অপ্রতিরোধ্য খুলনা, রংপুরের ‘এক হালি’
প্রকাশিত : ১৭:১১, ২০ ডিসেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ১৭:২৭, ২০ ডিসেম্বর ২০১৯
অপ্রতিরোধ্য খুলনা
খুলনার জয়রথ থামছেই না। রংপুরকে কোনোরকম পাত্তা না দিয়েই টানা তৃতীয় জয় তুলে নিল টাইগাররা। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত বিপিএলের ১৩তম ম্যাচে রংপুর রেঞ্জার্সকে উড়িয়ে দিয়ে ৮ উইকেটের বড় জয় তুলে নিল খুলনা, ৪৫ বল হাতে রেখেই। যাতে টানা চার ম্যাচ হারল রংপুর।
এদিন খুলনা টাইগার্সের শফিউল ইসলাম ও মোহাম্মদ আমিরের দুর্দান্ত বোলিংয়ে বড় স্কোর গড়তে পারেনি রংপুর রেঞ্জার্স। চলতি বিপিএলে প্রথম জয়ের খোঁজে থাকা রংপুর রেঞ্জার্স ২০ ওভারে তুলেছে ৯ উইকেটে ১৩৭ রান। জবাবে রাইলি রুশোর ঝোড়ো ব্যাটে ১২ ওভার তিন বলেই মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় খুলনা।
জবাব দিতে নেমে ২৪ রানে নাজমুল হোসাইন শান্তকে হারালেও রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও রাইলি রুশোর দায়িত্বশীল ব্যাটে টানা তৃতীয় জয়ের লক্ষ্যেই ছুটছে খুলনা। যদিও ৩৭ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন গুরবাজ। তবে স্বল্প টার্গেট দিয়ে মুশফিকদের চাপে রাখার মত বোলিং করতে পারেন নি নবি-মোস্তাফিজরা।
উপরন্তু মামুলি টার্গেট পেয়ে যেন প্রতিপক্ষ বোলারদের উপর চড়াও হলেন রুশো-গুরবাজরা। রুশো তো এক কথায় তাণ্ডব চালালেন এদিন। মাত্র ২৩ বলে ফিফটি পূরণ করে অপরাজিত থাকেন ৬৬ রানে। তার ৩১ বলের ইনিংসটিতে ছিল নয়টি চারের সঙ্গে দুটি ছক্কার মার। সঙ্গে অপরাজিত ছিলেন আগের ম্যাচের নায়ক দলনায়ক মুশফিকুর রহিম। ১৭ বল খেলে দুই চারে সমান ১৭ রান করেন তিনি।
ফিফটি পূরণের পর রুশোর অনন্য উদযাপন
এদিকে এই জয়ে টানা তিন ম্যাচ জিতে ছয় পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে অবস্থান করছে খুলনা। পাঁচ ম্যাচ থেকে চারটিতে জিতে শীর্ষে যথারীতি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
এর আগে রংপুরের ইনিংসে সতীর্থরা যখন একে একে আসা-যাওয়ার প্রতিযোগিতায় মত্ত, অন্যপ্রান্তে মোহাম্মদ নাঈম শেখ তখন যেন ভিন্ন আঙিনায়। চোখধাঁধানো সব শট খেলে ফিফটির দুয়ারে গিয়েও পুড়লেন রান আউটের আক্ষেপে। যে আক্ষেপে শেষ পর্যন্ত পুড়লো তার দল রংপুরও।
যেখানে তরুণ ওপেনার নাঈমের অবদান ৪৯ রান। তার এই ৩২ বলের ইনিংসে ছিল পাঁচটি চার ও দুটি ছক্কার মার। রংপুরকে এরপর টেনেছেন কেবল ফজলে মাহমুদ রাব্বি। অভিজ্ঞ বাঁহাতি করেছেন ৩৩ বলে ৪২ রান।
খুলনার পক্ষে ৪ ওভারে ১টি মেডেনসহ ২১ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন শফিউল। এদিন দ্বিতীয় উইকেট নিয়ে পূর্ণ করেছেন শততম টি-টোয়েন্টি উইকেট। হয়েছেন ম্যাচ সেরাও। আর পাকিস্তানি পেসার আমির নিয়েছেন ২৪ রানে ২ উইকেট।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা রংপুরের শুরুটা ছিল নাঈমের ঝলক দিয়ে। ম্যাচের প্রথম ওভারে আমিরকে দৃষ্টিনন্দন কাভার ড্রাইভে চার মারার পর বাউন্ডারি মারেন আরেকটি। পরে ওভারে রবি ফ্রাইলিঙ্ককে টানা দুটি বাউন্ডারি মারেন মোহাম্মদ শাহজাদ।
অন্যদিকে, শফিউল তার শুরুটা করেন প্রথম বলেই সাফল্য দিয়ে। আসরে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা ক্যামেরন ডেলপোর্টকে মিড উইকেটে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন শফিউল। নিজের পরের ওভারে শফিউল ফেরান নাদিফ চৌধুরিকে। ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পাওয়া নাদিফ ৯ বল খেলেও খুলতে পারেননি রানের খাতা।
এরপর নাঈম ও ফজলে রাব্বির জুটিতে এগিয়ে যাচ্ছিল রংপুর। কিন্তু ৩২ বলে ৩৯ রানের জুটি শেষ হয় নাঈমের রান আউটে। ফিল্ডার সোজা শট খেলেও ফিফটি ছুঁতে রান নিতে ছুটে গিয়ে উইকেট হারান নাঈম।
এসময় ক্রিজে এসে অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি ব্যর্থ হয়েছেন আবারও। ফজলে মাহমুদের সঙ্গে দলকে কিছুটা টেনে নেন লুইস গ্রেগোরি। তবে শফিউল-আমিরদের সৌজন্যে শেষেও খুব বেশি রান করতে পারেনি রংপুর।
দুটি করে চার-ছক্কায় ৪২ করেছেন ফজলে রাব্বি। ২০ বলে ২২ গ্রেগোরি। শেষ ওভারে দুটি উইকেট নিয়েছেন পেসার শহিদুল ইসলাম।
এনএস/