ইউএস ট্রেড শো: দুই দেশের অর্থনৈতিক মেলবন্ধন
প্রকাশিত : ০০:১৪, ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০
তিন দিন ব্যাপী ইউএস ট্রেড শো-২০২০ এর দ্বিতীয় দিনে মুখর রয়েছে মেরা প্রাঙ্গন। শো’র দ্বিতীয় দিন শুক্রবারও বিকেলে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের আনাগোনা দেখা যায়। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র-অর্থনৈতিক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে এ আয়োজন করা হয়েছে।
রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে ২৭ তম বার্ষিক ইউএস ট্রেড শোতে বাংলাদেশে কর্মরত যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো অংশ গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি থাকছে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা, যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা, বেসরকারিখাতের কার্যক্রম এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক বিষয়ক সেমিনার।
বাংলাদেশে সক্রিয় ৪৮টি প্রতিষ্ঠান ৭৮টি স্টলে তাদের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করছে। পাশাপাশি শো’র দ্বিতীয় দিনে আজ শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা, যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়ন, বেসরকারি খাতে যুক্ত হওয়া এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক লক্ষ্য সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘ইউএস ট্রেড শো’ চলবে আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে এই শো। প্রবেশ ফি ৩০ টাকা। তবে শিক্ষার্থীরা ইউনিফর্ম পরে অথবা পরিচয়পত্র দেখিয়ে বিনামূল্যে প্রবেশ করতে পারবেন।
ঢাকার মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) ওয়াগনার বৃহস্পতিবার উদ্বোধন করেন। এতে বাংলাদেশে ব্যবসারত জ্বালানি, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এবং খাদ্য ও পানীয়সহ বিভিন্ন খাতের ৪৮টি প্রদর্শক ১শটির বেশি আমেরিকান পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করছে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও বাংলাদেশ ক্রমবর্ধমান কৌশলগত গুরুত্বের দেশ। আর তাই যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য প্রতিশ্রুতিশীল সুযোগ সৃষ্টি করছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে বাংলাদেশে সফলভাবে কাজ করছে এবং এই সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। বৈচিত্র্যময় খাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সুযোগ সৃষ্টি করছে। যার মধ্যে আছে প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধান, বিদ্যুৎ উৎপাদন, আর্থিক সেবা, অবকাঠামো, কৃষিবাণিজ্য, তথ্যপ্রযুক্তি, কনসাল্টিং সেবা, বেসামরিক বিমান চলাচলসহ নানাবিধ খাত।
সূত্র মতে, বাংলাদেশের মোট বাণিজ্যের ৯ শতাংশের বেশি হয় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে। গত অর্থবছরে এই বাণিজ্যের আকার ছিল ৯ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসও বাংলাদেশে পণ্য ও সেবা রপ্তানি এবং এখানে বিনিয়োগের সুযোগ তৈরিতে কাজ করছে। আর এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছরই বাংলাদেশে ইউএস ট্রেড শো’র আয়োজন করছে। আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স (অ্যামচেম) এবং বাংলাদেশে মার্কিন দূতাবাস এর যৌথ উদ্যোগে ১৯৯২ সাল থেকে এই ট্রেড শো শুরু হয়।
দশ বছরের কন্যা শিশুকে নিয়ে এ আয়োজনে এসেছেন কাইউম আহমেদ। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘পুরোটাই ঘুরলাম। অনেক কিছু জানলাম। কিছু কিছু বিষয়ের প্রতি আগ্রহও জন্মেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাদের সেবার কথা তুলে ধরছে এখানে। এখানে যক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি বাংলাদেশী কিছু প্রতিষ্ঠানও আছে।’
শুক্রবার বিকেলে ট্রেড শো ঘুরে দেখা যায়, আমদানিকারক ও সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বিভিন্ন পণ্য ও সেবা ক্রেতা-দর্শনার্থীদের কাছে তুলে ধরার পাশাপাশি বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করছে। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বিভিন্ন খাদ্যপণ্য নিয়ে ‘ট্রেড শো’তে অংশ নিয়েছে ইউএস ফুড মার্ট। এখানে অন্যান্য স্টলের চেয়ে একটু বেশি ভীড়। ছিল বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানের স্টল। সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল ইউএস অ্যাম্বাসির স্টল। এখানে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশুনা ও ভিসার বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
২৯ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা ইউএসএআইডির আয়োজনে ‘বাংলাদেশে বেসরকারি খাতের সুযোগসমূহ’ বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া বিকেল ৫টায় যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কর্মকর্তা এবং বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা ‘যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক দর্শন’ নিয়ে আলোচনা করবেন। যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ডিএসসি ড্রেজ এবং বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ডিপ ডিগার্সের মধ্যে বিক্রয় চুক্তি সইয়ের মধ্য দিয়ে ট্রেড শোর পর্দা নামবে।
এমএস/এসি
আরও পড়ুন