অবশেষে জানা গেল পাগলা মসজিদের ব্যাংকে জমা টাকার পরিমাণ
প্রকাশিত : ১৯:০৪, ১২ এপ্রিল ২০২৫

কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদে দানবাক্স খোলা মানেই চমকে দেওয়ার মতো অঙ্কের টাকা! প্রতি তিন মাসে একবার দানবাক্স খুলে কোটি কোটি টাকা পাওয়া যেন নিয়মে দাঁড়িয়ে গেছে। তবে এতদিন পর্যন্ত এই মসজিদে আসা মোট দানের কত টাকা ব্যাংকে জমা রয়েছে—সে তথ্য ছিল রহস্যে ঢাকা। এবার সেই গোপন তথ্যই প্রকাশ্যে এল।
শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে সাংবাদিকদের সামনে পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান জানান, এতদিনে দান থেকে খরচ বাদ দিয়ে ব্যাংকে জমা হয়েছে মোট ৮০ কোটি ৭৫ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। এই টাকা সংরক্ষিত আছে রূপালী ব্যাংকের একটি হিসাবে।
জেলা প্রশাসকের ভাষায়, দান থেকে পাওয়া এই অর্থ শুধু মসজিদ পরিচালনায় নয়, ব্যবহার হচ্ছে এতিমখানা চালাতে এবং বিভিন্ন ধর্মীয় ও মানবিক প্রতিষ্ঠানে অনুদান দিতে। বাকি টাকা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার জন্য জমা রাখা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এই অর্থ দিয়েই প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে মসজিদের জন্য একটি আধুনিক বহুতল ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ শিগগিরই শুরু হবে।
আজ সকালে প্রশাসনের উপস্থিতিতে মসজিদের ১১টি লোহার দানবাক্স খোলা হয়। সেখান থেকে পাওয়া গেছে ২৮ বস্তা টাকা। সকাল থেকে দিনভর চলে গণনার কাজ। অংশ নেন প্রায় ৩৭০ জন, যাদের মধ্যে ছিলেন বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তা এবং প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
প্রতিবার তিন মাস পর দানবাক্স খোলা হলেও এবার সময় লেগেছে চার মাস ১১ দিন। আগেরবার, ২০২৩ সালের ৩০ নভেম্বর খোলার সময় পাওয়া গিয়েছিল ৮ কোটি ২১ লাখ টাকা। এবার যুক্ত হয়েছে নতুন একটি দানবাক্সও।
জনশ্রুতি অনুযায়ী, এক আধ্যাত্মিক সাধকের নামেই এই মসজিদের নাম ‘পাগলা মসজিদ’। মানুষের বিশ্বাস, এখানে দান করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। সেই বিশ্বাস থেকেই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে হাজারো মানুষ প্রতিদিন এই মসজিদে দান করে যাচ্ছেন। আর সেই ধারাবাহিকতায় ক্রমেই বেড়েই চলেছে দানের অঙ্ক।
আরও পড়ুন