অসাম্প্রদায়িক দেশ গঠনে অবিচল আওয়ামী লীগ (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১২:১৬, ২৩ জুন ২০২১ | আপডেট: ১২:২১, ২৩ জুন ২০২১
ঐতিহ্য, সংগ্রাম ও বাঙালির মুক্তির সংগঠন আওয়ামী লীগ। উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন দল আওয়ামী লীগের সাফল্য ও অর্জনের ভীত গড়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর সাড়ে ৩ বছরে গড়ে তোলা যুদ্ধবিধ্বস্ত রাষ্ট্র কাঠামোকে উন্নয়নের মহাসড়কে সামিল করেছেন শেখ হাসিনা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রেখে অসাম্প্রদায়িক দেশ গঠনে অবিচল আওয়ামী লীগ।
জাতির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আহবানে সাড়ে ৭ কোটি বাঙালি ২শ’ বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙার শপথ নেয়।
গোলামী আর সাম্প্রদায়িকতা থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র গড়ে তুলতে, সব শ্রেণীপেশার মানুষকে বঙ্গবন্ধু সংগঠিত করেন এক ছায়াতলে। আওয়ামী লীগ নামের সেই বটবৃক্ষের যাত্রা শুরু হয় ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন, ঐতিহাসিক রোজ গার্ডেন থেকে।
কারাবন্দী অবস্থায় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন শেখ মুজিব। ১৯৫২ সালে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক, পরের বছর নির্বাচিত হন সাধারণ সম্পাদক।
সৃষ্টির ৬ বছরের মাথায় অসাম্প্রদায়িক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে মুসলিম শব্দটি বাদ দেয়া হয়। ৬৬তে বঙ্গবন্ধু সভাপতি নির্বাচিত হন। প্রণয়ন করেন বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফা।
স্বাধিকার প্রতিষ্ঠার সূত্র ধরে আন্দোলন গড়ায় উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে। পাকিস্তান শাসনের ষড়যন্ত্র আর শোষণের বিরুদ্ধে ৭০-এর নির্বাচনে জবাব দিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে আওয়ামী লীগ।
একাত্তরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে স্বাধীনতা বাঙালির শ্রেষ্ঠ অর্জন। ৭২-এর ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্বদেশের মাটিতে ফিরে আসেন বঙ্গবন্ধু। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে নেতৃত্ব দিয়ে ভীত গড়ে দেন থুবড়ে পড়া অর্থনীতির। সাড়ে ৩ বছরের সরকার ব্যবস্থায় গড়ে ওঠে সংবিধান, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, পররাষ্ট্রনীতি ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নসহ পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্র কাঠামো।
পঁচাত্তরের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের পর আবারও মুখ থুবড়ে পড়ে বাংলাদেশ। হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্র ও ভঙ্গুর রাষ্ট্রকাঠামোতে যখন ঘোর সংকট, তখন ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। স্বজন হারানোর শোক ভুলে ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠায় উৎসর্গ করেন জাতির পিতার আদর্শে। স্বৈরাচার ও সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে প্রতিষ্ঠা করেন সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারা।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, ৮১তে আমরা জ্যেষ্ঠ কন্যার হাতে আওয়ামী লীগের পতাকা তুলে দিয়েছি। সেই পতাকা হাতে নিয়ে নিষ্ঠার সাথে, সততার সাথে, দক্ষতার সাথে ৪০ বছর ধরে বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন।
উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধু যেমন সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন করেছেন, তিনিও কিন্তু সামরিক সরকার বিরোধী আন্দোলন করেছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, বার বার প্রাণনাশের হুমকি থাকা সত্ত্বেও তিনি পিছু হটেননি।
স্বাধীনতা পরবর্তী এক ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধুর সরকার প্রথমবারের মতো ৭৮৬ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা দেয়। ৫০ বছরের ব্যবধানে যা পরিণত হয়েছে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকায়। প্রথম বাজেট থেকে ৭৬৭.৯৬ গুণ বেশি।
অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু এই সাড়ে তিন বছরে আমাদের মাথাপিছু আয় মাত্র ৯৩ ডলার থেকে টেনে ৩শ’ ৭৩ ডলারে নিয়ে গিয়েছিলেন। তার মানে তিনি অবকাঠামো উন্নত করেছেন, প্রথম পঞ্চমবার্ষিকী পরিকল্পনা দিয়েছেন এবং পরিকল্পিত উন্নয়নে বিশ্বাসী ছিলেন বঙ্গবন্ধু। একইভাবে আমরা লক্ষ্য করছি বঙ্গবন্ধুর কন্যাও পরিকল্পনার অধীনে উন্নয়ন করছেন।
নেতৃত্বের পরম্পরায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও নীতি বাস্তবায়নে ঈর্ষণীয় সাফল্য পেয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরিকল্পিত উন্নয়ন দৃশ্যমান করছেন দক্ষ রাষ্ট্রনায়কের মতো।
ড. আতিউর রহমান আরও বলেন, অর্থনৈতিক নীতিমালার মধ্যে মানুষকে কেন্দ্রে নিয়ে আসবার যে অভিপ্রায় বঙ্গবন্ধুর ছিল, সেটা বঙ্গবন্ধুর কন্যার মধ্যেও আমরা দেখতে পাচ্ছি।
নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া মৌলিক অধিকার ও উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে চলেছে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। স্বপ্নের পদ্মাসেতু এখন বাস্তব। অগ্রগতি হয়েছে সব উন্নয়ন সূচকে।
৭২ বছরে আওয়ামী লীগ অর্জন করেছে মানুষের আস্থা, বিশ্বস্বীকৃতি ও জনপ্রিয়তা।
ভিডিও-
এএইচ/