অর্থ খরচ করতে পারছে না মন্ত্রণালয়
প্রকাশিত : ২৩:২৬, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বৈদেশিক অর্থ ব্যবহার করতে পারছে না মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। নানা উদ্যোগের পরও খরচ করতে না পারায় চলতি অর্থবছরের এডিপি থেকে বাদ যাচ্ছে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। ফলে মূল এডিপিতে বরাদ্দকৃত ৫৭ হাজার কোটি টাকা থেকে কাটছাঁট করে নামিয়ে আনা হচ্ছে ৫২ হাজার ৫০ কোটি টাকায়। এরই মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) থেকে কাটছাটের হিসাব চূড়ান্ত করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে ।
সূত্র জানায়, সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক সহায়তা কাটছাঁট হচ্ছে রেলপথ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে। বিপরীতে বরাদ্দ বাড়ছে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের।
তবে সম্প্রতি প্রকল্প বাস্তবায়নে বেশ কিছু বাধা চিহ্নিত করেছে বাস্তবায়ন পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। এগুলোর অন্যতম হচ্ছে: কর্ম পরিকল্পনা ছাড়াই প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করা, জমি অধিগ্রহণের জটিলতা, অর্থ ছাড়ে বিলম্ব, দরপত্র মূল্যায়নে দীর্ঘসূত্রতা, সমীক্ষা ছাড়াই প্রকল্প গ্রহণ, দক্ষ ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন জনবলের অভাব, উন্নয়নসহযোগীদের প্রকিউরমেন্ট গাইডলাইন অনুসরণ করে মালামাল ক্রয়ে অসুবিধা, ঠিকাদারদের পেশাদারিত্বের অভাব, ভৌত নির্মাণ কাজের ধীরগতি, চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি ছাড়াই কার্যক্রম চালু রাখা, প্রকল্প প্রস্তাব তৈরিতে দ্রব্যের মান ও মূল্য নির্ধারণে অদূরদর্শিতা এবং পরামর্শক সংস্থার ওপর অতি নির্ভরশীলতা।
চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপিতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর বরাদ্দ হচ্ছে: কৃষি মন্ত্রণালয় ২৮৫ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগ ৬১৩ কোটি, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ ৩৯৩ কোটি, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণায় সাড়ে ২৭ কোটি, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ দুই হাজার ২৬২ কোটি, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ ৫৯৯ কোটি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ৩৭৫ কোটি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ১৮৮ কোটি, স্থানীয় সরকার বিভাগ সাত হাজার ৬২৩ কোটি, রেলপথ মন্ত্রণালয় ছয় হাজার ৭০০ কোটি, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ ছয় হাজার ১৪২ কোটি, সেতু বিভাগ এক হাজার ৭৫৫ কোটি, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৯৪৯ কোটি, পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় ১৯৮ কোটি, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ ১১ কোটি, তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এক হাজার ৯৯৩ কোটি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগ সাত হাজার কোটি, খাদ্য মন্ত্রণালয় ২০৮ কোটি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিভাগ ৭৩ কোটি, ভূমি মন্ত্রণালয় ২২ লাখ, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ৫৫১ কোটি, আইন ও বিচার বিভাগ ১০ কোটি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১৫১ কোটি, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ৫১ কোটি, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ২৭ কোটি, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ ৩৭ কোটি, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ১৫৬ কোটি, তথ্য মন্ত্রণালয় ১৯ কোটি, নির্বাচন কমিশন ৪৪৯ কোটি, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ৩৯ কোটি, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ ২৮৩ কোটি, আইএমইডি ৩৩ কোটি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দেড় কোটি, সংসদ সচিবালয় ৭৫ লাখ, বিদ্যুৎ বিভাগ ১১ হাজার ৯৬ কোটি, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ ৪২৯ কোটি, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় ১১০ কোটি, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ৪০ কোটি, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ৯০ লাখ, শিল্প মন্ত্রণালয় ১০ কোটি, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ৬০ কোটি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ৩৩৮ কোটি, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় তিন কোটি, নিরাপত্তা সেবা বিভাগ ৬০ কোটি, জননিরাপত্তা বিভাগ সাড়ে সাত কোটি এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুকূলে বরাদ্দ থাকছে এক কোটি টাকা। এ ছাড়া বিশেষ প্রয়োজনে এক হাজার ১৫৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা বরাদ্দ চূড়ান্ত করা হয়েছে।
আরকে//
আরও পড়ুন