ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

আমি সব সময় আনন্দ খুঁজি: আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:৫৭, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ২১:১৩, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এক বক্তৃতায় বলেন, আমাদের পাশের বাড়িতে একজন কন্ট্রাক্টর এলেন। কন্ট্রাক্টরের অনেক টাকা। তার স্ত্রীর হাতের কবজি থেকে শুরু করে কনুই পর্যন্ত গহনা। আমাদের এখানে আসার পরে কন্ট্রাক্টরের স্ত্রী কাজকর্ম শেষ করে দুপুর বেলা আমাদের বাড়িতে এলেন। আমার স্ত্রীর সঙ্গে একটু পরিচিত হওয়ার জন্য।এসেই বল্লেন, আভা কেমন আছেন? সে আবার আপা বলতে পারেন না। তো আমার স্ত্রী বল্লেন যে ভালো আছি, আপনি কেমন আছেন? উনি তখন হাত ঘুরিয়ে এদিক সেদিক করে বল্লেন এই আরকি আছি আরকি। এই সবের মধ্য দিয়ে জীবন গেছে। তবে আনন্দ যায়নি। কত যে বন্ধ। কত যে আড্ডা। কত যে গল্প। কত যে কাজ। কত রকম আনন্দ। মানে আনন্দে আনন্দে আমার জীবন একদম ভরে আছে।

একদিন আব্দুল মান্নান সৈয়দ আমার একটা ইন্টারভিউ নিয়েছিল। ও  হচ্ছে নৈরাশ্যবাদী আমি হচ্ছি আশাবাদী। সে শুধু নৈরাশ্যের দিকে টানতে চায়। আমি বল্লাম যে মান্নান এই যে আমি জন্মেছি এই পৃথিবীতে মানুষ হয়ে। এ রকম একটা নীল আকাশ দেখছি। এতো সন্দর একটা ফুল ফোটা পৃথিবী দেখছি। আমি তো অবিশ্বাস্য অসাধারণ জীবনের মধ্যে এসে গেছি। আমি তো নাও আসতে পারতাম। আমি তো একটা ব্যাঙ হয়ে জন্মাতে পারতাম। কেচো হয়ে জন্মে যেতে পারতাম। তাহলে কি দুর্ভাগ্যই না হতো। অথবা হয়তো জন্মাতামই না। সেখানে আমার জীবনের এই যে জন্ম। এর জন্যই তো আমাদের পাগল হয়ে যাওয়া উচিৎ। আমাদের প্রত্যেকের মারা যাওয়া উচিৎ। আত্ম হত্যা করা উচিৎ। যে এই রকম জীব আমরা কি করে পেলাম।

একটা জিনিসের জন্যে আজ আমার দুঃখ। রবীন্দ্রনাথের সারা জীবনে কোন বন্ধু ছিল না। ওনার বন্ধু ছিল লেখা, ওনার বন্ধু ছিল গান, ওনার বন্ধু ছিল ছবি। পাগলের মতো। এক জায়গাতে উনি লিখেছেন- ঘরে লাগাইয়া খিল-স্বর্গে মর্তে খুঁজিতেছি মিল। পাগলের মতো কাজ করেছেন। কিন্তু আমি জানতাম না। আমি দেখেছি যে আমার মধ্যে কোথায় যেন একটু আলসেমি আছে। কোথায় যেন একটু আরাম। কোথায় যেন একটু  আড্ডা। কোথায় যেন একটু গল্প। কোথায় যেন একটু মানুষের মুখ। কোথায় যেন একটু আনন্দ। মানুষের মুখের অট্টহাঁসি না শুনলে আমার ভালো লাগে না। মানুষের মুখ না দেখলে আমার ভালো লাগে না।

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ৭৯তম জন্মদিনের অনুষ্ঠান। জন্মদিনে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মী ও ভক্ত-অনুরাগীরা। তাদের উদ্দেশ্যে দেওয়া আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের হুবহু বক্তব্যের কিছু অংশ পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা হয়।

অনুলেখক-রিজাউল করিম

আরকে//এসএইচ/


** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।
Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি