ঢাকা, রবিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙচুরের খবর

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:৫৯, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

রাজধানীর ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে শেখ হাসিনার পৈতৃক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।

বিবিসি, রয়টার্স, দ্য গার্ডিয়ান, টিআরটি ওয়ার্ল্ড, আরব নিউজ, এবিসি নিউজ, আনাদোলু এজেন্সি, সিএনএন, এপিসহ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে উঠে এসেছে ৩২ নম্বর ভাঙচুরের খবর।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাতে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার অনলাইনে ভাষণ দেওয়াকে কেন্দ্র করে পুরো দেশে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর রাস্তায় বেরিয়ে আসেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। তারা ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুর এবং ধানমণ্ডি ৫ নম্বরে শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনে আগুন দেন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে ভারতে অবস্থান নেওয়া স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার ভাষণ দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয় দেশের ছাত্র-জনতাসহ তরুণ প্রজন্ম। ফলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত শেখ মুজিবুর রহমানের ৩২ নম্বর বাড়ি ভাঙার উদ্যোগ নেন তারা।

সেই খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসিতে প্রকাশিত সংবাদের শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পারিবারিক বাড়িতে প্রতিবাদকারীদের আগুন’। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে প্রতিবাদকারীরা ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পারিবারিক বাড়ি এবং তার দলের অন্যান্য সদস্যদের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। ভারত থেকে হাসিনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দেবেন, এ খবর ছড়িয়ে পড়লে অস্থিরতা শুরু হয়। গত বছর ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শেখ হাসিনা দেশ থেকে বিতাড়িত হন। ৭৭ বছর বয়সী হাসিনা ২০ বছর বাংলাদেশ শাসন করেছেন। তাকে একজন স্বৈরশাসক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি সরকারে থাকাকালে জনসাধারণের বাকস্বাধীনতা হরণে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা গণমাধ্যম সিএনএন তাদের শিরোনাম করেছে, ‘বাংলাদেশের বিক্ষোভকারীরা নির্বাসিত সাবেক নেত্রী শেখ হাসিনার বাড়ি ধ্বংস করেছে।’ এরপর তাদের প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, প্রতিবেশী ভারতে নির্বাসিত থেকে দলের সমর্থকদের উদ্দেশে হাসিনার একটি বক্তৃতা দেওয়াকে কেন্দ্র করে এই হামলার সূত্রপাত। ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহে ১৫ বছরের শাসন শেষে পালিয়ে যান তিনি। তার বিরুদ্ধে ভিন্নমত দমন করার অভিযোগ রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বার্তা সংস্থা এপি আজ বৃহস্পতিবার সকালে ‘ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পারিবারিক বাড়ি ধ্বংস করল বাংলাদেশের বিক্ষুব্ধরা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, শেখ হাসিনার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে তার পারিবারিক বাড়ি ধ্বংস করল হাজারো বিক্ষুব্ধ জনতা। বাড়িটি একসময় দেশটির স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে গণ্য হতো। কিন্তু এখন আন্দোলনকারীরা মনে করছে, বাড়িটি শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন স্বৈরশাসনের প্রতিচ্ছবি। প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে সমর্থকদের উদ্দেশে হাসিনার ভাষণ দেওয়াকে কেন্দ্র করে এই হামলার সূত্রপাত ঘটে।

ব্রিটিশ খ্যাতনামা গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান তার শিরোনাম করেছে, ‘বাংলাদেশি বিক্ষোভকারীরা স্বাধীনতার প্রতীক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর পারিবারিক বাড়ি ধ্বংস করেছে’। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, এই বাড়িটি থেকেই শেখ হাসিনার বাবা পাকিস্তান ভাঙনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে পরবর্তীতে কর্তৃত্ববাদের সাথে যোগসূত্র থাকার কারণে তার বাড়িতে আক্রমণ করা হয়।

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক খ্যাতনামা গণমাধ্যম রয়টার্স তাদের প্রতিবেদনের শিরোনাম করেছে, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাবার বাড়ি উচ্ছেদ করেছে বিক্ষোভকারীরা’। সংবাদ মাধ্যমটি তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সমর্থকদের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি জ্বালাময়ী বক্তৃতা দেন। যে কারণে এই হামলার সূত্রপাত।

তুরস্কের অন্যতম গণমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড তাদের শিরোনাম করেছে, ‘ভারতে থেকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ বাংলাদেশে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছে’।  

তুরস্কের গণমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি তাদের প্রতিবেদনের শিরোনামে লিখেছে, ‘ভারত থেকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লাইভ ভাষণ বাংলাদেশে প্রতিবাদের সূত্রপাত করেছে’। তারা তাদের প্রতিবেদনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের কোড করে লিখেছে, বিদ্যমান দলগুলো ‘দেশের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পড়তে ব্যর্থ হয়েছে’।

যুক্তরাষ্ট্রের এবিসি নিউজ তাদের শিরোনাম করেছে, ‘বাংলাদেশি বিক্ষোভকারীরা নির্বাসিত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জড়িত একটি বাড়িতে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে।’ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের হাজার হাজার বিক্ষোভকারী নির্বাসিত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তার পরিবারের বাড়ি ধ্বংস করে। যা দেশের স্বাধীনতার প্রতীক হয়ে এসেছিল। তবে বিক্ষোভকারীদের দাবি, কর্তৃত্ববাদের সূত্রপাত হয়েছিল এই বাড়িটিতেই।

সৌদি আরবের অন্যতম গণমাধ্যম আরব নিউজ তাদের শিরোনাম করেছে, ‘বাংলাদেশি বিক্ষোভকারীরা নির্বাসিত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে যুক্ত একটি বাড়িতে তাণ্ডব ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে’।

এ ছাড়া ভারত ও পাকিস্তানের গণমাধ্যমগুলোসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিষয়টি ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি