ঢাকা, সোমবার   ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

পুরুষের চেয়ে খেলার মাঠে নারীর সাফল্য বেশি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:০৯, ৮ মার্চ ২০২০ | আপডেট: ১৩:৩৮, ৮ মার্চ ২০২০

এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টি, ফুটবলে সাফ অনূর্ধ্ব-১৬তে বাংলার মেয়েদের সাফল্যের ঝুলি অনেকবার ভরে উঠেছে। এমনকি খেলার মাঠে বেশ কিছু ক্ষেত্রে নারীর সাফল্য পুরুষের চেয়ে বেশি। সাফল্যের ঐতিহ্য আছে পাকিস্তান আমল থেকেই। অথচ সম্মানী, নেতৃত্বসহ নানা বিষয়ে বাধা আর বৈষম্য আছে।

পুরুষ ক্রিকেটের প্রচার, উন্মাদনা, পৃষ্ঠপোষকের আগ্রহ-সবই বেশি। তাই শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বব্যাপীই নারী ক্রিকেটারদের বেতন কম। 

তবে কোনও প্রতিকূলতাই যেন দমিয়ে রাখতে পারেনি নারী খেলোয়াড়দের। একের পর এক সাফল্য তাদের এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সামনের দিকে।

সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ ২০১৮-তে দারুণ সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। ফুটবলের সেই আসরে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা। ২০১৮ সালেই মালয়েশিয়ায় ভারতকে হারিয়ে এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। যা এখন পর্যন্ত নারী ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় অর্জন। মাশরাফি-সাকিবদের ঝুলিতেও উঠেনি এই সাফল্য।

এছাড়া আইসিসি নারী টি-২০ বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে টানা দুইবার (২০১৮, ২০১৯) চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সালমা বাহিনী। দক্ষিণ এশিয়ার অলিম্পিকখ্যাত এসএ গেমসে গতবারই প্রথম নারী ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত হয়। ওই আসরেই বাংলাদেশের নাম প্রথম চ্যাম্পিয়ন হিসেবে জায়গা করে নেয় ইতিহাসে। এই আসরেই বাংলাদেশের নারী তীরন্দাজরা সোনা জিতে পুরুষের সঙ্গে রেকর্ড করে। এর আগে এই বিষয়ে আমাদের সোনা অর্জন ছিল না।

শুধু তাই নয়, যত আন্তর্জাতিক গেমস-এ মেয়েরা অংশ নেয়, সেখানে পুরুষের সমানই তারা পদক জয়ের নজির রাখছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি পুরুষ ফুটবল দলের নারী কোচ হওয়ার গৌরব অর্জন করেন ২৬ বছর বয়সী বাগেরহাটের মেয়ে মিরোনা। অ্যাভারেস্ট জয়ের মতো দুর্গম খেলায় মেয়েরা রেখেছে সমান অংশিদারিত্ব।

২০১৯ সালের এসএ গেমসে দলগত ইভেন্টে সোনা জয়ের ক্ষেত্রে নারীর সমান থাকলেও ব্যক্তিগত ইভেন্টে পিছিয়ে ছিল পুরুষরা। ব্যক্তিগত ইভেন্ট থেকে নারী ক্রীড়াবিদরা জয় করে ছয়টি স্বর্ণপদক, সেখানে পুরুষরা জিতেছে পাঁচটি সোনা। একদিনে কোনো আন্তর্জাতিক গেমসে বাংলাদেশের সাত স্বর্ণজয়ের রেকর্ড, তাতেও মেয়েরা ভাগিদার। মাবিয়া আক্তার সীমান্ত টানা দুই বার সোনা আনেন দেশের জন্য। এমন ঘটনা এর আগে বাংলাদেশের কোনও ক্রীড়াবিদের ভাগ্যে ঘটেনি। এই আসরে ১৯ সোনা জয়ের ১১টি এসেছে নারীর হাত ধরে।

এসএ গেমসের আগের আসর ২০১৬ সালে বাংলাদেশ যে চারটি স্বর্ণপদক জয় করেছিল তার তিনটিই জয় করে মেয়েরা। তখন সাঁতার থেকে দেশকে জোড়া সোনা উপহার দিয়েছিলেন মাহফুজা খাতুন শিলা এবং ভারোত্তোলন থেকে স্বর্ণ জিতেছিলেন মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। ২০১০ এ ঢাকা এসএ গেমসে ১৮টি সোনার মধ্যে আটটি পায় নারীরা।

এছাড়া, ফুটবলেও ধারাবাহিকভাবে ভালো করছে মেয়েরা। কলসিন্দুর স্কুলের মেয়েদের বড় সাফল্য সবার জানা। ২০১৬ এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন এএফসি অনূর্ধ্ব ১৬ চ্যাম্পিয়ন, ২০১৫ সালে অনূর্ধ্ব ১৫, ২০১৮ সালের জকি কাপ, ২০১৯ সালের বঙ্গমাতা আন্তর্জাতিক ফুটবলে অনূর্ধ্ব ১৯ যুগ্মভাবে জয় করে আমাদের মেয়েরা।

বিসিবির নারী বিভাগের প্রধান শফিউল আলম বলেন, মেয়েদের সমঅধিকারের কথা আমরা মুখে বললেও বাস্তবে সব ক্ষেত্রেই এর ব্যত্যয় দেখা যায়। যেহেতু ছেলে ও মেয়েদের বেতন পার্থক্যটা অনেক বেশি। আমরা আশা করছি খুব অল্প দিনের মধ্যেই যতটুকু সম্ভব সম্মানজনক পর্যায়ে নিয়ে আসার ব্যাপারে বোর্ড থেকে একটা ঘোষণা পাব।

মেয়েদের খেলায় স্পনসর কম আসে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত দুই বছরে মেয়েদের পারফরম্যান্স ভালো, মেয়েরা এশিয়া কাপ জিতেছে, তাই এখন কিছু স্পনসরের আগ্রহ বেড়েছে।

তবে যাই হোক, অনেক সাফল্য নিয়ে বাংলাদেশের ক্রীড়া অঙ্গনে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করছে নারীরা। কিন্তু সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে রয়েছে অনেক না পাওয়ার গল্প। এমন বাস্তবতার মধ্যে ‘প্রজন্ম হোক সমতার:সকল নারীর অধিকার’ প্রতিপাদ্য করে আজ পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস।

একে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি