ঢাকা, বুধবার   ০২ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ইশশশ...! আর উফফফ...! এ বিদায় ব্রাজিলের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:১৮, ৭ জুলাই ২০১৮ | আপডেট: ১৪:০২, ৭ জুলাই ২০১৮

ক্যাপশনঃ ম্যাচ শেষে ব্রাজিল খেলোয়াড়দের এই হতাশাই খেলার ফলাফল বলে দেয়।

ক্যাপশনঃ ম্যাচ শেষে ব্রাজিল খেলোয়াড়দের এই হতাশাই খেলার ফলাফল বলে দেয়।

Ekushey Television Ltd.

এবারের রাশিয়া বিশ্বকাপ ফুটবল প্রেমীদের কাছে সবথেকে বেশি মনে থাকবে ‘অঘটনের বিশ্বকাপ’ হিসেবে। একের পর অঘটনের মিছিলে শেষমেষ গায়ে ফেভারিট তকমা থাকা ব্রাজিলকেও কোয়ার্টার ফাইনালে ২-১ গোলে হারিয়ে দিল বেলজিয়াম। সব হারানোর রাতে ব্রাজিল খেলোয়াড় আর সমর্থকদের মুখ থেকে শুধু দুইটি শব্দই শোনা গেছে। ইশশশশ! আর উফফফফ!

ছবিঃ ম্যাচ শেষে নেইমারের হতাশা...

শনিবার মধ্যরাতে রাশিয়ার কাজান আরেনা স্টেডিয়ামে চলতি আসরে কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় ব্রাজিল ও বেলজিয়াম। দ্বিপক্ষীয় লড়াইয়ে বিগত ৫৫ বছরের ইতিহাসে ‘অপরাজিত’ থাকা ব্রাজিলকে হারিয়ে সেমিফাইনালের টিকেট পায় বেলজিয়াম। আর ব্রাজিল পায় একরাশ ‘আফসোস’।

পুরো ম্যাচে ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়, কোচ, দলের অন্যান্য সদস্য আর বিশ্বজুড়ে থাকা সমর্থকদের আফসোসের বহিঃপ্রকাশ ছিল সেই ‘ইশশশ...!’ আর ‘উফফফ...’। স্থানভেদে ভাষার তারতম্যে আফসোস প্রকাশের সঠিক উচ্চারণ ভিন্ন হতে পারে। তবে হতাশার ব্যাকারণে তা সবই হয়তো। ইশ...যদি এমনটা না হতো! উফ...যদি এমনটা হতো!

ছবিঃ ম্যাচের একদম শেষদিকে গোলের আশায় ব্রাজিলের কর্ণারে অংশ নিতে গিয়েছিলেন গোলরক্ষক বেকারও। কিন্তু ইশ... গোল হয়নি। 

বেলজিয়ামের কাছে পরাজিত হলেও ম্যাচে বেশ ভালো নিয়ন্ত্রণ ছিল ব্রাজিলের। বেলজিয়ামের থেকে বেশি সময় নিজেদের দখলে বল রেখেছিলো তিতের ব্রাজিল (৫৭%-৪৩%)। প্রতিপক্ষের শিবিরে আক্রমণের চেষ্টা আর অন-টার্গেট আক্রমণেও এগিয়ে ছিল সেলেসাওরা।

ব্রাজিল শিবিরে বেলজিয়ামের আটবারের আক্রমণ চেষ্টার বিপরীতে বেলজিয়ান শিবিরে ২৬ বার আক্রমণের উদ্যোগ নেয় ব্রাজিল। এরমধ্যে নয়টিই ছিল অন-টার্গেটে আক্রমণ। বেলজিয়ামের ছিল মাত্র তিনটি। কিন্তু এতকিছুর পরেও সফল ফিনিশিং এর অভাবে আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে’র পর এবারের আসর থেকে ছিটকে যেতে হলো ল্যাটিন আমেরিকার সর্বশেষ প্রতিনিধি ব্রাজিলকে।

ছবিঃ এবারও শিরোপা অধরাই থেকে গেলো ব্রাজিলের জন্য। তাই ডামি কাপ-ই ভরসা সেলেসাওদের।

ব্রাজিলের উফফফ আর ইশশশ এর মিছিল শুর হয় ম্যাচের সপ্তম মিনিট থেকেই। গোল পোস্টের একদম কাছে দাড়িয়েও নেইমারের কর্ণার থেকে আসা বলে ঠিকমত মাথা ছোঁয়াতে পারেননি থিয়েগো সিলভা। দশম মিনিটে শুধু পায়ের টোকায় ব্রাজিলের জন্য প্রথম গোল এনে দিতে পারতেন পলিনহো। গোলপোস্টের একদম কাছে দাড়িয়েও মার্সেলোর কর্ণারে বল পেয়েও জালের দিকে ঢেলে দিতে পারেননি তিনি। মুখে শুধু উফফফফ!

