আবু সাঈদ হত্যায় অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্য গ্রেফতার
প্রকাশিত : ২০:০২, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত বেরোবি শিক্ষার্থী আবু সাইদ হত্যা মামলা প্রধান আসামী এএসআই আমীর আলী ও কনষ্টবল সুজন চন্দ্র রায়কে রংপুর পিবিআই গ্রেফতার করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর পিবিআই পুলিশ সুপার জাকির হোসেন। তাকে বর্তমানে পিবিআই কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। সেই সাথে জিজ্ঞাসাবাদও চলছে বলে পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। তবে কোথা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, গত বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেটের সামনে সাইদকে সরাসরি গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় সাইদ পুলিশকে উদ্দেশ্যে করে বলেন গুলি করলে কর। এ কথা বলে তার দুইহাত প্রসারিত করে একাই দাঁড়িয়ে ছিলেন। এ সময় পুলিশের সহকারী কমিশনার আরিফুজ্জামান ও আল ইমরান সাইদকে গুলি করার নির্দ্দেশ দেন। এরপরেই পুলিশের এস আই আমীর আলী ও কন্সটবল সুজন চন্দ্র রায় সাইদকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষন করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সাইদকে উদ্ধার করে প্রথমে রিকশায় পরে অটোতে করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
এদিকে বেরোবি শিক্ষার্থী আর কোটাবিরোধী আন্দোলননের অন্যতম সমন্ময়ক সাইদের দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকা আর পুলিশের গুলি বর্ষনের ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সারা দেশ ও পুরো বিশ্বে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। কোটাবিরোধী আন্দোলনের তিনি প্রথম শহীদ। তার মৃত্যুর পর আন্দোলন চুড়ান্ত রুপ লাভ করে। ৫ আগষ্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গভবন ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান।
এদিকে আবু সাইদ হত্যার ঘটনায় তার বড়ভাই রমজান আলী বাদী হয়ে গত ১৮ আগষ্ট রংপুরে অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটান ম্যাজিষ্ট্রেট রাজু আহাম্মেদের আদালতে এএস আই আমীর আলীকে এক নম্বর এবং কন্সটবল সুজন চন্দ্র রায়কে ২ নম্বর আসামী করে ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করে। মামলার অন্যান্য আ্সামীরা হলেন পুলিশের সাবেক আ্ইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, রংপুর রেজ্ঞের ডিআইজি আব্দুল বাতেন, রংপুর মেট্রোপলিটান পুলিশের সাবেক কমিশনার মনিরুজ্জামান, দুই সহকারী পুলিশ কমিশনার আরিফ হোসেন, আল ইমরান হোসেন, মেট্রোপলিটান পুলিশের তাজহাট থানার ওসি রবিউল ইসলাম এস আই বিভুতি ভুষন রায় বেরোবি ছাত্র লীগের সভাপতি পমেল বড়ুয়া সাধারণ সম্পাদক শামীম সহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
এছাড়াও অজ্ঞাত আরও ৩০/৩৫ জনের কথা উল্লেখ করা হয়। মামলাটি বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে মেট্রোপলিটান তাজহাট থানার ওসিকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করে আদালতকে জানাতে বলা হয়। এরপর মামলাটি রেকর্ড করে আদালতে জানানো হলে আদালত মামলাটি তদন্ত করার জন্য পিবিআই রংপুরকে আদেশ দেন।
এদিকে মামলার নথি পেয়ে অতি সম্প্রতি রংপুর পিবিআইয়ের পক্ষ থেকে মামলাটি তদন্ত কোন কর্মকর্তার মাধ্যমে তদন্ত করা হবে নির্দেশনা চেয়ে আদালতে আবেদন করা হলে আদালত পিবিআই পুলিশ সুপার জাকির হোসেনকে মামলাটি তদন্ত করার নির্দ্দেশ দেন।
এদিকে দুই আসামী পুলিশ সদস্য এএসআই আমীর আলী ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে গ্রেফতার করার ব্যাপারে রংপুর পিবিআই পুলিশ সুপার জাকির হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান দুই আসামী তারা রংপুর পিবিআই গ্রেফতার করেছে বলে জানান।
কেআই//
আরও পড়ুন