আনন্দ উদ্দীপনায় উদযাপিত ঈদুল ফিতর
প্রকাশিত : ১৪:৪৯, ৩১ মার্চ ২০২৫ | আপডেট: ০৮:৫৮, ১ এপ্রিল ২০২৫

সারাদেশের মুসলমানরা যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য এবং বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপন করেছেন পবিত্র ঈদুল ফিতর। এক মাস রোজা রাখার পর আজ ঈদের জামাতে অংশ নিয়ে মুসল্লিরা ঈদ উদযাপন শুরু করেন। এই উৎসব ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাইকে এক কাতারে দাঁড় করিয়ে সাম্যের নিদর্শন স্থাপন করে।
রাজধানীর হাইকোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় আয়োজিত এই জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক। জামাতে অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, কূটনীতিকসহ সর্বস্তরের মানুষ।
দেশবাসীকে ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এক ভিডিও বার্তায় তিনি শান্তিপূর্ণ ঈদ উদযাপনের আহ্বান জানান এবং আত্মীয়-স্বজনের কবর জিয়ারত ও দরিদ্র পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘ঈদ শুধু আনন্দ নয়, এটি আত্মত্যাগ ও সহমর্মিতার প্রতীক।’
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান। শোভাযাত্রায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠ থেকে ঈদ আনন্দ মিছিল বের হয়। সকাল ৯টায় শুরু হওয়া মিছিলটি সংসদ ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। ঐতিহ্যবাহী এই মিছিলের সামনে শাহী ঘোড়া, ঘোড়ার গাড়ি এবং সুলতানি-মোঘল আমলের ইতিহাস সম্বলিত ব্যানার ছিল। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ এতে অংশ নিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেন।
সংসদ ভবনের সামনে ঈদ মিছিল শেষে একটি সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এতে শিল্পীরা ঈদের গান পরিবেশন করেন, বাউল শিল্পীদের পরিবেশনা ছিল বিশেষ আকর্ষণ। উপস্থিত সাধারণ মানুষদের আপ্যায়নের জন্য সেমাই, মিষ্টি ও বাতাসার ব্যবস্থা ছিল।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত দুই দিনব্যাপী ঈদ আনন্দমেলা বাংলাদেশ চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে। এতে ২০০টিরও বেশি স্টল থাকবে, যেখানে বিভিন্ন পণ্য উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা প্রদর্শন করবেন। শিশুদের জন্য নাগরদোলা ও খেলাধুলার আয়োজন থাকছে।
ঈদুল ফিতর শুধুমাত্র ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি সামাজিক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ। মাহে রমজানের শেষে এই উৎসব ধনী-গরিবের ব্যবধান কমিয়ে দেয়, একে অপরের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার শিক্ষা দেয়। আনন্দের এ দিনে সবার মধ্যে সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্ববোধ তৈরি হয়, যা সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সহায়ক।
এমবি//
আরও পড়ুন