ঢাকা, মঙ্গলবার   ২২ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

আনন্দময়ীর আগমনে

বিপুল কুমার সরকার

প্রকাশিত : ১২:৫৮, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

‘শ্বেত শতদলবাসিনী নয় আজ
রক্তম্বরধারিণী মা
ধ্বংসের বুকে হাসুক মা তোর
সৃষ্টির নব পূর্ণিমা ।।’

তারুণ্য ও যৌবন শক্তির উজ্জ্বল প্রতিভূ কবি কাজী নজরুল ইসলাম নবীণ মন্ত্রে জননী দশভূজার উদ্বোধনের ও নব জগত সৃষ্টির সংকল্প নিয়েছিলেন তার লেখনীতে।

দুর্গা পূজা বৈদিক, পৌরাণিক, আনুষ্ঠানিক, সামাজিক সকল ভাবের সমন্বয়। আমাদের এ ভূমিতে দুর্গাপূজা শান্তি ও সৌহার্দ্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। সমাজে বসবাসকারী মানুষ সে যে ধর্মেরই হোক না কেন- হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ বা খ্রিষ্টান তাদের অন্তরের সংকীর্ণতাকে দূরীভূত করে সর্বজনীন সুধী সমাজ হিসাবে প্রকাশ পায় এ পূজায়। দুর্গা মন্ডপে পূর্জাচনা পরিদর্শনে আসা ভিন্ন দেশ কিংবা ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষদের বাঙালি কর্তৃক যে অর্ন্তস্পর্শ আপ্যায়ণ পায়, তা তাদের মাঝে হৃদয়বান বাংলাদেশকে নতুন করে ভাবতে শেখায়।

অন্যদিকে দুর্গাপূজা বাংলা সংস্কৃতিতে নারীর ভূমিকাকে এক অনন্য মহীমায় উদ্ভাসিত করেছে। মহিষাসুর বধের মাধ্যমে নারী শক্তির সুপ্ত সম্ভাবনার উন্মেষ ঘটেছে। নারী যেমন মাতৃরুপে সৃষ্টির প্রতীক তেমনি দুর্গারূপে সকল অপশক্তি বিনাশের এক চিরন্তন প্রতীক।

বর্তমান প্রজন্মে সর্বজনীন দুর্গাপূজাগুলি ক্ষমতাশালী ব্যক্তি ও ব্যক্তিবর্গের  নিজ নিজ প্রভাব প্রতিপত্তি দেখানোর এক মাধ্যম হিসেবে পূজাকে অপেক্ষাকৃত অধিক জাকঁজমকপূর্ণ করার এক অশুভ প্রতিযোগীতায়  লিপ্ত হতে দেখা যাচ্ছে। যা মায়ের আরাধনার মূল মন্ত্র থেকে যোজন যোজন দূরে অবস্থান নিচ্ছে।

তবে সকল নেতিবাচকতার ভিড়ে আজও সর্বজনীন দুর্গাপূজা বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে যে বিভেদ তা দূরীভূত করতে ভূমিকা রাখে। আজকের দিনে পূজানুষ্ঠনের যে আয়োজন , তার যে প্রস্তুতি, বিভিন্ন প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির যে যোগান ব্যবস্থা, তা ঘিরে নিয়োজিত থাকেন বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী অসংখ্য মানুষ। এভাবেই ধর্মানুষ্ঠানাদি বিভিন্ন ধর্মের মানুষকে পরস্পর নির্ভরশীল করে পাশাপাশি নিয়ে এসে এ জগৎ সংসারকে এখনো বসবাসের উপযোগী করে রেখেছে, রেখেছে অধিকাংশ মানুষকে মানুষ করে।

লেখক : সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা। সংস্কৃতিকর্মী।

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি