ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

‘অ্যা ব্রোকেন ড্রীম’, বিচারপতি সিনহার বক্তব্য ও একটি বিশ্লেষণ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:৩০, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১০:৪৮, ১০ অক্টোবর ২০১৮

বিচারপতি এস কে সিনহা সাহেব সম্প্রতি তার লেখা ‘অ্যা ব্রোকেন ড্রীম` বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘তার বইতে প্রচুর বানান ভুল, এমনকি বইয়ের ইনডেক্স লেখারও সুযোগ পাননি তিনি সময় স্বল্পতার কারণে’।

এ বিষয়ে আমি বলি, নির্বাচনের আগে বইটি বের করে বিচার বিভাগ সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে নির্বাচন বানচালের অনেক তাড়াহুড়ো ছিল সিনহা সাহেবদের। সিনহা সাহেব একই অনুষ্ঠানে আরো বলেছেন- `বই প্রকাশের জন্য তিনি কোনো ইনভেস্টর খুঁজে পাননি। যারা পরবর্তীতে ইনভেস্ট করেছে তারা নিজেদের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক।`

প্রকৃত সত্য হচ্ছে, যারা ইনভেস্ট করেছে তারা বিএনপি-জামায়াত পরিবারের সদস্য। নাম প্রকাশ করলে থলের বিড়াল বের হয়ে আসবে। একই অনুষ্ঠানে উপস্থিত অ্যাম্বাসেডর ` দ্য ব্রোকেন ড্রিম` সম্পর্কে বলেছেন- `আমি তার বইয়ের প্রথম দুই-তিন পৃষ্ঠা পড়েছি। সেখানে দেখলাম সিনহা সাহেব লিখেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় হিন্দু হওয়ার কারণে পালিয়ে বেড়াতেন`।

কিন্তু সিনহা সাহেব যেটি লিখেননি সেটা হলো তিনি (সিনহা সাহেব) স্বঘোষিত শান্তি কমিটির সদস্য। নিশ্চয়ই তিনি ওই সময় মুক্তি বাহিনীর ভয়েই পালিয়ে বেড়াতেন। এসকে সিনহা সাহেব আরো বলেছেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের একটি অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক তাকে বলেছেন, `আপনার জজ সাহেবরা মন্ত্রাণালয়ের ফোনে প্রভাবিত হন।`

তখন সিনহা সাহেব সরাসরি প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। আমার প্রশ্ন, বিচার বিভাগ যদি তখন স্বাধীন হয় তাহলে এখন কেন বিচার বিভাগকে বিতর্কিত করার জন্য এই দ্বিমুখিতা?

এসকে সিনহা সাহেব দাবি করছেন, `২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন অবৈধ। ১৫৩ জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতাই নির্বাচিত।`

তিনি কী জানেন না, প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়! সবচেয়ে বড় কথা, আর সংসদ যদি অবৈধ হয় তাহলে তিনিও তো অবৈধ। তিনি তখন কেন প্রতিবাদ করেননি?

সিনহা সাহেব বলেছেন- আই হেট পলিটিক্স। অথচ তার দেশ ত্যাগের মুহূর্তে হাজার খানেক সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

তাদের তিনি আরো জানিয়েছেন, তিনি ( সিনহা) দেশে ফিরে আসবেন। এইরকম আরো কিছু কথা দিয়ে তার যে ইউনুসের মত রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ রয়েছে তা প্রমাণ করেছেন।

এসকে সিনহা সাহেব পরিশেষে বাংলাদেশের বিষয়ে পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এসকে সিনহা সাহেবকে বলি, একটি স্বাধীন দেশের উপর আরেকটি দেশ হস্তক্ষেপ করলে সে দেশের স্বাধীনতা যে খর্ব হয় সে বিষয়ে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রশ্নে বিতর্কের জন্ম দেওয়া আপনি কী জানেন না?

লেখক: সাবেক সহ সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় কমিটি।

আ আ/ এআর


** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।
Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি