ইবাদত করো একাগ্রচিত্তে
প্রকাশিত : ১৭:৩১, ২৫ মে ২০১৯
কুরআন শতাব্দীর পর শতাব্দী জীবন ও জগৎ সম্পর্কে কোটি কোটি মানুষের অন্তর্দৃষ্টি খুলে দিয়েছে, তাদের বদলে দিয়েছে ভেতর থেকে, খুলে দিয়েছে তাদের সম্ভাবনার দ্বার, দিয়েছে প্রশান্ত ও পরিতৃপ্ত জীবন। কুরআন অনুসারীরা দুনিয়ায় সফল ও সম্মানিত হবেন। আখেরাতের সম্মান তো শুধু সৃষ্টায় সমর্পিত সৎকর্মশীল মানুষদের জন্যই। কুরআনে আল্লাহতায়ালা ইবাদতের নির্দেশ দেন এবং আর অমান্যকারীর শাস্তি অনিবার্য করেছেন।
ইবাদত সম্পর্কে কুরআনে আল্লাহ যা বলেন : ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা যদি শুধু আমারই ইবাদত করো, তাহলে আমি রিজিক হিসেবে যে ভালো জিনিস তোমাদের দিয়েছি তা থেকে আহার করো। আর আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করো।’ (সূরা বাকারা ১৭২)
‘ঈসা মসিহ আল্লাহর বান্দা হওয়াকে মোটেই হেয় জ্ঞান করে না। আর ঘনিষ্ঠ ফেরেশতাদেরও এ ব্যাপারে কোন সংকোচ নেই। যারা আল্লাহর ইবাদত করতে লজ্জা বোধ করবে এবং নিজেকেই বড় ভাববে, মহাবিচার দিবসে তিনি তাদের সবাইকে সমবেত করবেন।’ (সূরা নিসা ১৭২)
‘আমি তাদের দান করেছিলাম নেতৃত্ব। তারা আমার নির্দেশ অনুসারে মানুষকে সৎপথ প্রদর্শন করত। আমি তাদেরকে ওহীর মাধ্যমে নির্দেশ দিয়েছিলাম সৎকর্ম করার, নামাজ কায়েম করার ও যাকাত আদায় করার। তারা সবাই আমারই ইবাদত করত।’ (সূরা আম্বিয়া ৭৩)
‘আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্যে ইবাদতের নিয়মকানুন নির্ধারণ করে দিয়েছি। তাই ওরা যেন এ ব্যাপারে তোমার সঙ্গে বিতর্ক না করে। তুমি ওদেরকে তোমার প্রতিপালকের পথে ডাকো। নিঃসন্দেহে তুমি তো সঠিক পথেই রয়েছ।’ (সূরা হজ ৬৭)
‘তুমি কি সচেতন নও যে, মহাকাশ ও পৃথিবীর সকল সৃষ্টি, এমনকি উড়ন্ত পাখিরাও আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে? প্রত্যেকেই জানে তাঁর ইবাদত ও মহিমা ঘোষণার নিয়ম। আর ওরা যা করে, সে বিষয়ে আল্লাহ ভালো করেই জানেন।’ (সূরা নূর ৪১)
‘(হে নবী! সত্য অস্বীকারকারীদের) বলো, আমার প্রতিপালকের ইবাদত না করলে তাঁর কিছুই আসে-যায় না। কিন্তু তোমরা আল্লাহর বিধানসমূহ অস্বীকার করেছ। অতএব তোমাদের শাস্তি অনিবার্য।’ (সূরা ফোরকান ৭৭)
‘সে বলল, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, যাঁর কাছে আমাদের সবাইকে ফিরে যেতে হবে, তাঁর ইবাদত না করার পেছনে আমার কী যুক্তি থাকতে পারে!’ (সূরা ইয়া-সীন ২২)
‘যে ব্যক্তি রাতে সেজদায় অবনত হয়ে বা দাঁড়িয়ে ইবাদত করে, আখেরাতের জবাবদিহিতা নিয়ে শঙ্কিত থাকে এবং প্রতিপালকের রহমত প্রত্যাশা করে, সে কি কখনো তার সমান হতে পারে, যে এসব কিছুই করে না? বলো, ‘যারা জানে আর যারা জানে না (অর্থাৎ জ্ঞানী ও মূর্খ) তারা কি কখনো সমান হতে পারে?’ শুধু সহজাত বিচারবুদ্ধি প্রয়োগকারীরাই সৎ-উপদেশ গ্রহণ করে।’ (সূরা জুমার ৯)
‘তোমাদের প্রতিপালক বলেন, তোমরা আমাকে ডাকো, আমি সাড়া দেবো (দোয়া কবুল করব)। যারা অতি-অহমিকায় আমার ইবাদতে বিমুখ, তারা অবশ্যই লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।’ (সূরা মুমিন ৬০)
আল্লাহর ইবাদতের নির্দেশ : ‘(হে নবী! বলো, আমাদের জীবন) আল্লাহর রং-এ রঙিন। আল্লাহ ছাড়া (জীবনকে) এত সুন্দর রং আর কে দিতে পারে? আমরা শুধু তাঁরই ইবাদত করি।’ (সূরা বাকারা ১৩৮)
‘আমি তো জানি, ওদের কথাবার্তায় তোমার অন্তর বিষন্ন হয়। (আর এ বিষন্নতার প্রতিকার খুব সহজ) তুমি তোমার প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো এবং সেজদাকারীদের মধ্যে শামিল হও। আমৃত্যু তোমার প্রতিপালকের ইবাদত করো।’ (সূরা হিজর ৯৭-৯৯)
‘তিনি মহাবিশ্বের সবকিছুরই প্রতিপালক। সুতরাং শুধু তাঁরই ইবাদত করো এবং ইবাদতে লেগে থাকো। তুমি কি তাঁর তুল্য কাউকে জানো?’ (সূরা মরিয়ম ৬৫)
‘হে বিশ্বাসীগণ! রুকু ও সেজদার মাধ্যমে তোমরা শুধু তোমাদের প্রতিপালকেরই ইবাদত করো এবং সৎকর্ম করো, যাতে করে তোমরা সফল ও তৃপ্ত হতে পারো।’ (সূরা হজ ৭৭)
‘আমি সামুদ সম্প্রদায়ের কাছে তাদের ভাই সালেহকে এই বাণী দিয়েছিলাম যে, ‘তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো।’ কিন্তু তারা দুই দলে বিভক্ত হয়ে বিতর্কে মেতে উঠল।’ (সূরা নমল ৪৫)
‘আমি এই কিতাব তোমার কাছে যথাযথভাবে নাজিল করেছি। অতএব একাগ্রচিত্তে আল্লাহর ইবাদত করো।’ (সূরা জুমার ২)
ইবাদতের সময় সুসজ্জিত হওয়ার নির্দেশ : ‘হে আদমসন্তান! প্রত্যেক ইবাদতের সময় নিজেকে (অন্তরে ও বাইরে) সুসজ্জিত করো। পানাহার করো। কিন্তু অপচয় করো না। আল্লাহ অপচয়কারীদের অপছন্দ করেন।’ (সূরা আরাফ ৩১)
ইবাদতের জন্যে রাতে ওঠা : ‘আমি তোমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ বাণী নাজিল করতে যাচ্ছি। নিঃসন্দেহে ইবাদতের জন্যে রাতে ওঠা আত্মসংযমে সহায়তা করে, অন্তরের ধ্বনিকে করে স্পষ্টতর। অবশ্যই দিনে তুমি থাকবে কর্মব্যস্ত।’ (সূরা মুজাম্মিল ৫-৭)
এএইচ/