ঢাকা, শুক্রবার   ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আগস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ৪৭৬ জনের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:১৩, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি জানিয়েছে, গত আগস্ট মাসে সারাদেশে ৪৬৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৭৬ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৯৮৫ জন। 

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, আগস্টে রেলপথে ১০টি দুর্ঘটনায় আটজনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন দুইজন। অন্যদিকে ১৩টি নৌ দুর্ঘটনায় ৫০ জন প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন দুইজন ও নিখোঁজ আছেন নয়জন।

আজ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগস্ট মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে এবং সবচেয়ে কম হয়েছে বরিশাল বিভাগে। ঢাকায় ১১৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১২১ জন নিহত ও ২৬১ জন আহত এবং বরিশালে ২৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬ জন নিহত ও ৯৩ জন আহত হয়েছেন।

এসব দুর্ঘটনার ৪১ দশমিক ৫৪ শতাংশ গাড়িচাপা, ৩৩ দশমিক ১৯ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২২ দশমিক ০৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, দুই দশমিক ৫৬ শতাংশ বিবিধ কারণে, শূন্য দশমিক ৪২ শতাংশ ট্রেন ও যানবাহন সংঘর্ষ এবং চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে শূন্য দশমিক ২১ শতাংশ।

মোট দুর্ঘটনার ৩৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ হয়েছে জাতীয় মহাসড়কে, ২০ দশমিক ৭৭ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে এবং ৩৯ দশমিক ১৮ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে, আগস্ট মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণসমূহ:

১. দেশের সড়ক-মহাসড়কে ট্র্যাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশের অনুপস্থিতি সুযোগে আইন লঙ্ঘন করে যানবাহনের অবাধ চলাচল
২. জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় এবং অতি বৃষ্টির কারণে সড়কের মাঝে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় এসব গর্তের কারণে যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি বেড়েছে।
৩. জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টার্নিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালকের এসব সড়কে দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে।
৪. মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্র্যাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা।
৫. উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন।
৬. অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালক অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানো।

দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কিছু সুপারিশ করেছে সংগঠনটি:

১. জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের মতো ছোট ছোট যানবাহন আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা।
২. জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা।
৩. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস প্রদান।
৪. ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা।
৫. সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা।
৬. মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা, রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা।
৭. সড়ক পরিবহন আইন যথাযথভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা।
৮. উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওর্য়াক গড়ে তোলা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
৯. মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা।
১০. মেয়াদোর্ত্তীন গণপরিবহন ও দীর্ঘদিন যাবৎ ফিটনেসহীন যানবাহন স্ক্র্যাপ করার উদ্যোগ নেওয়া।
১১. বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক-মহাসড়ক দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করা।

এসএস//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি