আল জাজিরার প্রতিবেদন
আওয়ামী লীগ কী রাজনীতিতে ফিরতে পারবে?
প্রকাশিত : ১০:৪৮, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫ | আপডেট: ১১:০৪, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পাঁচ মাস অতিবাহিত হয়েছে। তবে বর্তমানে আওয়ামী লীগ একটি গভীর রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, দলের ভেতরে কোন্দল বৃদ্ধি পেয়েছে। দলটির স্থানীয় নেতাকর্মীরা হিসাব চাচ্ছেন, কী কারণে আওয়ামী লীগের এই পরিস্থিতি হলো। তবে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা তাদের কৃতকর্মের ভুল স্বীকার করতে রাজী নয়। আর মনগড়া বক্তব্যে তারা তাদের ভবিষ্যত রাজনীতির পথ নির্ধারিত করতে চাইছে।
গতকাল সোমবার (২৭ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বাংলাদেশের অন্যতম পুরাতন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের বর্তমান ও ভবিষ্যত রাজনীতির পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
আল জাজিরা জানায়, আওয়ামী লীগে বর্তমানে গত ১৫ বছরের সুবিধাভোগীদের সঙ্গে দলে নিপীড়িত নেতাকর্মীদের মধ্যে দুরত্ব তৈরি হয়েছে। এই বিভাজন এবং অস্থিরতা দলের দীর্ঘকালীন রাজনীতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
আল জাজিরা তাদের প্রতিবেদন একটি প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে, দলটির ভবিষ্যৎ কী হবে?
অনলাইন আল জাজিরায় প্রকাশিত ‘আফটার দ্য ব্লাডশেড: ক্যান বাংলাদেশ’জ আওয়ামী লীগ রিসারেক্ট ইটসেল্ফ?’ শীর্ষক প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যখন ২০২৪ সালের ১৬ই জুলাই ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে রংপুরে নিহত হন আবু সাঈদ, তখনো আওয়ামী লীগের অনেক নেতা ঠাণ্ডা মেজাজে আরাম করছিলেন। তাদের কাউকে কাউকে তার অফিসে কোনো স্থানীয় কবি কবিতা পাঠ করে শোনাচ্ছিলেন। আবৃত্তি শেষে তিনি বলে ওঠেন- ‘ওয়ান্ডারফুল’। এর কিছু সময় পরে আবু সাঈদ হত্যার তথ্য কোনো এক সহযোগী একজন নেতাকে জানান। কিন্তু তিনি তা উড়িয়ে দেন। বলেন- ওহ, কিছুই হবে না। নেতা (হাসিনা) সব কিছু ঠিক করে ফেলবেন। এর মধ্যদিয়েই প্রকাশ পেয়ে যায় ওই সময় আওয়ামী লীগের উপরিমহলের মনোভাব। অর্থাৎ মাঠপর্যায়ে কি হচ্ছে, তা তারা মোটেও আমলে নেননি। এর তিন সপ্তাহেরও কম সময় পরে কর্তৃত্ববাদ ও নৃশংসতা চালানোর অভিযোগে শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করে ছাত্রদের নেতৃত্বে গণ-অভ্যুত্থান।
আইনপ্রয়োগকারীদের হামলায় বিক্ষোভকারী এবং পথচারীদের কমপক্ষে ৮৩৪ জন প্রাণ হারান। এই বিক্ষোভ শুরু হয় ১লা জুলাই। ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে যাওয়ার মধ্যদিয়ে তার ইতি ঘটে। তবে হামলায় আহত হন কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষ। তার মধ্যে আছেন শিশু ও নারী।
তবে দলটির এই পরিণতির জন্য দায় এড়িয়ে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা।
অজ্ঞাত স্থান থেকে গত ১৬ই জানুয়ারি আল জাজিরাকে ফোনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। এটা শিগগিরই প্রমাণ হবে। তবে তিনি কাকে বা কোন দেশকে দায়ী করছেন সুনির্দিষ্টভাবে তা বলেননি।
আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন মন্তব্যকে তাদের নেতৃত্বের ব্যর্থতা এবং জনগণের অভিযোগগুলো সমাধানে তাদের অক্ষমতার প্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা।
তারা জানান, এ কারণে আওয়ামী লীগ জনগণের সেন্টিমেন্ট হারিয়েছে। শুধু জনগণই নয়, তারা নিজ দলে কর্মীদের আস্থাও হারিয়েছেন।
