আনারসের যতগুণ
প্রকাশিত : ১৯:৪৯, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ২২:০৫, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭
আনারস ব্রোমেলিয়েসী বর্গের অন্তর্ভুক্ত একটি উদ্ভিদ। এক সময় শুধুমাত্র হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে এর চাষ হতো। যদিও বর্তমানে পৃথিবীর বহু দেশেই বহুল পরিমাণে এর চাষ হয়ে থাকে। আনারস শুধু যে খেতেই সুস্বাদু একটি ফল, তা কিন্তু নয়। আনারস মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
পাশাপাশি হজম শক্তি বাড়ায়, হাড় শক্ত করে, প্রদাহ জনিত সমস্যা দূর করে। সাধারণত মার্চ থেকে জুনের মধ্যে আনারসের চাষ করা হয়। ফল হিসেবে আনারসের জনপ্রিয়তা কম নেই। প্রচুর পুষ্টিগুণেও সমৃদ্ধ। আনারসের আরও কিছু উপকারিতা জেনে নিন
বাতের সমস্যা কমায়: শুধু বাতের ব্যাথার কারণে যারা প্রতিদিন অত্যন্ত শারীরিক যন্ত্রণা এবং কষ্টের মধ্যে অতিবাহিত করেন, বাতের ব্যাথায় মাংসপেশি এবং হাঁটু, কনুই ফুলে যায়। এর ফলে দৈনন্দিন জীবন খুবই সমস্যায় পড়েন। আনারসের মধ্যে এক ধরণের প্রোটিওলাইটিক উৎসেচক থাকে, যা ব্রোমেলিন নামে পরিচিত। এই ব্রোমেলিনই আমাদের শরীরে বাতের সমস্যা রোধ করতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় : একটি গোটা আনারস আমাদের শরীরে দৈনিক ভিটামিন সি বা অ্যাসকরবিক অ্যাসিড-এর চাহিদার ১৩০ শতাংশ পূরণ করতে পারে। ভিটামিন সি শ্বেত রক্ত কনিকার ক্ষমতা বাড়িয়ে জীবাণু প্রতিরোধ করে। একইসঙ্গে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবেও কাজ। সুস্থ কোষের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে আমাদের ক্যান্সারের হাত থেকে রক্ষা করে এই ফলটি।
কোষের স্বাস্থ্য বজায় রাখে: আনারস খেলে শরীরের ভিতর প্রচুর পরিমাণে কোলাজেন তৈরি হয়। এই কোলাজেন কোষের কর্মক্ষমতা বাড়াতে দারুন কাজ করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে: আনারসের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ, বিটা-ক্যারোটিন, ব্রোমেলিন ও ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে। যা আপনার মুখ, গলা এবং স্তন ক্যান্সারের প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
পেটের সমস্যায়: আনারস খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, ডাইরিয়াসহ পেটের নানাবিধ সমস্যা কমে। পাশাপাশি অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস (ধমনীতে রক্ত সঞ্চালনে প্রতিবন্ধকতা), রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া, এমনকি উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগের চিকিৎসাতেও আনারস ম্যাজিকের মতো কাজ করে। এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায়, এটি খাবার হজম করতে এবং বর্জ্য পদার্থ শরীর থেকে বের করে দেয়। এছাড়াও ডাইরিয়া আক্রান্তদের ক্ষেত্রেও দারুণ কাজ করে আনারস। রক্তনালীতে জমে যাওয়া কোলেস্টেরল দূর করে। এর ফলে সুস্থ থাকে আমাদের হৃদযন্ত্রও।
সর্দি কাশিতেও উপকারী : ব্রোমেলিন নামে একটি উপাদান রয়েছে আনারসের মধ্যে, যা বুকে সর্দি জমতে দেয় না। একইসঙ্গে সাইনাসের সমস্যাও রোধ করে।
হাড়ের যত্নে আনারস : আনারসে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ খুব বেশি না থাকলেও, ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে, যা আমাদের হাড়ের যত্নে দারুণ কাজ দেয়। প্রসঙ্গত, ম্যাঙ্গানিজ হাড়ের ক্ষয়রোধ করতে সাহায্য করে।
দাঁতের যত্নে আনারস : এই ফলটি মাড়ি এবং দাঁতের গোঁড়া শক্ত করতে সাহায্য করে। এছাড়াও, আনারস চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা মেটাতে, মাংসপেশি শক্ত করতে, এমনকি ত্বক টানটান রাখতেও দারুণ কাজে দেয়।
দৃষ্টিশক্তির উন্নতি : আনারসে উপস্থিত বিটা-ক্যারোটিন দৃষ্টিশক্তির উন্নতিতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন চেষ্টা করুন সবুজ শাক সবজি এবং প্রচুর পরিমাণে ফল খেতে। যাতে পরিমিত হারে বিটা ক্যারোটিন শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে : আনারসে থাকা পটাশিয়াম রক্ত সঞ্চালন এবং রক্তনালীর স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও পটাশিয়াম রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না বলে রক্তনালীতে প্রতিবন্ধকতার আশঙ্কা কমে যায়। ফলে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের আশঙ্কা কমে।
আর/ডব্লিউএন