অপারেশন সার্চলাইটের নামে বাঙালি হত্যার নির্দেশ ছিল
প্রকাশিত : ১০:৫৪, ২৫ মার্চ ২০২৩ | আপডেট: ১১:১৪, ২৫ মার্চ ২০২৩
একাত্তরের ২৫ মার্চ। অপারেশন সার্চ লাইটের নামে কালরাতে ঢাকার পিলখানা, রাজারবাগ পুলিশ লাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যা চালায় পাকিস্তানি সেনারা। ওই রাতেই গ্রেফতারের আগে স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন জাতির পিতা। ২০১৭ সালে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় জাতীয় সংসদে। তবে এখনও আন্তজার্তিক স্বীকৃতি না মেলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুক্তিযোদ্ধা ও ইতিহাসবিদরা।
দীর্ঘ শোষণ বঞ্চনার প্রতিবাদে ৭ মার্চ জাতির পিতার চূড়ান্ত হুঁশিয়ারী। এরপর আলোচনার নামে কালক্ষেপন। ১৬ থেকে ২৪শে মার্চ আলোচনা চললেও সমাধান মেলেনি।
এ সময়ের মধ্যেই পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আসে যুদ্ধাস্ত্র। ২৫ মার্চ অপারেশন সার্চলাইটের নামে বাঙালি হত্যাযজ্ঞের নির্দেশ দেন সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান। অপারেশনের নেতৃত্বে জেনারেল টিক্কা খান।
সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান বলেন, “রাত ১১টা থেকে অপারেশন সার্চলাইটের নামে পাকিস্তান আর্মি শুরু করলো গণহত্যা। বঙ্গবন্ধু বললেন, আমাকে গুলি করে মারবে, মারুক।”
রাতের আধারে নিরস্ত্র ঘুমন্ত বাঙালির ওপর ঝাপিয়ে পড়ে শকুনেরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলে পড়ে হানাদার পাকবাহিনী। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারিদের ধরে ধরে ব্রাশ ফায়ার। বাদ যায়নি নারী-শিশুরাও।
পিলখানায় পাকিস্তানিদের বর্বরতায় রক্তের বন্যা। রাজারবাগ পুলিশ লাইনে আক্রমণ প্রতিরোধে রুখে দাঁড়ায় দেশপ্রেমিক বাঙালি পুলিশ সদস্যরা।
মুক্তিযুদ্ধ গবেষক কর্নেল (অব.) সাজ্জাদ জহির বীরপ্রতীক বলেন, “অপারেশন সার্সলাইটে অ্যারেস্ট করার নামে সবাইকে মেরে ফেলা হয়েছে। ঢাকার পুলিশরা প্রতিরোধ করলো। বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম পুলিশ এতো বড় সংগ্রাম করলো।”
শুধু ঢাকা নয়, ওই রাতে সারাদেশেই চলে হত্যাযজ্ঞ। বাংলাকে শশ্মানে পরিণত করতে উদগ্রিব পাকিস্তানি বাহিনী। এক রাতেই হত্যা করা হয় প্রায় ১ লাখ বাঙালিকে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান বলেন, “টার্গেট ছিল আন্দোলন সফল করার জন্য যারা দক্ষ ও সক্ষম তাদের ধ্বংস করে দেওয়ার।”
জাতীয় সংসদে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস ঘোষণার প্রস্তাব পাস হয়েছে। তবে ইতিহাসের দায়মুক্তিতে গণহত্যা, সম্পদ ধ্বংস, লুন্ঠন ও নারী নির্যাতনের ক্ষতিপূরণ আদায়ে পাকিস্তানকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর দাবি এখন প্রাসঙ্গিক।
পাকিস্তানের কাছে ক্ষতিপূরণ আদায়ের দাবিও যৌক্তিক বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা। সেই সঙ্গে গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি না মেলায় ক্ষোভ আছে মুক্তিযোদ্ধা ও ইতিহাসবিদদের মনে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান বলেন, “আমি মনে করি, এটার জন্য আমাদের আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করা উচিত।”
এএইচ