খুলনায় ছাত্রলীগের স্থানীয় সিনিয়র একজন নেতা বলেন- যখন টেলিভিশনে শেখ হাসিনার পলায়নের দৃশ্য সম্প্রচার হচ্ছিল, তখনো কিছু নেতাকর্মীকে নিয়ে আমি খুলনার রাজপথে অবস্থান করছিলাম। আমি আমাদের একজন সিনিয়র নেতা, স্থানীয় এমপিকে ফোন করার চেষ্টা করলাম। কিন্তু তার ফোন ছিল বন্ধ। ঠিক ওই মুহূর্তে আমার মনে হলো আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও জনানো হয়, সারাদেশের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে তাদেরকে (আওয়ামী লীগক) পরিত্যাগ করার একই রকম অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন। বহু নেতাকর্মী রয়েছেন নীরব।
খুলনার এক সময়ের ছাত্রলীগের প্রভাবশালী একজন নেতা নিরাপদে আশ্রয় নেয়ার ভয়ার্ত সফরের বর্ণনা করেন। ভুয়া একটি পরিচয়ে তিনি ঢাকায় পৌঁছান। তার আগে তিনি পালিয়ে চলে আসেন গোপালগঞ্জে। তিনি বলেন- ‘আমার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট, ফোন নম্বর সহ সবকিছু পাল্টে ফেলেছি। বেঁচে থাকার জন্য একটি ছোট্ট ব্যবসা শুরু করেছি। দল আমাদেরকে পরিত্যগ করেছে। আর কখনো রাজনীতিতে ফিরবো না’।
কৃষক লীগের সহকারী সম্পাদক সামিউল বশির আলজাজিরাকে জানিয়েছেন, প্রতিশ্রুতিবদ্ধ (কমিটেড) নেতাকর্মীকে বছরের পর বছর একপেশে করে রাখা হয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে সুযোগ সন্ধানীরা এবং স্থানীয় এমপিদের পরিবারের সদস্যরা তৃণমূল পর্যায়ে দলীয় কাঠামোতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। এর ফলে বিপর্যয়ের সৃষ্টি করেছে।
বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগে গণতান্ত্রিক রীতির চর্চার অভাব দলকে বিশৃঙ্খল অবস্থায় ফেলেছে। গত এক দশক ধরে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় আওয়ামী লীগের সব তৃণমূল পর্যায়ের ইউনিট ও এর সঙ্গে সম্পৃক্ত সংগঠনগুলো পরিচালিত হচ্ছে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে। এক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন না করে একই পুরনো সদস্যদের ওপর নির্ভর করা হয়েছে।
জুলাই অভ্যুত্থানের বিষয়ে আওয়ামী লীগ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চায়নি অথবা আন্দোলন চলাকালে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হস্তে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তা স্বীকার করে কোনো বিবৃতি দেয়নি। এর পরিবর্তে দলটি বার বার এই আন্দোলনকে অস্বীকার করছে। গত ১০ জানুয়ারি যুবলীগে একটি বিবৃতিতে এ আন্দোলনকে ‘সন্ত্রাসীদের অভ্যুত্থান’ হিসেবে বর্ণনা করছে।
তারা অভিযোগ করেছে, এই আন্দোলনে এমন সব শক্তি আছে, যারা দেশকে পাকিস্তানি আদর্শের দিকে নিয়ে যেতে চায়। প্রায় এক ঘণ্টা আল জাজিরার সঙ্গে কথা বলেছেন আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম। বার বার তিনি অভিযোগ করেন কোটা বিরোধী আন্দোলনের নামে ছাত্রদেরকে ‘বিভ্রান্ত’ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র বিষয়ক সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির।
বাংলাদেশে সরকারি কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বৈষম্যমূলকভাবে কোটা ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালে বাংলাদেশে ছাত্ররা শুরু করেন কোটা বিরোধী আন্দোলন। কিন্তু তাদের ওপর সরকারের ক্রমবর্ধমান নিষ্পেষণ এবং ব্যাপক রক্তপাতের পর শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াতকে নিয়ে বিতর্ক আছে। তারা ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল। সদ্য বিদায়ী আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সময়ে জামায়াতে ইসলামীর ৫ জন এবং বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র একজন সিনিয়র নেতাকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ফাঁসি দিয়েছে।
