ঢাকা, বুধবার   ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ইসলামে যাকাতের বিধান

প্রকাশিত : ১২:৫৪, ২২ মে ২০১৯ | আপডেট: ১২:২৯, ২৩ মে ২০১৯

ইসলাম একমাত্র আল্লাহর মনোনীত জীবন বিধান। এটি বিশ্ব মানবতার মহান মুক্তির সনদ। মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ,রাজনৈতিক,স্বাংস্কৃতিক,অর্থনেতিক,ধর্মীয় ও আর্ন্তজাতিক তথা - সার্বিক জীবনের সকল সমস্যার সমাধান রয়েছে, মহান রাব্বুলআলামীনের ঐশি পবিত্র মহাগ্রন্থ আল-কোরআনুল কারীমের মধ্যে। এ শাশ্বত জীবন বিধান  মানব সমাজে দ্যুাতি ছড়িয়ে পথ-পদর্শন করেছে যুগ যুগান্তরে। এর পরশে আলোকিত  হয়েছে বর্বর জাহিলি সমাজ। ