সৌরভের ব্যাটে সুরভিত বাংলাদেশ
প্রকাশিত : ১৬:৪৩, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | আপডেট: ১৬:৫০, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০
মোমিনুল হক সৌরভ
তামিম ফেরার পর ক্রিজে আসেন মোমিনুল হক। এরপর থেকেই স্বচ্ছন্দে ব্যাট করে ছড়িয়েছেন সৌরভ। ছন্দময় ক্রিকেট খেলে ইতোমধ্যেই তুলে নিয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৪তম ফিফটি। ছুটছেন কাঙ্ক্ষিত ম্যাজিক ফিগারের লক্ষ্যেই। অধিনায়কের ফিফটি আর মুশফিকের সঙ্গ দেয়া ব্যাটে চড়ে বড় লক্ষ্যেই ছুটছে বাংলাদেশও।
রোববার দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২৪০ রান। অর্থাৎ এখনও ২৫ রান পিছিয়ে আছে স্বাগতিকরা। যদিও হাতে আছে ৭টি উইকেট। তার ওপর ক্রিজে অপরাজিত আছেন ফিফটি পার করে সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ২১ রান দূরে থাকা অধিনায়ক মোমিনুল হক সৌরভ ৭৯ রানে এবং তাকে সঙ্গ দেয়া মুশফিকুর রহিম অপরাজিত আছেন ৩২ রান নিয়ে। সৌরভ ৯টি এবং মুশফিক হাঁকিয়েছেন ছয়টি বাউণ্ডারি।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। সূচনালগ্নেই ফিরে যান সাইফ হাসান। তাকে সাজঘরে ফেরত পাঠান ভিক্টর নয়াউচি। পরে নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠেন তামিম ইকবাল। ধীরে ধীরে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া গড়ে তোলেন দুজনে। একপর্যায়ে জমে যায় তাদের জুটি।
ফলে জিম্বাবুয়ে বোলারদের শাসাতে শুরু করেন তামিম-শান্ত। দুজনের ব্যাটে হু হু করে বাড়তে থাকে দলের রানও। দুজনই এগিয়ে যান ফিফটির পথে। কিন্তু হঠাৎই ছন্দপতন। ডোনাল্ড তিরিপানোর অফ স্ট্যাম্পের সামান্য বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে সাজঘরে ফেরেন তামিম। ফেরার আগে ৭ চারে ৪১ রান করেন দেশ সেরা এই ওপেনার। তাতে শান্তর সঙ্গে ভাঙে ৭৮ রানের প্রতিরোধ গড়া জুটি।
এরপর অধিনায়ক মোমিনুল হককে নিয়ে হাল ধরেন শান্ত। ক্রিজে সেট হয়ে যান তিনি। ব্যাটে ছোটান রানের ফুলঝুরি। অপর প্রান্ত থেকে সমানতালে সঙ্গ দেন অধিনায়ক। দুজনই তুলতে থাকেন দ্রুত গতিতে রান। এরইমধ্যে টেস্ট ক্যারিয়ারে নিজের প্রথম ফিফটিও তুলে নেন নাজমুল হোসাইন শান্ত। হাঁটছিলেন সেঞ্চুরির দিকেও।
কিন্তু আচমকা থমকে যান তিনি। ভেঙ্গে যায় আরেকটি সত্তরোর্ধ (৭৬) রানের জুটি। চার্লটন টিসুমার সেই অফ স্ট্যাম্পের সামান্য বাইরের বলে উইকেটের পেছনে রেগিস চাকাভার গ্লাভসবন্দি হয়ে ফেরেন তরুণ এ ব্যাটসম্যান। ফেরার আগে খেলেন তামিমের সমান চারে ৭১ রানের নান্দনিক ইনিংস। ফলে ১৭২ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এর আগে এদিন সকালে জিম্বাবুয়েকে যত দ্রুত সম্ভব গুটিয়ে দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। সেক্ষেত্রে সফল হন স্বাগতিক বোলাররা। প্রথম ইনিংসে সফরকারীদের ২৬৫ রানে অলআউট করেন তারা।
আগের দিনের ৬ উইকেটে ২২৮ রান নিয়ে ব্যাট করতে নামে জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করেন রেগিস চাকাভা ও ডোনাল্ড তিরিপানো। তবে নিজেদের মধ্যে মেলবন্ধন গড়ে তুলতে পারেননি তারা। শুরুতেই তিরিপানোকে ফিরিয়ে দেন আবু জায়েদ রাহী। সেই জের না কাটতেই এন্সলে এনদলোভুকে বিদায় করেন ওই রাহীই।
পরক্ষণেই চার্লটন টিসুমাকে তুলে নেন তাইজুল ইসলাম। ফলে অলআউট হওয়া সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় জিম্বাবুয়ের। কিন্তু তা দীর্ঘায়িত করেন চাকাভা। শেষ পর্যন্ত তাকে ফিরিয়েই সেই শিবিরে শেষ পেরেকটি ঠুকেন তাইজুল। সংগ্রামী চাকাভাবে ফিরিয়ে তাদের মুড়িয়ে দেন বাঁহাতি এই স্পিনার। ফেরার আগে জিম্বাবুইয়ান উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান তিন চারে করেন ৩০ রান।
এর আগে, অনবদ্য শতরানের ইনিংস খেলেন জিম্বাবুয়ে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ক্রেগ আরভিন। ১৩ চারে ১০৭ রান করেন তিনি। এছাড়া, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্যারিয়ারসেরা ৬৪ রান করেন প্রিন্স মাসভাউরে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বোলার নাঈম হাসান ও আবু জায়েদ। দুজনই শিকার করেন ৪টি করে উইকেট। তাকে যোগ্য সহযোদ্ধার সমর্থন দেন তাইজুল। তিনি ঝুলিতে ভরেন ২ উইকেট।
এনএস/