ইউক্রেন যুদ্ধ: মুনাফা লুটছে পশ্চিমারা
প্রকাশিত : ১৬:২২, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | আপডেট: ১৭:২৮, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বিশ্ববাসীর কাঁধে জ্বালানির বাড়তি দামের বোঝা চাপলেও মুনাফা লুটছে পশ্চিমা জ্বালানি কোম্পানিগুলো। তেল-গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ার সুযোগ নিয়ে ২০২২ সালে ইতিহাসের সর্বোচ্চ মুনাফা করেছে এসব কোম্পানি।
গত বছর ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর বিশ্বের জ্বালানি তেলের বাজারে টালমাটাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেও এর পুরো ফায়দা ঘরে তুলেছে বিশ্বের জ্বালানি জায়ান্ট হিসেবে পরিচিত পশ্চিমা তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলো।
যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে তেলের চাহিদা ও দাম বেড়ে যাওয়ায় শুধু গত বছরই ২২ হাজার কোটি ডলারের বেশি মুনাফা করেছে এক্সন মবিল, শেল ও ব্রিটিশ পেট্রোলিয়ামের মতো পশ্চিমা জ্বালানি কোম্পানি।
যখন জ্বালানি তেলের সংকটে পশ্চিমা বিশ্বের জনগণ ধুঁকছে, ঠিক তখন তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলোর এ নির্লজ্জ মুনাফা প্রবৃত্তিতে চটেছেন স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত সপ্তাহে নিজের স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে এসব কোম্পানির সমালোচনা করে বাইডেন বলেন, মুনাফার অর্থ এসব কোম্পানি উৎপাদন বাড়ানোর জন্য বিনিয়োগ না করে কর্মকর্তাদের বেতন-বোনাসের পেছনে খরচ করেছে।
গত বছর ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরপরই আকাশচুম্বী হয় তেলের দাম। এক পর্যায়ে দাম উঠে যায় প্রতি ব্যারেল ১৩৯ ডলারে। কয়েক গুণ বৃদ্ধি পায় প্রাকৃতিক গ্যাস ও এলপিজির দামও। এরপর প্রায় বছরজুড়েই বজায় থাকে জ্বালানির এ উচ্চ মূল্যের ধারা।
২০২২ সালে সবচেয়ে বেশি প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি ডলার মুনাফা করেছে মার্কিন তেল গ্যাস জায়ান্ট এক্সন মবিল, যা সার্বিকভাবে পশ্চিমা বিশ্বের যে কোনো জ্বালানি কোম্পানির মুনাফার ইতিহাসে একটি রেকর্ড।
শুধু এক্সন মবিলই নয়, এ মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাজ্যভিত্তিক তেল ও গ্যাস প্রতিষ্ঠান শেল ২০২২ সালে রেকর্ড বার্ষিক ৩৯.৯ বিলিয়ন ডলার মুনাফার কথা জানায়। এছাড়া রেকর্ড মুনাফা করেছে টোটাল এনার্জিস, শেভরন ও ব্রিটিশ পেট্রোলিয়াম।
আরেক আমেরিকান এনার্জি প্রতিষ্ঠান শেভরন গত বছর ৩৬.৫ বিলিয়ন মুনাফা করার কথা জানিয়েছে। এদিকে সম্প্রতি এনার্জি জায়ান্ট বিপি ১১৪ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মুনাফা করার ঘোষণা দিয়েছে। ২০২২ সালে রেকর্ড ২৭.৭ বিলিয়ন ডলার মুনাফা করেছে সংস্থাটি।
সব মিলিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের শীর্ষ জ্বালানি কোম্পানিগুলো ২০২২ সালে মুনাফা করেছে ২২ হাজার ১০০ কোটি মার্কিন ডলার। অথচ এ বছরই সবচেয়ে বেশি দামে জ্বালানি কিনতে হয়েছে পৃথিবীর প্রায় সব মানুষকে।
অস্বাভাবিক এ মুনাফা আবারও এসব পশ্চিমা জ্বালানি কোম্পানিগুলোকে সমালোচনার মুখে দাঁড় করিয়েছে। কোম্পানিগুলোর অতিরিক্ত মুনাফার ওপর আরও বেশি কর আরোপের দাবি উঠছে। তাই বিশ্বের দরিদ্র মানুষের দুর্দশাকে পুঁজি করে এ কোম্পানিগুলো মুনাফা করছে উল্লেখ করে তাদের ওপর বিপুল কর আরোপের জন্য বিশ্বের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও।
এমএম/
আরও পড়ুন