ঢাকা, মঙ্গলবার   ২২ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

আরাফা দিবসের রোজার ফজিলত

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৪৭, ৯ আগস্ট ২০১৯

Ekushey Television Ltd.

জিলহজ্জ মাসের নয় তারিখকে ‘আউমে আরাফা’ অর্থাৎ আরাফা দিবস বলা হয়। এই দিনে হাজীরা মিনা থেকে আরাফার ময়দানে জমায়েত হোন। এ সময় তাদের মুখে উচ্চারিত হতে থাকে তালবিয়াহ। আর তামাম মুসলিমদের জন্য এই দিনটি অত্যন্ত ফজলিতপূর্ণ।

আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম দিবস হলো আরাফা দিবস। আল্লাহ তাআলা আরাফা দিবসে তাঁর বান্দাদেরকে সবচেয়ে বেশি জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ)বলেছেন, এমন কোনো দিবস নেই যেখানে আল্লাহ তাআলা আরাফা দিবস থেকে বেশি বান্দাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন এবং আল্লাহ নিশ্চয়ই নিকটবর্তী হন ও তাদেরকে নিয়ে ফেরেশতাদের সঙ্গে গর্ব করেন বলেন-ওরা কী চায়?

অন্য এক হাদিসে এসেছে, আল্লাহ তাআলা আরাফায় অবস্থানরতদেরকে নিয়ে আকাশবাসীদের সঙ্গে গর্ব করেন। তিনি বলেন, আমার বান্দাদের দিকে তাকিয়ে দেখো, তারা আমার কাছে এসেছে এলোথেলো ও ধুলায় আবৃত অবস্থায়।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আরাফার ময়দানে সূর্যাস্তের পূর্বে বেলালকে (রাঃ) নির্দেশ দিলেন মানুষদেরকে চুপ করাতে। বেলাল বললেন: আপনারা রাসূলুল্লাহ (রাঃ) এর জন্য নীরবতা অবলম্বন করুন। জনতা নীরব হল। রাসূলুল্লাহ (সাঃ)বললেন, হে লোকসকল! একটু পূর্বে জিবরাইল আমার কাছে এসেছেন। তিনি আমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আহলে আরাফা ও আহলে মুযদালেফার জন্য আমার কাছে সালাম পৌঁছিয়েছেন ও তাদের অন্যায়ের জিম্মাদারি নিয়েছেন।

 ওমর দাঁড়িয়ে বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সাঃ)! এটা কি শুধুই আমাদের জন্য? রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, এটা তোমাদের জন্য ও তোমাদের পর কেয়ামত পর্যন্ত যারা এখানে আসবে তাদের জন্য। ওমর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর অনুকম্পা অঢেল ও উত্তম।

আরাফা দিবস মুসলমানদের ওপর আল্লাহর দ্বীন ও নেয়ামত পরিপূর্ণতা প্রাপ্তির দিবস। তারিক ইবনে শিহাব থেকে বুখারির এক বর্ণনায় এসেছে, ইহুদিরা ওমর (সাঃ)কে বলল: আপনারা একটি আয়াত পড়েন, যদি তা আমাদের ওপর নাযিল হতো তাহলে এ দিবসে আমরা উৎসব পালন করতাম।

ওমর (রাঃ) বললেন, আমি অবশ্যই জানি কী উদ্দেশ্যে ও কোথায় তা নাযিল হয়েছে এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কোথায় ছিলেন যখন তা নাযিল হল। তা ছিল আরাফা দিবস। আর আমার আল্লাহর কসম- আরাফার ময়দানে। 

আরাফা দিবসের রোজার এতো ফজিলত যা বান্দার পূর্বের এক বছর ও পরের এক বছরের গুণাহের কাফফারা হয়ে যায়। তবে এ রোজা হাজিদের জন্য নয় বরং যারা হজ করতে আসেনি তাদের জন্য। হাজিদের জন্য আরাফার দিবসে রোজা রাখা মাকরুহ। 

রাসূলুল্লাহ (সাঃ)বিদায় হজ্জের সময় আরাফা দিবসে রোজা রাখেননি। বরং সবার সম্মুখে তিনি দুধ পান করেছেন। ইকরামা থেকে এক বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেন, আমি আবু হুরায়রা (রাঃ) এর বাড়িতে প্রবেশ করে আরাফা দিবসে আরাফার ময়দানে থাকা অবস্থায় রোজা রাখার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ)আরাফার ময়দানে আরাফা দিবসের রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন।

উল্লেখিত বর্ণনায় এটি স্পষ্ট হয় যে, যারা হজের উদ্দেশ্যে আরাফার ময়দানে থাকবেন তাদের এদের দিনে রোজা রাখা মাকরূহ। আর যারা হজে যেতে পারেননি তাদের সবার জন্য ৯ জিলহজের দিনে রোজা অনেক ফজিলতপূর্ণ।

যদিও অনেকেই ফজিলতপূর্ণ জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন রোজা রাখেন।  আজ জিলহজ মাসের ৮ তারিখ যারা এসব দিনগুলোর রোজা রাখতে পারেননি তাদের সূবর্ণ সুযোগ বা শেষ সুযোগ রয়েছে ৯ জিলহজের রোজা রাখার। তাই রাতেই রোজার নিয়তে সেহরি খেয়ে রোজা রেখে ফজিলতপূর্ণ  দিনের অংশীদার হয়ে থাকুন।

এএইচ/
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি