অপেক্ষা শেষ, মিনায় জড়ো হয়েছেন ২০ লাখ মুসল্লি
প্রকাশিত : ২২:০১, ৩০ আগস্ট ২০১৭ | আপডেট: ১২:১৪, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৭
পবিত্র হজ পালনে সৌদি আরবের মিনায় জড়ো হয়েছেন ২০ লাখ মানুষ। মুসল্লিদের জড়ো হওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে হজের আনুষ্ঠানিকতা।
মিনায় মুসল্লিদের উপস্থিতির মধ্য দিয়ে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট)। হজের পুরো আনুষ্ঠানিকতা পালনে মুসল্লিরা মিনা, আরাফাত ময়দান, মুজদালিফা, মক্কা ও মিনায় পাঁচদিন অবস্থান করবেন। বুধবার রাতে মিনায় অবস্থান করবেন তারা।
বৃহস্পতিবার মিনায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের পর মুসল্লিরা যাবেন ১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত আরাফাতের ময়দানের দিকে। আরাফাতে যাওয়ার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে মুসল্লিরা পায়ে হেঁটে, হুইল চেয়ারে, বাসে; যে যেভাবে পারেন পৌঁছাবেন। সবার শরীর সাদা কাপড়ে ঢাকা থাকবে। তাদের ‘লাব্বায়েক আল্লাহুম্মা লাব্বায়েক’ ধ্বনিতে মুখরিত হবে আরাফাতের ময়দান।
আরাফাতের ময়দান থেকে মুসল্লিরা মাগরিবের নামাজ আদায় না করেই রওনা দেবেন মুজদালিফার দিকে। সেখানে পৌঁছে মাগরিব ও এশার নামাজ একসঙ্গে আদায় করবেন তারা। এখানে খোলা আকাশের নিচে রাত যাপন করবেন তারা। তারপর মিনার জামারায় (প্রতীকী) শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য পাথর সংগ্রহ করবেন।
আগামী শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) ফজরের নামাজ শেষে হাজিরা আবার ফিরে আসবেন মিনায়। পরদিন ২ সেপ্টেম্বর সকালে জামারাতে পাথর নিক্ষেপ ও পশু কোরবানির পর পুরুষরা মাথা মুণ্ডন করে ইহরাম ত্যাগ করবেন। এরপর পবিত্র কাবা শরিফে বিদায়ী তাওয়াফ করে হজের পূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা শেষ করবেন।
সৌদি আরবের হজ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হাতিম বিন হাসান কাদি আরব নিউজকে জানান, মদিনা থেকে মক্কায় ১৯ হাজার ৫০০টি বাসে করে হজযাত্রীদের আনা হয়েছে। অন্য এলাকা থেকে ৩৮ হাজার বাসে হজযাত্রীরা মক্কায় এসেছেন।
সরকারি সংস্থাগুলো ২০ লাখ হাজির সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মেজর জেনারেল মনসুর আল-তুর্কি।
মঙ্গলবার সৌদি আরব সরকার হজ উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘোষণা দেয়। অনুমতি না থাকায় ৪ লাখ মানুষের মক্কায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে অনুমতি না থাকায় ২ লাখ ৮ হাজার ২৩৬টি গাড়ি মক্কায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এছাড়া, মক্কার প্রবেশ মুখে ৩ হাজার ২৯৬টি গাড়ি জব্দ করা হয়েছে।
এবার হজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সৌদি সরকার মিনা, আরাফাত ও মুজদালিফায় ২২ টি উন্নয়ন প্রকল্প সম্পন্ন করেছে। এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, মিনায় আল-ওয়াদি হাসপাতালের পশ্চিমে একটি পায়ে হাঁটার সেতু, মক্কার আল-আজিজিয়া থেকে মিনা’র জামারা পর্যন্ত হেঁটে যাওয়ার রাস্তায় ছাউনি স্থাপন, বিপুল সংখ্যক নতুন শৌচাগার নির্মাণ, বিশুদ্ধ বাতাসের জন্য জামারা অঞ্চলে পানি ছিটানোর ব্যবস্থা ও ট্রেন স্টেশন পর্যন্ত রাস্তায় ছাউনি স্থাপন। এছাড়া আরাফায় ব্যারিকেড দিয়ে ও সিমেন্টের প্রাচীর নির্মাণ করে পায়ে চলাচলের রাস্তাকে সুরক্ষিত করা হয়েছে।
নিরাপত্তার ব্যাপারেও কঠোর অবস্থানে রয়েছে সৌদি সরকার। নামিরা মসজিদের ভেতরে ও বাইরে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। জাবল-আল-রাহমা পাহাড়ে আরোহণ করার সুবিধার্থে সিঁড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে এবার সৌদি আরবে হজে গেছেন মোট ১ লাখ ২৭ হাজার ২২৯ জন। হজ যাত্রী, হজ কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, হজ ডেলিগেট, ধর্মমন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাসহ মোট ১ লাখ ২৭ হাজার ৫৯৬ জন ভিসা পেয়েছিলেন। তবে ৩৬৭ জন সৌদি আরবে যেতে পারেননি। সূত্র: আরব নিউজ।
ডব্লিউএন
আরও পড়ুন