ঢাকা, বুধবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

অকালমৃত্যু ডেকে আনবে টিভি আসক্তি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:০৭, ৫ জানুয়ারি ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

নিষ্প্রাণ টিভির সামনে জড় পদার্থের মতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকা কি আপনার প্রিয়তম কাজ কিংবা দৈনন্দিন অভ্যেস? সাবধান! আপনি কিন্তু অবধারিতভাবে নিজের অকালমৃত্যু ডেকে আনছেন।

অস্ট্রেলিয়ার খ্যাতনামা স্বাস্থ্য-গবেষণা প্রতিষ্ঠান বেকার আইডিআই হার্ট এন্ড ডায়াবেটিস ইনস্টিটিউট। টিভি দেখার স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে জানার জন্যে তারা পরিণত বয়সের আট হাজার আটশ’ মানুষকে বেছে নেন-যারা নিয়মিত দীর্ঘ সময় ধরে টেলিভিশন দেখেন। গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, এদের মধ্যে ৮৭ জন হৃদরোগে ও ১২৫ জন ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

গবেষকরা বলেন, যারা টেলিভিশনের সামনে দিনে চার ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় কাটান, তাদের হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়তে পারে ৮০ ভাগ পর্যন্ত। শুধু তা-ই নয়, টিভি দেখা ছাড়াও শারীরিক পরিশ্রমহীন অন্যান্য কাজের ক্ষেত্রেও এটি একইরকম সত্য। যারা সারাদিন অফিসে চেয়ারে বসে কাজ করেই কাটিয়ে দেন, আবার বাসায় এসেও টিভির সামনে সময় কাটান ঘণ্টার পর ঘণ্টা, তারা আছেন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে।

আইডিআই হার্ট এন্ড ডায়াবেটিস ইনস্টিটিউটের গবেষক ডেভিড ডানস্ট্যান বলেন, শরীরের ওজন ঠিক থাকলেও যারা এভাবে দীর্ঘক্ষণ বসে সময় কাটান তাদের রক্তে শর্করা ও কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে। তার মতে, টেলিভিশন নিজে কোনো সমস্যা নয়। কিন্তু বিষয়টি মারাত্মক আকার ধারণ করে, যখন দৈহিক শ্রম না করে কিংবা কম পরিশ্রম করে অধিক সময় বসে থাকা হয়। আর এভাবে নিস্ক্রিয় হয়ে একাধারে বসে থাকা আপনার স্বাস্থ্যের জন্যে সবদিক থেকেই ভীষণ ক্ষতির। কারণ এ থেকে সূত্রপাত ঘটতে পারে মেদস্থুলতা, মাত্রাতিরিক্ত কোলেস্টেরল, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার ও বিষণ্নতাসহ বিভিন্ন ধরনের প্রাণসংহারী রোগব্যাধি ও মনোদৈহিক জটিলতা।

শিশুরাও আছে সমান ঝুঁকিতে শিশুদের বেলায়ও এ ঝুঁকি কোনো অংশে কম নয়। অস্ট্রেলিয়ার একই গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা ১০ বছরের কম বয়সী শিশুদের ওপরও টিভি আসক্তির প্রভাব নিয়ে একটি দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা পরিচালনা করেন। গড়ে ছয় বছর বয়সী প্রায় নয় হাজার শিশুর ওপর তারা দীর্ঘদিন ধরে জরিপ চালিয়ে এর ফলাফলে বলেন, দিনে যারা দু-ঘণ্টার কম সময় টিভি দেখে, তাদের তুলনায় যারা দিনে চার ঘণ্টারও বেশি সময় বিভিন্ন চ্যানেলে ঘুরে বেড়ায় তাদের অকালমৃত্যুর ঝুঁকি শতকরা ৪৬ ভাগ বেশি।

এক্ষেত্রে তাদের অতিরিক্ত ওজন ছিলো কি না, সে বিষয়টি মূখ্য নয়। মূল বিষয় হলো, টেলিভিশন আসক্তি রোগ ও মৃত্যুঝুঁকি বাড়াচ্ছে। কেবল পাশ্চাত্যে নয়, গত কয়েক দশকে বিশ্বজুড়েই বেড়ে চলেছে শিশু-মেদস্থূলতার হার। এর সাথেও মাত্রাতিরিক্ত টিভি দেখার একটি যোগসূত্র আছে বলে ধারণা করছেন শিশু-বিশেষজ্ঞরা।

এপ্রসঙ্গে আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস-এর পরামর্শ হলো, দু-বছরের কম বয়সের শিশুদের টিভি দেখা একেবারেই উচিত নয়। বয়স বাড়লে মানসম্পন্ন অনুষ্ঠান দেখা যেতে পারে, তবে তা-ও বড়জোর দিনে দুই/এক ঘণ্টা, এর বেশি নয়। এসব গবেষণার প্রেক্ষিতে ছেলে-বুড়ো সবার প্রতি গবেষকদের পরামর্শ-অযথা টিভির সামনে বসে সময় কাটানোর পরিমাণ কমিয়ে দিন, যদি সুস্থ থাকতে চান।

টিভির পেছনে এভাবে সময় ব্যয় করা এককথায় শারীরিক-মানসিক স্বাস্থ্য এবং সামাজিক উন্নয়নে প্রয়োজনীয় ও মূল্যবান সময়ের অর্থহীন অপচয় বৈ আর কিছু নয়।

সূত্র,রিডার্স ডাইজেস্ট


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি