অ্যাজমা থেকে বাঁচতে ১৫ সতর্কতা
প্রকাশিত : ২০:২৯, ২৪ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ২৩:৫৪, ২৪ এপ্রিল ২০১৮
ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা বা হাঁপানী মূলত শ্বাসনালীর অসুখ। কোনো কারণে যদি শ্বাসনালীগুলো অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হয়ে পড়ে তবে শ্বাসনালীর উদ্দীপনার ফলে তাতে স্প্যাজম শুরু হয়। ফলে ফুসফুসে বাতাস প্রবেশ করতে ও বের হতে বাধা পায়। এ কারণেই রোগীর নিঃশ্বাসের কষ্ট ও কাশি হয় বুকের মধ্যে সাঁই সাঁই শব্দ করে।
সঠিক পরিসংখ্যাণ না থাকলেও কমপক্ষে শতকরা পাঁচজন মানুষ আমাদের দেশে হাঁপানীতে ভুগছেন। এদের অধিকাংশই হচ্ছে শিশু ও কিশোর।
কিছুটা বংশগত হলেও ধুলো, ধোঁয়া, ধূমপান, ফুলের রেণু, স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় হাঁপানী বেশি হয়। এছাড়াও বাড়িতে পোষা কুকুর, বিড়াল বা পাখি থেকেও অ্যাজমা হতে পারে। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা অ্যাজমাকে মনোদৈহিক রোগ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন, কেননা টেনশন বা দুশ্চিন্তা এ রোগের প্রকোপ অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
অ্যাজমা রোগীর করণীয়
অ্যাজমা রোগটি সম্পর্কে সঠিক ধারণা অর্জন করুন।
বাড়িতে কুকুর, বিড়াল বা কোনো পাখি পোষা যাবে না।
ঘর সব সময় খোলামেলা রাখুন যেন পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচল করতে পারে। অপ্রয়োজনীয় আসবাবপত্র সরিয়ে ফেলুন। ঘরের দরজা-জানালায় ভারি পর্দা টাঙাবেন না।
বিছানা ও কাপড়-চোপড় সপ্তাহে এক দিন রোদে দিন।
যেসব জিনিস থেকে ধুলো ওড়ে সেগুলো নাড়াচাড়া করবেন না। চাল, গম ঝাড়া বাছা বা আসবাবপত্র, বিছানা, লেপ, কম্বল, তোষক ইত্যাদি ঝাড়ার সময় অন্য ঘরে অবস্থান করুন।
মশলা ভাজার গন্ধ, ট্যালকম পাউডার ও পারফিউম যেন নাকের মধ্যে প্রবেশ না করে।
ধুলো, ধোঁয়া, ঠাণ্ডা বা কুয়াশা লাগাবেন না। রাস্তায় প্রয়োজনে মাস্ক বা রুমাল ব্যবহার করুন।
ফ্রিজের খাবার ও ঠাণ্ডা পানি বা কোমল পানীয় খাবেন না।
গরম থেকে ঘেমে এসে এসি রুমে ঢুকবেন না বা সঙ্গে সঙ্গে গোসল করবেন না।
শীতকালে ঠাণ্ডা পানিতে গোসল না করে তাতে কিছুটা গরম পানি মিশিয়ে স্বাভাবিক করে গোসল করুন।
শীতকালে প্রতিদিন ১ বার পানি ফুটিয়ে বাস্প মুখ দিয়ে টেনে নাক দিয়ে ছাড়–ন।
নিয়মিত ধ্যান বা মেডিটেশন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও নিরাময়ে সহায়তা করবে। প্রতিদিন দু‘বেলা মেডিটেশনে অ্যাজমা থেকে নিরাময়ের কল্পনা করুন।
প্রতিদিন নিয়ম করে হালকা ব্যায়াম করুন। বেশি ব্যায়ামে অ্যাজমার টান উঠতে পারে। হাঁটা, সাঁতার কাটা বা সাইকেল চালানো যেতে পারে।
নিয়মিত দমচর্চা ও একনাসা প্রাণায়াম করুন। সুযোগ পেলেই বুক ফুলিয়ে দম নিন। প্রানায়াম ও কিছু যোগ ব্যায়াম অ্যাজমার ঘন ঘন আক্রমন কমিয়ে আনে।
প্রতিদিন ১ চামুচ মধু, ১ চামুচ কালোজিরা ও ১ চামুচ চ্যবণপ্রাশ নিয়মিত খান। এগুলো ভেতর থেকে আপনার রোগ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করবে।
শীতকালে অ্যাজমা জনিত সমস্যা বেশি দেখা দেয়। আর তাই উপরোক্ত সতর্কতার পাশপাশি শীতের শুরুতে প্রতিদিন মধ্যম সাইজের অর্ধেক জাম্বুরা খাওয়ার অভ্যেস করুন। এরপরেও যদি শ্বাসকষ্ট অনুভূত হয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ সেবন করুন।
এসএইচ/