যেভাবে ফাইনালে বাংলাদেশ
প্রকাশিত : ১৪:১৫, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০
প্রথমবারের মতো অনূর্ধ্ব-১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের স্বপ্নে ভাসছে বাংলাদেশি যুবারা। সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মাঠে আজ মাঠে নেমেছে টুর্নামেন্টের দুই অপরাজিত দল বাংলাদেশ ও ভারত।
১৩তম যুব বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচটি পচেফস্ট্রুমে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টায়।
বিশ্বকাপের এ মঞ্চে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে বাংলাদেশ। ২০০৬ সালে সর্বোচ্চ কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে পেরেছিল টাইগাররা। এরপর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও খুব একটা চমক দেখাতে পারেনি লাল সবুজরা।
তবে এবারের আসরে অন্য এক বাংলাদেশ যুবাদের দেখছে ক্রিকেট বিশ্ব। আসরে ‘সি’ গ্রুপে জায়গা হয় টাইগারদের। যেখানে লড়াই করতে হয় দুই বারের চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান, জিম্বাবুয়ে ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে।
গ্রুপ পর্বে নিজের শক্তিমত্তার দারুণ প্রমাণ দেয় আকবর আলীরা। প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সহজ জয় দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করে মাহমুদুল হাসানরা। ওই ম্যাচে বাংলাদেশি বোলারদের তোপের মুখে মাত্র ১৩৭ রানেই গুটিয়ে যায় আফ্রিকার দেশটি।
সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পারভেজ হাসান ইমনের অপরাজিত ৫৮ রানের ইনিংসে ৯ উইকেটের বড় জয় পায় বাংলাদেশ।
গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে রাকিবুল হাসানদের পেস বোলিংয়ে মাত্র ৮৯ রানে গুটিয়ে যায় স্কটল্যান্ড। ৯০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভাল না করতে পারলেও জয় পেতে বেগ পেতে হয়নি টাইগারদে। মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে আসরে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে আকবর আলীরা।
কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে তখনো বাধা ছিল পাকিস্তান। রান রেটে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিলনা। বৃষ্টি না হলেও সে ম্যাচে কপাল পুড়তো রাকিবুলদের। কেননা, পাকিস্তানও সমান্য সংখ্যক ম্যাচে জয় পেয়েছিল।
গ্রুপ পর্বে শেষ ম্যাচে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১০৬ রানে ৯ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এর মধ্যেই শুরু হয় বৃষ্টি,যা আর থামেনি। আর এতে করেই ভাগ্য বদলে যায় বাংলাদেশের। পয়েন্ট ভাগাভাগি হলেও রান রেটে এগিয়ে থাকায় গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে লাল সবুজরা।
এ পর্বে এসে নিজেদের সক্ষমতার আরেক ধাপ প্রমাণ দেন তাওহীদ হৃদয়রা। ওই ম্যাচে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে তানজিব হাসানের ৮০, শাহাদাৎ হোসাইনের ৭৪ ও তাওহীদ হৃদয়ের হাফ সেঞ্চুরিতে ভর করে ২৬১ রানের চ্যালেঞ্জিক স্কোর দাঁড় করিয়ে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকাদের সামনে।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দারুণ করলেও রাকিবুল হাসানের স্লো-অর্থডক্সে একে একে ভেঙে পড়ে প্রোটিয়া শিবির। ৯ দশমিক ৩ ওভার বল করে ৫ উইকেট নেয়া রাকিবের আঘাতে শেষ পর্যন্ত ১৫৭ রানে থেমে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশ জয় পায় ১০৪ রানের। উঠে যায় শিরোপার লড়াইয়ের কাছাকাছি সেমিফাইনালে। যেখানে প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড।
প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের মঞ্চে সেমিতে উঠা টাইগাররা এ ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। ফাইনালে ওঠার ম্যাচে শুরুতেই আঘাত হানেন শরিফুল ইসলাম। দলীয় ৫ রানের মাথায় রাইন মারিওকে তানজিবের হাতে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়া করেন এ পেসার।
শরিফুলের সঙ্গে শামিম হোসাইন ও হাসান মুরাদদের অ্যাটাকে ধস নামে কিউই শিবিরে। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২১১ রানে থেমে যায় তারা।
সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাহমুদুল হাসান জয়ের অনবদ্য সেঞ্চুরিতে ৫ ওভার ৫ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের জয় পায় লাল সবুজরা। স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে বাংলাদেশ। দেখে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন। ফাইনালে লড়ায় দুদলই অপরাজিত থেকে শিরোপার দুয়ারে এসেছে।
আগের ম্যাচে জয় পাওয়ায় কোনো দলই উইনিং কম্বিনেশক ভাঙার কথা চিন্তা করছে না। তাছাড়া ইনজুরি সমস্যাও নেই। ফলে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে অপরিবর্তিত একাদশ নিয়েই আজ মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। একই অবস্থা ভারতেরও। এবার আসল লড়াইয়ের অপেক্ষায় ক্রিকেট প্রেমিরা।
এআই/