ঢাকা, শুক্রবার   ২১ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

‘সকল প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে এগিয়ে যাবে নারীরা’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:২৮, ৯ মার্চ ২০২৩ | আপডেট: ১৫:৫৭, ৯ মার্চ ২০২৩

Ekushey Television Ltd.

নারী হচ্ছে সেই শক্তি যা পৃথিবীর সব কিছুকেই জয় করার সক্ষমতা রাখে। তাই নারীর অধিকার যে মানবাধিকার সেটি ধারণ করতে হবে মনে, মননে। একুশে টেলিভিশনে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আয়োজনে বক্তারা বললেন, নারী পুরুষ ভেদ নয় বর্তমান সময়ের যুদ্ধ হোক মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তির সাথে। সকল প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে এগিয়ে যাবে নারীরা।

‘ডিজিটাল প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন জেন্ডার বৈষম্য করবে নিরসন’ প্রতিপাদ্যে একুশে টেলিভিশন উদযাপন করেছে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৩’।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) একুশে টেলিভিশনের নিজস্ব আয়োজনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন একুশে ও বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের প্রথম ও একমাত্র নারী ভিপি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মাহফুজা খানম।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদ, তিনি বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি।

আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির প্রথম নারী সাধারণ সম্পাদক, বেগম রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত ড. জিনাত হুদা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম নারী ট্রেজারার ও সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের প্রথম নারী ডিন ড. রাশেদা আকতার।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন একুশে টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রখ্যাত অভিনেতা, সাংবাদিক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রধান অতিথি অধ্যাপক মাহফুজা খানম তার বক্তব্যে বলেন, “নারীর অধিকার একটি মানবাধিকার। এই বোধের জায়গা থেকে আমরা সরে এসেছি। এক সময় নারীর সামনেও নারীদের যেতে দেওয়া হতো না। বেগম রোকেয়া আমাদের বলেছিলেন ‘একটি গাড়ির দুটি চাকা যদি সমানভাবে কাজ না করে তবে গাড়ি কিন্তু এগিয়ে যেতে পারবে না’। সেই জায়গা থেকে তিনি বলেছেন ‘নারী-পুরুষ সমাজের দুটি অংশ। দুটো অংশকেই সমান তালে চলতে হবে। তবেই সমাজ, দেশ এগিয়ে যাবে। মানব সভ্যতা এগিয়ে যাবে’।”

সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদ বলেন, “নারী একজন মানুষ। সেই মানুষটির স্বপ্ন আছে, তার নিজের প্রতি নিজের শ্রদ্ধা আছে, আস্থা আছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সমাজ, পরিবার তাদের স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তবে আশার কথা হচ্ছে সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে নারী কিন্তু তার জায়গা করে নিচ্ছে, নিয়েছে। একদিকে যেমন নারী বিভিন্নভাবে অত্যাচার সহ্য করছে অন্যদিকে সমাজের বড় বড় অবস্থানে এখন নারীদের অবস্থান রয়েছে।”

ড. জিনাত হুদা বলেন, “সমাজে আমাদের দুটি ধারা রয়েছে। একটি ধারা নারীদের এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে কাজ করছে। অপরদিকে বিপরীতমুখি নারী বিরোধী, নারী বৈষম্যের যে ধারা, মৌলবাদের যে ধারা, ফতোয়ার যে ধারা সেটাও প্রবল রয়েছে। আশা করি, সবাই মিলে এই ধারার বিরুদ্ধে সোচ্চার হবে।”

পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শুধু যে পুরুষতান্ত্রিক সমাজই নারী জাগরণের বা নারী মুক্তির পথে অন্তরায় তা কিন্তু এখন আর সত্য নয়, এখন এর ব্যাপ্তি পরিবর্তন হয়েছে। প্রগতিশীলতার পেছনে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মৌলবাদ। এগুলো নব্য রাজাকারের ভূমিকা পালন করছে।”

তিনি আরও বলেন, “একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মধ্যেই কিন্তু সব সমাধান হয়ে গিয়েছিল। এ যুদ্ধের অর্থই ছিল সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ মুক্ত বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র সবাই এক হয়ে অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল। স্বাধীনতার পরেও তিনি ৭২’র সংবিধানের মাধ্যমে তা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা দিয়েছিলেন, তা আজ বাস্তবে রূপ নিয়েছে। এখন তিনি স্মার্ট বাংলাদেশের ঘোষণা দিয়েছেন এটিও সার্থক হবে যদি আমরা নারী-পুরুষ, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি সবাই মিলে কাজ করতে পারি।”

এ সময় প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিভাগের নারী কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে অংশ নেন নিজ দক্ষতা আর যোগ্যতায় প্রতিষ্ঠিত সফল নারীরা। ফুলেল শুভেচ্ছা এবং উত্তরিয় পরিয়ে বরণ করে নেয়া হয় এসব সাহসিকাদের। 

নিজেদের দুর্বল নয়, সকল প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলায় এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণায় উদ্বুদ্ধ করেছেন আলোচকরা।

পুরুষতান্ত্রিকতা আর সামাজিক সব শৃঙ্খল ভেঙে এগিয়ে ছিলেন, জাহানারা ইমাম, বেগম রোকেয়ার মত স্বপ্নজয়ীরা। আহ্বান ছিল, সে পথের আলোক শক্তিতে জয়ী হাবার।

এই আয়োজন আগামীর অনুপ্রেরণা, বলছেন একুশের কর্মীরা।

সাহসিকতায়, দৃঢ়তায় আগামীর নারী হবে অনন্য দিকজয়ী, আজকের এ দিনটি তারই জয়গান। 

এসএ/
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি