জিম্বাবুয়ে সিরিজেও বাদ মুশফিক!
প্রকাশিত : ২৩:৩১, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০
মুশফিকুর রহিম
পাকিস্তানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে যাননি। দেশটিতে অনুষ্ঠিতব্য টেস্ট খেলতেও যাবেন না বলে জানিয়েছেন আগেই। যে কারণে রাখা হয়নি রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের জন্য ঘোষিত দলেও। তবে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলতে চান মুশফিক। কিন্তু সেখানেই বাধ সাধছেন বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট!
২০২০ সালের শিডিউল অনুযায়ী, আগামী এপ্রিলে করাচিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে আরও একটি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ দল। অবশ্য এই টেস্টের আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাঠে সিরিজ খেলবে টাইগাররা। পাকিস্তান সফরের দলে না থাকলেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলবেন মুশফিক। কিন্তু পাকিস্তানে দুই টেস্টে দলে না থাকা মুশফিককে জিম্বাবুয়ের জন্য নির্বাচন করা হবে কি না, তা নিয়ে বেশ বিপাকেই পড়েছে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট।
ক্রিকেটপাড়ায় গুঞ্জন, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে দলে সুযোগ দেয়া হবে না মুশফিকুর রহিমকে। তেমনই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু।
এদিকে, দলের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোও অনুমান করছেন, মুশফিকের সঙ্গে এমন কিছু করা হতে পারে। তবে বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান আকরাম খান জানালেন, ফিট থাকলে মুশফিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট খেলবেন।
ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে চান মুশফিক। হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি মুক্ত হয়ে বিসিএলের পরের রাউন্ডে খেলার জন্যও তৈরি হচ্ছেন মুশি। যদিও তিনি জেনে গেছেন যে, জিম্বাবুয়ে সিরিজের টেস্ট দলে তাকে না রাখতে একটি মহল উঠেপড়ে লেগেছে। কারণ, মুশফিককে বাদ দিয়ে জাতীয় দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের বার্তা দিতে চান তারা।
মুশফিকুর রহিম জাতীয় দলে খেলছেন গত ১৫ বছর ধরে। দেশের ক্রিকেটের প্রায় সব ভালোমন্দের সঙ্গেই জড়িয়ে আছেন তিনি। তবুও তার অবদানের কথা কেউই স্মরণ করছেন না; বরং দেশের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যানকে গিনিপিগ বানানোর চেষ্টায় লিপ্ত কেউ কেউ।
একাধিকবার ছুটি নিয়েও জাতীয় দলে ফিরে সব ধরনের ক্রিকেট খেলার সুযোগ পান দলের ওপর দুই সিনিয়র ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল। মুশফিকের ক্ষেত্রে সেটা মানা হবে না কেন, প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, 'মুশফিককে জিম্বাবুয়ে সিরিজে নেয়া হলে তার জায়গায় এখন যে পাকিস্তানে যাচ্ছে তাকে বাদ দিতে হবে। আবার এপ্রিলে যখন পাকিস্তানে দ্বিতীয় টেস্ট খেলতে যাবে তখন আরেকজন ঢুকবে। এতে করে যাকে এখন নেয়া হচ্ছে তার প্রতি অবিচার করা হয়। তাকে পর্যাপ্ত সুযোগ দিতেই হয়তো নির্বাচকরা এভাবে চিন্তা করছেন। বিষয়টি নিয়ে মুশফিকের সঙ্গে কথা বললেই পরিষ্কার হবে।'
আদতে, সমস্যাটা দল নির্বাচনের অধারাবাহিকতা নিয়েই। দলের মধ্যে চলছে দোটানা। ব্যাপারটি স্বীকার করেছেন কোচ রাসেল ডমিঙ্গোও, ‘বর্তমান দলটা এক টেস্টের জন্যই দেয়া। পাকিস্তান থেকে ফিরে পরের টেস্ট নিয়ে ভাবা যাবে। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে, এভাবে একাদশ গঠন করা কঠিন। এক ম্যাচে এক রকম, পরের ম্যাচে আবার বদলাও। এরপর পরের ম্যাচে আবার বদলাও। আমি ছেলেদের টানা সুযোগ দিতে চাই। তবে মুশফিককে নিয়েও ভাবতে হচ্ছে, কারণ ভারতে সে-ই আমাদের সেরা ব্যাটসম্যান ছিল।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জিম্বাবুয়ে সিরিজের দলে মুশফিককে পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী টেস্ট দলের অধিনায়ক মোমিনুল হক সৌরভ। তিনি বলেন, ‘দেখুন, এটা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। আপনারাও জানেন, আমি জানি, সারা দেশ জানে, ক্রিকেট বিশ্বও জানে। মুশফিক ভাইয়ের মতো একজন ব্যাটসম্যান না খেললে যে কোনও দলই তার শূন্যতা অনুভব করবে। এটা অধিনায়ক ও দলের সবার জন্য বড় একটা ক্ষতি। এটাও বলার অপেক্ষা রাখে না, উনি যদি ফিট থাকেন, অবশ্যই জিম্বাবুয়ের সঙ্গে খেলবেন।’
তবে এ নিয়ে বিতর্কে যেতে চাইলেন না আরেক নির্বাচক হাবিবুল বাশার। আপাতত পাকিস্তান সফর নিয়ে ফোকাস করার পক্ষে তিনি। জাতীয় দলের সাবেক এ অধিনায়ক বলেন, 'হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি আছে মুশফিকের। ফিট হলে তার মতো একজন ব্যাটসম্যানকে নিয়ে অবশ্যই ভাববে বোর্ড।'
এনএস/