বঙ্গবন্ধু বিপিএল
চ্যাম্পিয়ন রাজশাহী রয়্যালস
প্রকাশিত : ২২:৫৬, ১৭ জানুয়ারি ২০২০ | আপডেট: ২৩:৪৭, ১৭ জানুয়ারি ২০২০
চ্যাম্পিয়ন রাজশাহী
জিতলেই হাতে উঠবে স্বপ্নের ট্রফি। এমনই ম্যাচের শুরুতেই হেরে গেলেও মূল ম্যাচে কারিশমা দেখিয়ে জিতে ঠিকই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে রাজশাহী রয়্যালস। খুলনা টাইগার্সকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হলো পদ্মা পাড়ের দলটি। আর বিপিএলও পেলে নতুন এক চ্যাম্পিয়ন।
আজ মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে মুদ্রা নিক্ষেপের লড়াইয়ে হেরে রাসেলদের নামতে হয় ব্যাটিংয়ে। খুলনা অধিনায়কের সিদ্ধান্তটা যে সময়োপযোগীই ছিল। লিটনদের দীর্ঘ সময় চেপে রেখে লক্ষ্যটা নাগালে রাখার চেষ্টায় ছিল খুলনা।
কিন্তু শেষ তিন ওভারে যেন এলোমেলো হয়ে গেল সব, পাল্টে গেল দৃশ্যপট। খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এলো রাজশাহী কিংস। ১৭ ওভার শেষে ১১৬ রান তোলা রাসেলরা দেড় শ তুলতে পারবে কিনা তা নিয়েই জেগেছিল সশংয়। তবে শঙ্কাটা উড়িয়ে দিয়েছেন আন্দ্রে রাসেল ও মোহাম্মদ নওয়াজ। দুজনের ব্যাট হঠাৎই যেন হয়ে উঠল তলোয়ার। যাতে শেষ তিন ওভারে রাজশাহী স্কোরবোর্ডে যোগ করল ৫৪ রান!
এদিন খুলনার বোলারদের রীতিমত কচুকাটা করলেন নওয়াজ-রাসেল। ইনিংসের ১৮তম ওভারে রবি ফ্রাইলিঙ্ককে দিয়ে তাণ্ডবের শুরু। ওই ওভারে নওয়াজ নিলেন ২১ রান। পরের ওভারে মোহাম্মদ আমিরকে বেধড়ক পিটিয়ে রাসেল-নওয়াজ মিলে যোগ করলেন আরও ১৮ রান। আর শেষ ওভারে বল করতে আসা শফিউল ইসলামেরও হলো না শেষ রক্ষা। দারুণ বোলিংয়ের পরও তিনি দিলেন ১৫ রান।
মূলত, এই শেষ তিন ওভারের তাণ্ডবেই রাজশাহী রয়্যালস পেয়েছে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ। নির্ধারিত ওভার শেষে রাসেলদের সংগ্রহ দাঁড়ায় চার উইকেটে ১৭০ রান। আসলে পরিস্থিতিই রাজশাহীকে চাপের মুখে ফেলে দিয়েছিল। লিটন দাসের মন্থর গতির ব্যাটিংই এর জন্য দায়ী।
২৮ বলে একটি করে চার ছক্কায় মাত্র ২৫ রান করেছেন তিনি। আরেক ওপেনার আফিফ হোসেন ৮ বলে করেন ১০ রান। শোয়েব মালিকের ব্যাট থেকে এসেছে ১৩ বলে ৯। এই ত্রয়ীর প্রস্তর যুগের ব্যাটিং পুষিয়ে দিয়েছেন ইরফান শুক্কুর, অধিনায়ক রাসেল ও নওয়াজ। প্রথমজন ৩৫ বলে ৫২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে বিদায় নেন।
ইনিংসে ছয়টি চারের সঙ্গে দুটি চার মেরেছেন তিনি। শুক্কুরের মতো নওয়াজেরও বাউন্ডারি সংখ্যা একই। কুড়ি বলে ৪১ রানে অপরাজিত থাকলেন পাকিস্তানি অলরাউন্ডার। আর ১৬ বলে ২৭ রানে অজেয় থাকা রাসেলের ইনিংসে ছিল তিনটি ছক্কা। রাজশাহীর পতন হওয়া উইকেটের দুটি নিয়েছেন মোহাম্মদ আমির।
তবে দারুণ বোলিং করেও শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা হাতের নাগালে রাখতে পারেননি খুলনা। তাই জয়ের জন্য চ্যালেঞ্জটা নিতে হচ্ছে ব্যাটসম্যানদের। মুশফিকরা পারবেন তো ১৭১ রানের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে?
তবে এ প্রশ্নের জবাব পেতে খুব বেশি অপেক্ষায় থাকতে হয়নি কোটি ক্রিকেট ভক্ত-সমর্থকদের। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামা খুলনাকে এদিন শুরু থেকেই বিপাকে ফেলে রাসেল বাহিনী। রাজশাহী বোলারদের তোপের মুখে একে একে উইকেট হারাতে থাকে খুলনা। যে ধ্বংসস্তূপ থেকে আর উঠে দাঁড়াতে পারেনি মুশফিকরা।
যদিও এই ধ্বংসস্তূপের মাঝে বুক চিতিয়ে লড়াইয়ে একটু ঝলক দেখান একমাত্র শামসুর রহমান। ফিফটি করেই আউট হন তিনি। আর তার আউটের মধ্যদিয়েই খুলনার কফিনে ঢুঁকে যায় পরাজয়ের অন্যতম পেরেক। আর মুশফিককে বোল্ড করে সেই কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকেন রাজশাহীর নেতা আন্দ্রে রাসেল।
শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রান তুলতে পারে খুলনা। যাতে ২১ রানের জয় নিয়ে উল্লাসে মাতে রাজশাহী। দলটি গড়ে এক নতুন ইতিহাস।
এনএস/