হাসিনা সরকারের সময়ে বিএনপি এবং জামায়াত- উভয়েই ভয়াবহ দমনপীড়নের শিকারে পরিণত হয়। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাপকভাবে জোরপূর্বক গুম এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড।
বাহাউদ্দিন নাসিম স্বীকার করেন, তার দল কৌশলগত ভুল পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে তিনি ব্যর্থতার জন্য প্রথমেই দায়ী করেন গোয়েন্দাদের ব্যর্থতাকে।
এদিকে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে সম্প্রতি দেয়া এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও ১১ বছর ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘ইসলামপন্থি সন্ত্রাসী এবং সেনাবাহিনী’র ‘যৌথ অভ্যুত্থানে’র শিকারে পরিণত হয়েছে আওয়ামী লীগ।
তবে দলের ভেতর জবাবদিহিতার অভাব থাকাকে কড়া সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের ছেলে ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। তিনি বলেন, অবিচার, নিষ্পেষণ, দুর্নীতি, কোটি কোটি টাকা লুট ও পাচারের কারণে বাংলাদেশের জনগণের কাছে অবশ্যই ক্ষমা চাইতে হবে আওয়ামী লীগকে।
এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, এখনো আমি তাদেরকে দেখিনি আত্মোপলব্ধি, আত্মসমালোচনা অথবা দোষ স্বীকার করতে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রফেসর ও বিশ্লেষক আল মাসুদ হাসানুজ্জামান যুক্তি দেন যে, দলটির কঠোর অবস্থান এবং সিদ্ধান্ত জনগণকে ক্ষুব্ধ হতে উৎসাহিত করেছে। এর মধ্যদিয়ে গণ-অভ্যুত্থানকে সফল হওয়ার পথ করে দেয়া হয়েছে। ধর্মীয় পদক্ষেপগুলো শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তায় আঘাত করেছে, যার ফলে একক দাবিতে পরিণত হয় তার পদত্যাগ।
নির্বাসনে থাকা বা সেখান থেকে ফিরে আসার মতো পরিস্থিতির সঙ্গে অপরিচিত নন হাসিনা। তার পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ও পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যকে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট হত্যা করা হয়। এরপর বেশ কয়েক বছর তিনি ভারতে অবস্থান করেন। তারপর ১৯৮১ সালে ফিরে আসেন বাংলাদেশে। দলকে পুনর্গঠন করে ক্ষমতায় আসতে তার সময় লেগেছে ২১ বছর।
হাসানুজ্জামান বলেন, এবার ছিল ভিন্ন পরিস্থিতি। ছাত্রদের নেতৃত্বে রক্তাক্ত গণ-অভ্যুত্থানের মুখে পড়ে আওয়ামী লীগ। এতে নেত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি যুক্তি দেন- মারাত্মক ইমেজ ও নেতৃত্ব সংকটের মুখে আওয়ামী লীগ। তার ভাষায়- শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে দলটি পুনর্গঠিত করা হবে চ্যালেঞ্জিং। দলের ভেতরে বিভক্তি দেখা দিতে পারে।
বাংলাদেশে বড় দু’টি রাজনৈতিক শক্তি হলো বিএনপি ও জামায়াত। তারা উভয়েই বলেছে- জুলাই ও আগস্টে নাগরিকদের হত্যাকাণ্ডে জড়িত আওয়ামী লীগের নেতা ও কর্মীরা বিচারের মুখোমুখি হোন- এটা তারা চায়। তার ওপর তারা আরও যুক্তি দিয়েছে যে, আওয়ামী লীগের ভাগ্য কি হবে সে সিদ্ধান্ত নেবেন দেশবাসী।
শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন যেসব ছাত্ররা তারা আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আপসহীন অবস্থান নিয়েছেন।