ছবিঃ চোখের জলে বিদায় ব্রাজিলের। 

তবে পুরো ম্যাচ তো বটেই ব্রাজিলীয়ানদের জন্য ইতিহাসের পাতায় ‘ইশ!’ হয়ে থাকবে ১৩ মিনিটে ফার্নান্দিনহো’র আত্মঘাতী গোল। ইশ... যদি এই ভুলটা না হতো ম্যাচের ফলাফল হয়তো ভিন্ন রকম হতো।

১৫ মিনিটে আবারও উফফফ করতে হয় ব্রাজিলিয়ানদের। নেইমারের বানানো বল থেকে নেওয়া গ্যাব্রিয়েল জেসাসের শট রুখে দেন বেলজিয়ান ডিফেন্ডাররা। ১৯ মিনিটে উফফফ শব্দটি আসে কুটিনহো’র মুখ থেকে। ডি-বক্সের অনেকখানি বাইরে থেকে নেওয়া জোরালো শট ঠেকিয়ে দেন বেলজিয়ান গোলরক্ষক কুরটোইস।

ম্যাচের ৩০-তম মিনিটে অবশ্য আবারও ফিরে আসে ‘ইশ’। ইশ...! যদি বেলজিয়ামের ব্রুয়েনের পা থেকে দ্বিতীয় গোলটি হজম না করতে হতো ব্রাজিলকে। হয়তো ম্যাচের ফলাফল ভিন্ন হতে পারতো। ৩৭ তম মিনিটে মঞ্চে আবারও কুটিনহো। এবার সঙ্গী মার্সেলো। ডান পায়ের নেওয়া শট জান প্রাণ দিয়ে আটকে দেন কুরটোইস।   

তবে ব্রাজিলের ইশ... আর উফ... এর মিছিল সেখানে থেমে থাকেনি। ৬২ মিনিটে কুরটোইসকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি ডগলাস কস্টা। পুরোটা সময় রাইট ব্যাকে দারুণ খেলা কস্টা গোল পোস্টের কাছে এসে কেন যেন বার বার খেই হারিয়ে ফেলছিলেন। ইশ...! যদি এমনটা না হতো।

৭৩ মিনিটে পলিনহো’র বদলি হয়ে নামা অগাস্টা ৭৬ মিনিটে ব্রাজিলকে একটি গোল এনে দিলেও তা শুধু পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়েছে মাত্র। ইশ... আর উফ... এর আক্ষেপ থামাতে পারেনি। এই অগাস্টাই ৮০ মিনিটে একদম একা পেয়েছিলেন ‘রেড ডেভিলস’ এর দ্বার প্রহরীকে। কিন্তু প্রয়োজের মুহুর্তে শান্ত-স্থির থাকতে না পারা ব্রাজিল সেই সুযোগটাও হাতছাড়া করে। ৮৩ মিনিটে ইশ আর উফের মিছিলে আরও একবার যোগ দেন কুটিনহো। একজন প্লে-মেকার হিসেবে নিজের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে বানিয়ে দেওয়া নেইমারের দারুণ এক বল থেকে শেষমেষ গোল আদায় করতে পারেননি কুটিনহো। সোজা গোলপোস্টের দিকে শট নেওয়ার বদলে তার পা থেকে বল অনেকখানি উপর দিয়ে চলে যায় মাঠের বাইরে। ইশ... যদি কুটিনহো পারতেন!

ছবিঃ উফ... আর ইশ...এর মিছিল যেন দর্শক গ্যালারিতেও। ব্রাজিলের পরাজয়ে হতাশ একদল সমর্থক।

তবে শেষ মুহুর্তেও চেষ্টা করেছিলেন নেইমার। অতিরিক্ত সময়ের তৃতীয় মিনিটে গোল প্রায় করেই ফেলছিলেন। কিন্তু উফফফ...! জাল আর বলের মধ্যে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় কুরটোইসের হাত। নেইমারের নেওয়া দারুণ এক শট থেকে আসা বল আঙ্গুলের ছোঁয়ায় মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দেন এই গোলরক্ষক।

শেষ পর্যন্ত আর কোণ গোল না পাওয়ায় ইশ আর উফ এর কাছে হেরে বাড়ি ফিরে আসতে হচ্ছে নেইমার-মার্সেলো-কুটিনহো’দের। তবে আফসোস অনেকগুলো। ইশ...! যদি এমন না হয়ে তেমন হতো। উফফফ... যদি তেমন না হয়ে এমন হতো।

//এস এইচ এস//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি