সতীর্থের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকেই ঘরে তোলেন ভারতীয় ক্রিকেটার!
প্রকাশিত : ১৯:২৮, ২৭ জানুয়ারি ২০২০
ভারতীয় ক্রিকেটার মুরালি বিজয় ও দীনেশ কার্তিকের মাঝে স্ত্রী নিকিতা
দিনেশ কার্তিক আর মুরলি বিজয়, দুজনেই ভারতের জাতীয় দলের সাবেক তারকা। এই দুই সতীর্থের ব্যক্তিগত জীবনে একটা মন পোড়ানো ঘটনা ঘটে গেছে তাদের স্ত্রীকে কেন্দ্র করে। ক্রিকেটার মুরালি বিজয়ের সঙ্গে নিজ স্ত্রীর সম্পর্কের জেরে ভেঙে যায় সতীর্থ দিনেশ কার্তিকের সংসার।
বিচ্ছেদের কয়েক মাসের মধ্যেই বিজয়কে বিয়ে করেছিলেন দিনেশের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী নিকিতা। তবে ওই সময় দুজনেই বিষয়টি গোপন রাখেন, যে কারণে মিডিয়ায় তেমন কোনও আঁচড় কাটেনি।
জানা যায়, দিনেশ কার্তিক এবং নিকিতা বানজারা ছিলেন ছোটবেলার বন্ধু। শুধু তারাই নন। তাদের বাবা-মায়েদের মধ্যেও ছিল ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব। অর্থাৎ তারা ছিলেন পারিবারিক বন্ধু। ২০০৭ সালে দিনেশ-নিকিতার বিয়ে হয়। ২১ বছর বয়সী দিনেশ তখন ভারতীয় দলের নিয়মিত সদস্য। মুম্বাইয়ের এক নামী হোটেলে সাত পাকে বাঁধা পড়েন তারা।
অন্যদিকে, নিকিতার শৈশব কেটেছে মধ্য প্রাচ্যের দেশ কুয়েতে। কমার্সে স্নাতক নিকিতা বিয়ের পরে ধীরে ধীরে পরিচিত হন ভারতীয় ক্রিকেটাঙ্গনে। কয়েক বছরের মধ্যে তার পরিচয় হয় মুরলি বিজয়ের সঙ্গে। তবে সেটা যে নিছক 'পরিচয়' নয়, তা বেশ পরে বুঝতে পারেন দিনেশ।
তামিলনাড়ুর ডানহাতি ব্যাটসম্যান মুরলি বিজয়ও তখন ভারতীয় দলের নিয়মিত সদস্য। জাতীয় দল ছাড়াও ঘরোয়া ক্রিকেটেও তিনি দিনেশ কার্তিকের সতীর্থ। দুজনেই তামিলনাড়ুর। পাশাপাশি আইপিএলেও দারুণ পারফর্ম করে যাচ্ছেন। বিশেষ সখ্য না থাকলেও তাদের মধ্যে শত্রুতা ছিল না। কিন্তু কে জানত, একদিন এই অদ্ভুত জটিলতার মুখোমুখি হতে হবে দুই ক্রিকেটারকে।
২০১২ সালে একটি গুরুত্বপূর্ণ রনজি ম্যাচের আগে দিনেশ জানতে পারেন মুরলির সঙ্গে তার স্ত্রী নিকিতার সম্পর্ক নিয়ে! পারিবারিক জীবনে ঝড় বয়ে গেলেও বাইরের জীবনে তার সামান্য দোলাও লাগতে দেননি দিনেশ কার্তিক। ওই বছরেই নিকিতার সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়ে যায়। কোনওরকম অভিযোগ বা পাল্টা অভিযোগের মধ্যে না গিয়ে মিচ্যুয়াল ডিভোর্সের পথই বেছে নেন তারা।
জানা যায়, সে সময় নিকিতা ছিলেন অন্তঃস্বত্ত্বা! দিনেশ-নিকিতার বিচ্ছেদ অবধি সংবাদমাধ্যমের নজর সে দিকে ছিল না। ঘটনা নাটকীয় মোড় নিল যখন বিচ্ছেদের কয়েক মাস পরে নিকিতা মুরালি বিজয়কে বিয়ে করেন।
জানা যায়, কোনও এক আইপিএলের মৌসুমে আলাপ হয়েছিল মুরালি-নিকিতার। কিন্তু কত বছর তারা দিনেশ কার্তিক-সহ সবার কাছ থেকে সম্পর্ক গোপন রেখেছিলেন, সে বিষয়ে কেউ মুখ খোলেননি।