২৫শে জানুয়ারি এক র্যালিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা এবং ছাত্র আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ নেতা মাহফুজ আলম বলেছেন, আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেয়া হবে না আওয়ামী লীগকে। তিনি আরও বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য হলো হত্যাকাণ্ড, গুম ও ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত সবার বিচার নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে আমরা সংস্কার বাস্তবায়ন করবো; নিশ্চিত করবো বাংলাদেশপন্থি সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন।
আওয়ামী লীগের দৃষ্টিকোণ থেকে নির্বাচন হতে পারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আল মাসুদ হাসানুজ্জামান বলেন, যদি আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে, তাহলে দলটির পা রাখার জন্য একটি জায়গা সৃষ্টি হবে। তবু নেতৃত্ব, সংগঠন ও তৃণমূল পর্যায়ে গণসংযোগের মাধ্যমে জনআস্থা পুনর্গঠন ছাড়া আওয়ামী লীগের জন্য রাজনীতিতে পুনরুজ্জীবন লাভ করা হবে অত্যন্ত জটিল।
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও প্রফেসর আলী রীয়াজ আওয়ামী লীগের প্রত্যাবর্তনের কোনো সুযোগের জন্য চারটি শর্ত উদ্ঘাটন করেছেন। তা হলো- ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকার সময়ে যেসব অপরাধ করেছে, বিশেষ করে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের সময়, তার জন্য দ্ব্যর্থহীনভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। তাদেরকে বর্তমান আদর্শ পরিত্যাগ করতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে যে, শেখ হাসিনার পরিবারের কোনো সদস্য এই দলে নেতৃত্ব দিতে পারবেন না। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সহ যেসব জঘন্য অপরাধ করেছে তারা- তার জন্য বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। তিনি আল জাজিরাকে বলেন, শেখ হাসিনা সহ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় নৃশংসতার জন্য সরাসরি দায়ীদেরকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। যখন এসব শর্ত পূরণ হবে, শুধু তখনই তাদের প্রত্যাবর্তনের বিষয় আলোচনা করা যেতে পারে।
শেখ হাসিনার পরিবারের ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে গোপনে মাঝেমধ্যে নেতাকর্মীরা সমালোচনা করলেও এখনো শেখ হাসিনার ওপর আস্থা আছে অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর। বিদেশে অবস্থানরত সিনিয়র নেতারা ব্যবহার করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং টকশো। তার মধ্যদিয়ে তারা নেতাকর্মীদের পুনর্গঠিত করার চেষ্টা করছেন। তাদেরকে বলছেন, ড. ইউনূস নেতৃত্বাধীন সরকার ব্যর্থ হতে যাচ্ছে। কিন্তু দলীয় নেতাকর্মীদেরকে তা খাওয়ানো কঠিন বিষয়। তারা কমেন্ট সেকশনে এসব দলীয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে নেতারা এবং দলের জুনিয়র নেতারা এ বক্তব্যকে পেছনে ঠেলে দিচ্ছেন। তারা বলছেন, বিদেশে অভয়ারণ্যে থেকে নির্বাসিত নেতাদের পক্ষে এসব কথা বলা সহজ। নেতারা এসব কথা বলছেন, যখন সারা বাংলাদেশে মাঠপর্যায়ের নেতারা বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন অথবা আত্মগোপনে আছেন। খুলনার ওই সাবেক ছাত্রনেতার মতো বহু নেতাকর্মী প্রকাশ্যে তাদের পরিচয় প্রকাশ করতে খুব বেশি ভয় পায়। এমন অবস্থায় আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন অনেক দূরের পথ।
এসএস//
আরও পড়ুন