অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে নিম্নমানের লাচ্ছা সেমাই
প্রকাশিত : ১২:২৮, ১৮ এপ্রিল ২০২৩
ঈদ সামনে রেখে মানহীন সেমাই তৈরি করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। অনুমোদনহীন অসংখ্য কারখানায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে নিম্নমানের লাচ্ছা সেমাই। এসব সেমাই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, বলছেন চিকিৎসকরা।
ঈদ উপলক্ষে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অনুমোদনহীন সেমাই কারখানা। পোকাযুক্ত ময়দা, কৃত্রিম রং, মানহীন ডালডা আর পোড়া পাম তেলে তৈরি হচ্ছে লাচ্ছা সেমাই। কোথাও কোথাও ব্যবহার করা হচ্ছে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর কেমিক্যাল।
নীলফামারীর সেমাই তৈরির কয়েকটি কারখানার। এসব কারখানায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে তথাকথিত ঘিয়ে ভাজা সুস্বাদু লাচ্ছা সেমাই।
শ্রমিকরা জানান, যেখানে ময়দার বস্তা সেখানে পোকা আর পোকা।
ঠাকুরগাঁও সদর, বালিয়াডাঙ্গী, রাণীশংকৈল ও পীরগঞ্জের বিভিন্নস্থানে তৈরি হচ্ছে নিম্নমানের সেমাই। শ্রমিকদের বিশেষ পোশাক ও গ্লাভস ব্যবহারের কথা থাকলেও তা দেখা যায়নি কোথাও।
ঠাকুরগাঁও কারখানার শ্রমিকরা বলেন, মেশিনে করে হাত দিয়ে বানায়। ঘরে হাতের মধ্যে টানাটানি করে তৈরি করা হচ্ছে। গরমের কারণে গ্লাভস পড়ে কাজ করা যাচ্ছেনা।
প্রোপাইটার জানান, আমার এখানে কোথাও কোনো ময়লা নেই।
এধরনের মানহীন সেমাই স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলছেন চিকিৎসকরা।
ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. রকিবুল আলম চয়ন বলেন, “পেট খারাপ, ডায়ারিয়া, কলেমরা- এই জনিত রোগগুলো হতে পারে। আবার কিছু আছে লিভার, কিডনি থেকে শুরু করে অন্যান্য অঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।”
সিভিল সার্জন ডা. মো. হাসিবুর রহমান বলেন, “গ্যাস্ট্রিক আলসার, পায়খানায় সমস্যা হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদী ক্ষেত্রে ক্যান্সার হতে পারে।”
এদিকে, খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
নীলফামারী ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শামসুল আলম বলেন, “আমরা সরেজমিনে গিয়ে তদারকি করে অপরাধগুলো ধরা হচ্ছে এবং তাদেরকে সংশোধন হওয়ার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। সাথে সাথে আইনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই তৈরির প্রমাণ পেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস প্রশাসনের।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোহাম্মদ সামসুজ্জামান বলেন, “কেউ যদি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এবং ক্ষতিকর সামগ্রী ব্যবহার করে সেমাই তৈরি করে তাহলে আমরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।”
জনসচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি কর্তৃপক্ষকে আরও কঠোর হওয়ার দাবি সাধারণ ভোক্তাদের।
এএইচ
আরও পড়ুন