাসান জুনিয়র কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও জয়ের জন্য তা যথেষ্ট ছিল না।
কেননা, ওই সময় জয়ের জন্য ৪৮ বলে দলের প্রয়োজন ছিল ৮৫ রানের। কিন্তু হাতে ছিল মাত্র দুই উইকেট। তার ওপর ক্রিজে ছিলেন না ভালো কোন ব্যাটসম্যানও। যার প্রেক্ষিতে ওই অবস্থা থেকে ম্যাচ বের করে আনা একা মেহেদির জন্য ছিল দুর্গম পাহাড় ডিঙানোর মত।
তিনিও আউট হন ফিফটি থেকে আট রান দূরে থাকতেই। তার ৪৫ বলের ইনিংসে (৪২) ছিল দুটি চার ও তিনটি ছয়ের মার। ফলে ২২৪ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ আর ৭৬ রানের বড় হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় শান্ত-সৌম্যদের।
এদিন পাকিস্তানের পক্ষে সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন মোহাম্মদ হাসনাইন। ৩৮ রান দিয়ে তিনটি উইকেট দখল করেন তিনি। এছাড়া খুশদিল শাহ ও সাইফ বাদের নেন দুটি করে উইকেট।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়েং নেমে বাংলাদেশের সামনে ৩০২ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করায় পাকিস্তান। শুরুতেই দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়লেও সে ধাক্কা সামলে নেন দলীয় অধিনায়ক রোহাইল নাজির ও ইমরান রফিক।
এ ম্যাচেও ক্যাচ মিসের মাশুল দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ব্যক্তিগত ২৪ রানের মাথায় জীবন পেয়েছিলেন রোহাইল। পরে তিনিই বাংলাদেশের বোলারদের জন্য ভয়ংকর হয়ে ওঠেন, এমনকি সেঞ্চুরিও হাঁকিয়ে বসেন।
মূলত তার শতকে ভর করেই মিরপুরে ইমার্জিং এশিয়া কাপের ফাইনালে ৬ উইকেটে ৩০১ রানের বড় পুঁজি পেয়েছে পাকিস্তান। অর্থাৎ শিরোপা জিততে হলে বাংলাদেশকে করতে হত ৩০২ রান।
সকাল সাড়ে ৯টায় মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ ইমার্জিং দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের পঞ্চম ওভারেই আঘাত হানেন সুমন খান। তার দুর্দান্ত এক ডেলিভারি বুঝতে না পেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন উমর ইউসুফ (৪)। তারপরও আরেক ওপেনার হায়দার আলি ঠিকই ভয়ংকর হয়ে উঠছিলেন। ২৩ বলে ২৬ রান করা এই ওপেনারকেও টেনে ধরেন সুমন খানই, নাইম শেখের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান সাজঘরে।
৪১ রানের মাথায় ২ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে পাকিস্তান। তৃতীয় উইকেটে সেই বিপদ সামলে ওঠেন রোহাইল নাজির আর ইমরান রফিক। এই উইকেটে তারা যোগ করেন ১০৭ রান। ১১৩ ও ৬২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন রোহাইল ও ইমরান রফিক। পাকিস্তানের পক্ষে এছাড়া ৪০ বলে ৪২ রান করেন অধিনায়ক সৌদ শাকিল।
বাংলাদেশের পক্ষে ৭৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন সুমন খান। এছাড়া, হাসান মাহমুদ ২টি আর মেহদি হাসান নেন ১টি উইকেট।
এনএস/