অসহায়দের পাশে ‘আদনান ফাউন্ডেশন’
প্রকাশিত : ১৮:০৩, ২৬ জুন ২০২০
অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘আদনান ফাউন্ডেশন’- একুশে টেলিভিশন
করোনা এখন বিশ্বজুড়ে পরিচিত আতঙ্কের নাম। সর্বদা ছড়িয়ে পড়া করোনা ভয়, সঙ্গে ক্ষুধার জ্বালায় মানুষ আজ বাকরূদ্ধ। অসহায় এই মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াচ্ছে নানা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এদের মধ্যে একটি আদনান ফাউন্ডেশন।
চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল আদনান ফাউন্ডেশনের পথচলা শুরু। প্রথম দিনে ১টি পরিবারে খাবার পাঠানোই ছিল তাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। চারপাশে নানান নামের ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে কতশত অভিযোগ রয়েছে। যার ফলে মানুষের কাছে ফাউন্ডেশনের কথা বলে ডোনেশন পাচ্ছিল না তারা। কেমন যেন বিশ্বাসের অভাব পরিলক্ষিত হয় তাদের চোখে। তারা অর্থ সংগ্রহের পথ বদল করে। ইভেন্টে ফান্ড সংগ্রহ না করে, ঢালাওভাবে সবার সহযোগিতা না চেয়ে ঘনিষ্ঠজনদের শরণাপন্ন হয় সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।
সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ফান্ডের বড় অংশ দিতো বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্যরা। তন্মধ্যে অন্যতম মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, তাসকিন আহমেদ, আল আমিন হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজসহ আরও অনেকেই। এছাড়া আমি পাশে পেয়েছি এসএ গেমসে প্রথম স্বর্ণপদক জয়ী রেকর্ডবয় আর্চার রোমান সানাকেও।’
জানা যায়, সংগঠনটি ৫২ দিনে সাড়ে ৪ হাজারের বেশি পরিবারের কাছে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে। সাতক্ষীরার কয়েকটি অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কাছে ছুটে গেছেন সংগঠনের সদস্যরা। এছাড়াও অনেক পরিবারে মেডিসিন, চিকিৎসা খরচ পৌছানোর পাশাপাশি দরিদ্র মেধাবীদের পাশেও দাড়িয়েছে আদনান ফাউন্ডেশন। ঢাকা, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সাতক্ষীরাসহ বাংলাদেশের প্রায় ৪০টির বেশি জেলায় ও ১০০ বেশি উপজেলায় কাজ করছে সংগঠনটি।
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন আরও বলেন, ‘সাতক্ষীরার বন্যা প্লাবিত এলাকায় বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছানো ছিল বেশ চ্যালেঞ্জিং। কোথাও কোমড় সমান পানি, আবার কোথাও গলা ছুঁই ছুঁই। অধিকাংশ জায়গায় নেই নৌকা। যার ফলে পানি ডিঙিয়ে নিজেদেরকে খাবার পৌঁছে দিতে হয়েছে। শরীরের পাশ ঘেঁষে ভেসে বেরিয়েছে টয়লেটের দৃশ্যমান আবর্জনা। পায়ে বিঁধেছে নাম না জানা কাঁটা। লবণাক্ত পানি চোখে-মুখে দিয়েছে অসহ্য যন্ত্রণা। আবার অসহায় পরিবারের অপেক্ষায় থাকা খাবারগুলো যেন না ভিজে যায়। সেজন্য করতে হয়েছে লড়াই।’
সংগঠনটির সেচ্ছাসেবক রায়হান খাঁন বলেন, ‘এই সংগঠনে কাজ করার আগে মানুষের দুঃখ দুর্দশার কথা শুনেছি খারাপ লেগেছে, কিন্তু অনুভব করতে পারিনি। মানুষের খাদ্যাভাব, কষ্ট খুব কাছ থেকে দেখেছি আর প্রতিনিয়ত চিন্তা করেছি আরও ভালোভাবে কিভাবে মানুষের পাশে দাড়ানো যায়। আমি মনে করি, আমরা তরুণরাই পারি ক্ষুধার্তদের পাশে দাড়াতে। তাই যাদের টাকাপয়সা আছে তাঁরা সবাই যদি এই মানুষগুলোকে সহয়তা করে তাহলে দারিদ্র্য মোচন করা সম্ভব। আসুন যে যেভাবে পারি মানুষের পাশে দাড়াই।’
এমএস/
আরও পড়ুন