বিজয়কে বিয়ের পরই সেই ২০১২ সালেই জন্ম হয় নিকিতার প্রথম সন্তানের। ছেলের নাম রাখা হয় নীরব। এরপর আরও একটি পুত্র এবং কন্যার মা হয়েছেন তিনি। তিন সন্তানকে নিয়ে মুরালি-নিকিতার সুখের সংসার। স্বামীর ম্যাচ দেখতে প্রায়ই মাঠে যান নিকিতা।
'ক্রিকেটারের স্ত্রী' ছাড়াও তার আরও একটি পেশাগত পরিচয় আছে। তিনি একজন শিল্পী। মুম্বাইয়ের একটি থ্রি ডি কাস্টিং সংস্থায় কর্মরত নিকিতা। সালমান খান আর চকোলেটের ভক্ত নিকিতা ভালবাসেন কেনাকাটা করতে আর বেড়াতে।
অন্যদিকে, বিচ্ছেদের পর দিনেশ কার্তিকও বেশিদিন একা থাকেননি। ২০১৩ সালে তিনি বিয়ে করেন তারকা স্কোয়াশ খেলোয়াড় দীপিকা পাল্লিকলকে। হিন্দু এবং খ্রিস্টান দুই ধর্মমতেই বিয়ে হয় তাদের। এখন দীপিকার খেলার অন্যতম অনুরাগী তার ক্রিকেটার স্বামী।
এদিকে, নিকিতা এবং দীপিকা দু’জনে নিজেদের কেরিয়ারে উজ্জ্বল হলেও দু’জনের স্বামীই এখন জাতীয় দলে অনিয়মিত। দিনেশ কার্তিক শেষ টেস্ট খেলেছেন ২০১৮ সালের অগস্টে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। আর মুরালি বিজয়ের শেষ টেস্টও সে বছরই ডিসেম্বরে, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে।
ওয়ানডে ম্যাচে অবশ্য দিনেশ কার্তিক তুলনামূলকভাবে বেশি সুযোগ পান। শেষ ওয়ানডে খেলেছেন ২০১৯-এর জুলাইয়ে, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। আর মুরালি বিজয়ের শেষ ওয়ানডে ২০১৫-র জুলাইে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।
মুরালি বিজয় শেষ টি-২০ও খেলেছেন বেশ কয়েক বছর আগে। ২০১৫ সালে জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাকে শেষবার জাতীয় দলের হয়ে টি-২০ ম্যাচে দেখা যায়। দিনেশ কার্তিকও শেষ টি-২০ খেলেছেন ২০১৯ সালের বছরের ফেব্রুয়ারিতে, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে।
এদিকে, আইপিএলে দু’জনেই খেলেছেন বিভিন্ন দলের হয়ে। মুরালি বিজয় আইপিএল শুরু করেছিলেন চেন্নাই সুপারকিংস-এর হয়ে। ২০০৯ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত টানা পাঁচ বছর তিনি খেলেছেন চেন্নাইয়ের হয়ে। মাঝের বছরগুলো দিল্লি ডেয়ারডেভিলস এবং কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের হয়ে। ২০১৯-এ আবার ফিরে এসেছেন চেন্নাই সুপার কিংসে।
আর দিনেশ কার্তিক আইপিএল-কেরিয়ার শুরু করেন দিল্লি ডেয়ার ডেভিলস দিয়ে। তারপর বিভিন্ন মৌসুমে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, ডেকান চার্জার্স, কিংস ইলেভেন পঞ্জাব, গুজরাট লায়ন্স, রয়্যাল চ্যালেঞ্জর্স ব্যাঙ্গালুরুতে খেলেছেন তিনি। ২০১৮ থেকে তিনি গৌতম গম্ভীরের পরিবর্তে কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক। সূত্র- আনন্দবাজার।
এনএস/