অ্যাটম বোমাও মারতে পারেনি যে গাছ
প্রকাশিত : ১৮:০৭, ১০ আগস্ট ২০১৭ | আপডেট: ১৯:৫০, ১০ আগস্ট ২০১৭
১৯৪৫ সালের আগস্টে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে অ্যাটম বোমা বিস্ফোরণে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তার পরিমাণ বিশ্বের কারও অজানা নেই। বিস্ফোরিত স্থানে জীবিত প্রাণির অস্তিত্ব খুবই কম ছিল। তবে বিস্ফোরণের পর সেখানে একই প্রজাতির ছয়টি গাছ বেঁচে ছিল। গাছের নাম জিংগো বা জিংকো বা জিংগো বাইলোবা।
অ্যাটম বোমার আঘাতের পরও বেঁচে যাওয়া সেই গাছগুলোর একটির বংশধরকে ২০১৩ সালের ৬ আগস্ট জেনেভার রেডক্রসের প্রধান কার্যালয়ের চত্বরে হিরোশিমা দিবস উপলক্ষে রোপণ করা হয়। গাছটি যে গাছের বংশধর, সেই জীবিত গাছটির বয়স এখন ২০০ বছর।
জিংগো বাইলোবার (Gingko Biloba) আরেক নাম মেইডেন হেয়ার। এ গাছের আদি নিবাস হলো চীনে। এছাড়া জাপান ও কোরিয়ায় এ গাছ বিপুলভাবে লাগানো হয়। চীনে এই বিভাগের গাছের ফসিল পাওয়া গেছে ২৭০ মিলিয়ন বছর আগের। উচ্চতায় এ গাছ ১৬০ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। শিকড় অনেক নিচে থাকায় ঝড়, বাতাস, বরফে ক্ষতি হয় না।
পাতার রং সারা বছর সবুজ থাকে। তবে বসন্তকালে দু-তিন সপ্তাহ নিজেকে হলুদ রঙে সাজায় গাছটি। এ গাছের কাঠে কখনোই পোকামাকড় আক্রমণ করে না।
এই প্রজাতির ১ হাজার ৫০০ বছরের পুরোনো গাছও রয়েছে। জাপানের মানুষ টেম্পল হিসেবে শ্রদ্ধা করে পুরোনো এই গাছগুলোকে। এটা টোকিওর অফিশিয়াল গাছ আর গাছের পাতা টোকিওর প্রতীক।
বিস্ফোরণের পর হিরোশিমায় বেঁচে যাওয়া ছয়টি গাছকে বিশেষভাবে জাপানি সংকেতে চিহ্নিত করা হয়। এ গাছের পাতার নির্যাস ব্যবহারের গবেষণা চলছে। ডিমেনশিয়া, আলঝেইমারস রোগের চিকিৎসায় এ গাছের ব্যবহারের গবেষণায় ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে।
পনেরো শতকে চীনে প্রথম ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হলেও জার্মানিতে রেজিষ্ট্রার্ড ওষুধ হিসেবে ১৯৬৫ সাল থেকে ব্যবহৃত হচ্ছে এ গাছের নির্যাস। এ গাছের বীজের ভেতরের বাদামজাতীয় অংশ চীনে বিয়ে এবং নববর্ষের অনুষ্ঠানে ট্র্যাডিশনাল খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অ্যালার্জিসহ অন্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে এ গাছের। বনসাই হিসেবেও এ গাছ বেশ জনপ্রিয়।
চীনের বিজ্ঞানীরা এ গাছের জেনোম প্রকাশ করেছে। এ গাছের রয়েছে অসাধারণ বিশালাকার জেনোম, ১০ দশমিক ৬ বিলিয়ন নিউক্লিওবেজ।
আর/ডব্লিউএন
আরও পড়ুন