ইটিভির প্রতিষ্ঠাতা এএস মাহমুদের মৃত্যুবাষির্কী আজ (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১১:১৬, ২২ জানুয়ারি ২০২৪ | আপডেট: ১৫:২৮, ২২ জানুয়ারি ২০২৪
একুশে টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এ এস মাহমুদ-এর ২০তম মৃত্যুবাষির্কী আজ। ১৯৩৩ সালের ১০ জুলাই সিলেটের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন স্বপ্নবাজ-মুক্তমনা মানুষটি। আর ২০০৪ সালের ২২ জানুয়ারি ইংল্যান্ডে মারা যান বাংলাদেশের আধুনিক গণমাধ্যমের পথিকৃৎ এ এস মাহমুদ।
এ এস মাহমুদ, দেশের প্রতি ছিল গভীর মমত্ব বোধ। বিশ্বাস করতেন, সোনার বাংলাদেশ গড়তে উন্মুক্ত করতে হবে তথ্যের অবাধ প্রবাহকে।
মাধ্যম সেটা পত্রিকা হোক কিংবা সম্প্রচার। একেবারে অন্তর থেকে বাংলাদেশকে লালন করতেন বলেই থেমে থাকেননি।
২০০০ সালে দেশের প্রথম বেসরকারি মালিকানায় টেরিস্ট্রেরিয়াল টেলিভিশন চ্যানেল চালু করেন। নিরন্তর ছুটে চলার স্পৃহা আর স্বপ্ন, বিশ্বাস ও কাজের সৃদৃঢ় সমন্বয়ের সফল মানুষ এ এস মাহমুদ।
“পরিবর্তনে অঙ্গীকারাবদ্ধ” স্লোগানকে বাস্তবে রূপ দিয়েছিলেন সংবাদ ও বিনোদনে নতুনত্ব এনে। স্বদেশি অনুভূতির মালা গেঁথে বাংলাদেশের ভেতরটাকে দেখাতে চেয়েছিলেন বিশ্বকে। মানুষের রুচি, অভ্যাস আর জনজীবনে ছাপ ফেলে একুশে টেলিভিশন।
সকল স্তরের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা, বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করে একুশের সংবাদ। পঁচাত্তরের পর উল্টো পথে চলা বাংলাদেশকে, একাত্তরের চেতনার সংস্কৃতিতে ফেরাতে বিপ্লবের বীজ এই গণমাধ্যম।
এ এস মাহমুদের ছেলে ও ইটিভি’র প্রতিষ্ঠাতা ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরহাদ মাহমুদ বলেন, “আমি মনে করি, আমার বাবা এএস মাহমুদের যে সময় জন্ম হয়েছিল সেই সময় সমসাময়িকদের চেয়ে তিনি অনেক বেশি ভাবতেন।”
সামজিক দায়বদ্ধতাকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন এ এস মাহমুদ। তথ্যবুভুক্ষ মানুষের ভরসা স্থল হয়ে উঠে একুশে টেলিভিশন। এটা ঠিক পছন্দ করেনি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। আইনী অজুহাতে ২০০২ সালের ২৯ আগস্ট একুশে টেলিভিশনকে বন্ধ করে দেয় তারা।
ফরহাদ মাহমুদ বলেন, “একুশের উদ্দেশ্য ছিল- বার্তা ও শিক্ষা দেয়া হবে। একুশে টিভি কাদের শত্রু ছিল, আমরা এমন কিছু করিনি যে কারোর শত্রু হবো। আমরা ভালো প্রোগ্রাম দিয়েছি, জনপ্রিয়তাও পেয়েছিল। কিন্তু আমরা একটি গোষ্ঠীর কাছে শত্রু হয়ে দাঁড়ালাম।”
সাগরসম ভারাক্রান্ত-ভগ্ন হৃদয় নিয়ে দেশ ছেড়ে ইংল্যান্ডে চলে যান এ এস মাহমুদ। প্রত্যাশায় থাকেন সুদিন ফেরার। কিন্তু, তার আগেই ২০০৪ সালের ২২ জানুয়ারি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই দেশপ্রেমিক।
সত্য উদ্ভাসিত একুশ, একাত্তর- এই শব্দগুলো যাদের অপছন্দ ছিল তারাই একুশে টেলিভিশনের গলাটিপে ধরার অপপ্রয়াস চালিয়েছিল।
ফরহাদ মাহমুদ বলেন, “বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অনেক সম্ভাবনাময়। একুশের টিভির যে প্রয়োজনটা ছিল তখন, এখন হয়তো অতো বেশি প্রয়োজন নেই। যে ধরনের পরিবর্তন সবদিকে দেখছি সেটা ঠেকানো যাবেনা। ওরা পরাজিত, আমরা নয়।”
এ এস মাহমুদের একুশে টেলিভিশন আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে, না থেকেও তিনি আজও আছেন। একুশে টেলিভিশনের উৎসবীজ স্বপ্নবান মানুষটিকে বিনম্র শ্রদ্ধা।
এএইচ