আমরন অনশন
অসুস্থ হয়ে ১৫ শিক্ষক হাসপাতালে
প্রকাশিত : ১৩:৪৮, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১৩:৪৯, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭
সারাদেশে প্রাথমিক স্কুল সহকারী শিক্ষকদের বেতন কাঠামোর বৈষম্য নিরসনের দাবিতে আমরণ অনশন দ্বিতীয় দিনের মতো অব্যাহত রয়েছে। অনশনে অসুস্থ্য হয়ে এ পর্যন্ত ১৫ জন শিক্ষক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অনশনকারী শিক্ষকরা বলছেন, যতক্ষন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী দাবি পূরণের আশ্বাস না দিবেন ততক্ষণ অনশন চলবে।
আজ রোববার শহীদ মিনারে অব্যাহত অনশনে শিক্ষকরা এ কথা বলেন। অনশনে নেতৃত্বদানকারী ‘বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজ’র সভাপতি আনিসুর রহমান বলেন, গতকাল শনিবার প্রথমদিনের অনশনে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের ডিজি’র পক্ষ থেকে দুইজন প্রতিনিধি আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তারা বলেছেন ডিজি আপনাদের (শিক্ষকদের) দাবির বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছেন।আপনারা এটা বন্ধ করেন। আলোচনার মাধ্যেমে এটার নিরসন করা হবে।
আনিসুর রহমান জানান, আমরা বলেছি আমরা লিখিত আশ্বাস চাই। প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস চাই। আর যতক্ষণ এটা না পাচ্ছি, আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
এদিকে আজ রোববার দুপুরে এ প্রতিবেদন লেখার সময় অনশনরত ৪ জন শিক্ষক অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। তাদের ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা হলেন- বাগেরহাট মোড়লগঞ্জের ৬২ নম্বর দাশখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা নাসরিন আক্তার, বরিশাল মুলাদির কাজী চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হুমায়ুন কবির, রাজশাহীর দুর্গাপুরের জয়নগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।
‘বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজ’র সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী রবিউল বলেন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চালিয়ে যাব। আমাদের এ অনশনে জাতীয় প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক সমাজ, বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক সমাজ-২, বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারি শিক্ষক ও বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজ নামে মোট ৫টি সংগঠন অংশ নিয়েছে। আমরা অপেক্ষায় আছি সরকারের কাছ থেকে আমাদের দাবি পূরণে আশ্বাস দেওয়া হবে।
প্রধান শিক্ষক সমিতির চারটি সংগঠন এই কর্মসূচিতে ঐকমত্য প্রকাশ করেছে। শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে শিক্ষকরা পাটি, পত্রিকা বিছিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। পুরুষদের সঙ্গে দূর-দূরান্ত থেকে নারী শিক্ষকরা এসেছেন আমরণ কর্মসূচিতে।অনশনে কাফনের কাপড় পরে অংশ নেয় অনেক শিক্ষক। শিক্ষকরা জানিয়েছেন, আগের বেতন স্কেলগুলোতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিচে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা বেতন পেতেন। কিন্তু ২০১৫ সালের বেতন কাঠামোতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের ব্যবধান তিন ধাপ।এখন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা ১৪তম গ্রেডে (মূল বেতন ১০ হাজার ২০০) বেতন পাচ্ছেন। আর প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন ১০তম গ্রেডে (মূল বেতন ১৬ হাজার টাকা)। সহকারী শিক্ষকরা এই বৈষম্য নিরসনে প্রধান শিক্ষকদের এক ধাপ নিতে ১১তম গ্রেডে (১২ হাজার ৫০০) বেতন চান।
শিক্ষকরা জানান, এ বৈষম্য নিরসন করতে আমরা নানা কর্মসূচি পালন করেছি। এরপর অনশন কর্মসূচি দিয়েছি।সরকারকে একাধিকবার সময়ও দিয়েছি। কিন্তু আমাদের দাবি-দাওয়ার প্রতি কর্ণপাত করা হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা অনশন শুরু করেছি। শিক্ষকরা হুমকি দিয়ে বলেন, আমাদের দাবি না মানলে বার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ বন্ধ ও বই বিতরণ বন্ধ থাকবে।
আরকে// এআর
আরও পড়ুন