ইতিকাফ কী ও কেন
প্রকাশিত : ১৪:৩১, ২০ মে ২০১৯ | আপডেট: ১৬:৩২, ২০ মে ২০১৯
কোন স্থানে আটকে পড়া অথবা কোন স্থানে থেমে যাওয়াকে ইতিকাফ বলে। ইসলামী শরীয়াতের ভাষায় ইতিকাফের অর্থ কোনো লোকের দুনিয়ার সংস্রব, সম্বন্ধ ও বিবি বাচ্চা থেকে আলাদা হয়ে মসজিদে অবস্থান করা।
ইতিকাফের উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষ দুনিয়াবী কারবার ও সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং সাংসারিক কর্মব্যস্ততা ও প্রবৃত্তির কামনা-বাসনা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে চিন্তা ও কাজের শক্তি এবং যোগ্যতাকে আল্লাহর স্মরণ এবং ইবাদতে লাগিয়ে দেবে। তারপর সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আল্লাহর প্রতিবেশি হয়ে পড়বে। এ কাজের দ্বারা একদিকে সে ব্যক্তি সব প্রকার বেহুদা কথাবার্তা ও মন্দ কাজ থেকে বেঁচে থাকতে পারবে এবং অন্যদিকে আল্লাহর সঙ্গে তার সম্পর্ক মজবুত হবে। তাঁর নৈকট্যলাভ করবে এবং তাঁর ইয়াদ ও ইবাদতের মনে শান্তি লাভ করবে।
কয়েকদিনের এ আমল তাঁর মনের ওপর গভীর প্রভাব ফেলবে যে, চারদিকে দুনিয়ার রং তামাশা ও মন ভুলানো বস্তুসমূহ দেখার পরও আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক মজুবত রাখতে পারবে। আল্লাহর নাফরমানি থেকে বাঁচতে পারবে এবং তার হুকুম পালন করে মনে আনন্দ অনুভব করবে। এমনিভাবে সমগ্র জীবন আল্লাহর বন্দেগীতে কাটিয়ে দেবে।
ইতিকাফ তিন প্রকারের- ওয়াজিব, মুস্তাহাব, সুন্নাতে মুয়াক্কাদা।
ওয়াজিব ইতিকাফ
মানতের ইতিকাফ ওয়াজিব। কেউ যদি ইতিকাফের মানত করলো অথবা কোন শর্তসহ মানত করলো- যেমন কেউ বললো, যদি আমি পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করি অথবা যদি আমার অমুক কাজ হয়ে যায়, তাহলে ইতিকাফ করবো। তার এ ইতিকাফই ওয়াজিব এবং পূরণ করতে হবে।
মুস্তাহাব ইতিকাফ
রমজানের শেষ দশদিন ব্যতিরেকে যত ইতিকাফ করা হবে তা মুস্তাহাব হবে। তা রমজানের প্রথম অথবা দ্বিতীয় দশদিনে অথবা যে কোন মাসে করা হোক।
সুন্নাতে মুয়াক্কাদা ইতিকাফ
রমজানের শেষ দশ দিনের ইতিকাফ সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। নবী করীম (সা.) নিয়মিতভাবে প্রতিবছর ইতিকাফ করতেন। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি তা পালন করেন। একবার কোনো কারণে ইতিকাফ করতে পারেননি বলে পরের বছর বিশ দিন ইতিকাফ করেন। এ জন্য মুসলমানরা যদি সামষ্টিকভাবে এ সুন্নাত পরিত্যাগ করে তাহলে গোনাহগার হবে। যদি কিছু লোকও সুন্নাত পালনের ব্যবস্থা করে, তাহলে যেহেতু সুন্নাতে কিফায়া, এ অল্প লোকের ইতিকাফ সবার জন্যই যথেষ্ট হবে।
তথ্যসূত্র : মাওলানা মোফাজ্জল হকের রোজা ইতিকাফ ফিদইয়া ফিতরা গ্রন্থ।
এএইচ/