ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

চট্টগ্রামের রেকর্ড গড়া ম্যাচেও উত্তেজনা ছড়ালো কুমিল্লা

নাজমুশ শাহাদাৎ

প্রকাশিত : ২৩:৩২, ২০ ডিসেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ২৩:৩৬, ২০ ডিসেম্বর ২০১৯

পঞ্চম জয়ের মুহুর্তে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স

পঞ্চম জয়ের মুহুর্তে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স

ইমরুল কায়েস ও চ্যাডউইক ওয়ালটনের ঝোড়ো ফিফটিতে বিশাল রানের স্কোর করে রেকর্ড গড়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। আর ওই বিশাল স্কোর তাড়া করতে নেমে রীতিমত উত্তেজনাময় কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছে কুমিল্লা। যদিও নাটকীয় এই ম্যাচে শেষ হাঁসি হাসে কায়েসেরই দল। ওয়ারিওয়ার্সরা হেরে যায় মাত্র ১৬ রানে। 

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ২৩৮ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে চট্টগ্রাম। জবাবে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে ওই রান প্রায় ধরেই ফেলেছিল কুমিল্লা। শেষ অবধি ৭ উইকেট হারিয়ে থেমে যায় ২২২ রানেই। যাতে ১৬ রানের জয় নিয়ে চট্টগ্রাম পর্ব শেষ করে স্বাগতিকরা। আর এ জয়ে ছয় ম্যাচের পাঁচটিতে জিতে শীর্ষেই থাকলো কায়েসরা। 

এদিন রাতে চট্টগ্রামের ওই রান তাড়ায় নেমে মেহেদি হাসান রানার আগুনে বোলিংয়ে ৩৩ রানেই ৩ উইকেট হারায় কুমিল্লা। তবে বাঁহাতি ওই পেসারকে সরাতেই তেড়েফুঁড়ে খেলতে শুরু করেন ডেভিড মালান। দলকে একাই এগিয়ে নিতে থাকেন জয়ের লক্ষ্যে। হাঁকাতে থাকেন একের পর এক চার-ছক্কা। তবে তাকেও থামান সেই রানাই। 

রানার চতুর্থ শিকার হওয়ার আগে খেলেন ৩৮ বলে ৮৪ রানের টর্ণেডো ইনিংস। যে ইনিংসে ছিল সাতটি চার ও পাঁচটি ছক্কার মার। মালান ফিরলেও জয়ের মার্ক থেকে সরে যায়নি কুমিল্লা। নিদারুণ অসম্ভবকে সম্ভব করতে চেষ্টা করেন দাসুন শানাকা (২১ বলে ৩৭), মাহমুদুল আকন (৭ বলে ১৩) এবং আবু হায়দার রনি। রনি যেভাবে ব্যাট করছিলেন তাতে তো কাঁপন ধরে গিয়েছিল গোটা স্টেডিয়ামজুড়ে। 

শেষ দুই ওভারে কুমিল্লার তখন দরকার ৪৭ রান। পরাজয় কেবল সময়ের ব্যাপার। কিন্তু আগের তিন ওভারে মাত্র ৬ রান দেয়া রানার চতুর্থ ওভারটি থেকে দুটি করে চার ও ছক্কায় রনি তুলে নিলেন ২১ রান (মোট ২২)। ফলে শেষ ওভারে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৫ রান। চরম উত্তেজনায় যা মনে হচ্ছিল সম্ভব! 

কিন্তু স্পিনার নাসুম আহমেদের করা শেষ ওভারের প্রথম দুটি বল খেলতে না পারায় প্রশমিত হয় সে উত্তেজনা। পরের বলে চার মারলে তিন বলে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২১ রান। যা নিতান্তই অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। পরের তিন বলে অলৌকিক কিছু না ঘটায় চার রান তুলতে পারে রনি আর সুমন খান। যাতে ১৬ রানে হেরে যায় কুমিল্লা। আর এই হারে চার খেলায় দুটি জিতে বর্তমানে টেবিলের চারে অবস্থান করছে সাবেক চ্যাম্পিয়নরা।     

এদিকে এদিনও বল হাতে আগুন ঝরানো বাঁহাতি পেসার মেহেদি হাসান রানা তুলে নেন ৪টি উইকেট। এখন পর্যন্ত ১২টি উইকেট গেছে তার ঝুলিতে। তবে চট্টগ্রামের এই চৌকস নৈপুণ্যের দিনে ম্যাচ সেরার পুরস্কারটি গেছে ওয়ালটনের হাতে। 

বঙ্গবন্ধু বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্বের শুরু থেকেই ব্যাট হাতে রাজত্ব করছেন ব্যাটসম্যানরা। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে প্রায় প্রতি ম্যাচেই হচ্ছে বড় রানের স্কোর। সেই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার রাতে তো রেকর্ডই গড়লেন কায়েস-ওয়ালটনরা। কুমিল্লা ওয়ারিওয়ার্সের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ২৩৮ রান তুলেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।

যা এবারের টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রানের স্কোর। আর এতেই নিজেদের আগের রেকর্ডই ভাঙল চট্টগ্রাম। দুদিন আগে ঢাকা প্লাটুনের বিপক্ষে ২২১ রান তুলেছিল মাহমুদুল্লাহরা। আজ সেটাকেই ছাড়িয়ে গিয়ে গড়ল নতুন রেকর্ড। চট্টগ্রামের আজকের স্কোরটি বিপিএল ইতিহাসেই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। গত বিপিএলে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে ২৩৯ রান তুলেছিল রংপুর রাইডার্স। আজ তার থেকে এক রান কম হলো চট্টগ্রামের।

এদিন টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলেছে স্বাগতিক চট্টগ্রাম। তবে দুই বিদেশি ওপেনার লিন্ডল সিমন্স ও আভিস্কা ফার্নান্ডো দশের অধিক গড়ে রান তুলেছেন প্রথম ওভার থেকেই। তবে এদিন আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের বড় উদাহরণ তৈরি করলেন ইমরুল কায়েস, চ্যাডউইক ওয়ালটন ও নুরুল হাসান সোহানরা।

মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের অনুপস্থিতিতে চট্টগ্রামকে নেতৃত্ব নেয়া ইমরুল কায়েস তিনে নেমে মাত্র ৪১ বলে নয়টি চার ও এক ছয়ে ৬২ রান করেন। আর ওয়ালটন ছিলেন আরও মারকুটে। মাত্র ২৭ বলে পাঁচ চার ও ছয় ছক্কায় করেন ৭১ রান। এছাড়া আভিস্কা ফার্নান্ডোর ব্যাট থেকে আসে ২৭ বলে ৪৮ রান এবং নুরুল হাসান সোহান অপরাজিত থাকেন ১৫ বলে ২টি করে চার-ছয়ে ২৯ রান করে।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি