ইউরোপে তাপপ্রবাহে মৃত্যুহার বাড়বে ৫০ ভাগ

জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত তাপপ্রবাহে ইউরোপে ২০৭১ থেকে ২১০০ সালের মধ্যে বাৎসরিক মৃত্যুর হার ৫০ ভাগ বেড়ে ১ লাখ ৫২ হাজার জনে ঠেকবে। এসব ক্ষতিকর প্রভাবের ৯৯ শতাংশই তাপপ্রবাহের কারণে ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হতে পারে দক্ষিণ ইউরোপ।

‘দ্য ল্যানসেট প্লানেটারি হেলথ’ সাময়িকীতে এ সংক্রান্ত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ওই সময়ে ইউরোপে প্রতি তিনজনের মধ্যে দু’জন বিপর্যয়ের শিকার হবে। বর্তমানে এই হার ২০ জনে একজন। এসময় উপকূলীয় এলাকার বন্যা ভয়াবহভাবে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কার কথাও জানানো হয়েছে গবেষণায়।

ইউরোপের ২৮টি দেশকে নিয়ে এই গবেষণা করা হয়েছে। এতে ১৯৮১ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ-সংশ্লিষ্ট তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে।  

গবেষকদের আশঙ্কা, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর ব্যবস্থা ও চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া প্রভাব ঠেকানোর ব্যবস্থা না করা হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে।

ইতালিতে ইউরোপিয়ান কমিশনের জয়েন্ট রিসার্চ সেন্টারের উদ্যোগে গবেষকেরা তাপপ্রবাহ, শৈত্যপ্রবাহ, খরা, দাবানল, উপকূলীয় এলাকায় বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় বিশ্লেষণ করে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।

গবেষক জিওভান্নি ফরজিয়েরি বলেন, একুশ শতকে মানবস্বাস্থ্যের জন্য অন্যতম বড় হুমকি জলবায়ু পরিবর্তন। যদি বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া না যায়, তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়তে থাকবে। এই শতকের শেষ নাগাদ বার্ষিক ভিত্তিতে ৩৫ কোটি ইউরোপীয়ের উপর ক্ষতিকর আবহাওয়ার প্রভাব পড়বে।

এই গবেষণার খবর এমন সময় এলো যখন প্যারিসের জলবায়ু অঙ্গীকার ত্যাগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি বছরের জুন মাসে হোয়াইট হাউজে দেয়া এক ঘোষণায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাম প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন। দুই মাসের মধ্যে তার প্রশাসন এবার চিঠি দিয়ে জাতিসংঘকে চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানিয়ে এ সংক্রান্ত পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে।

আর/ডব্লিউএন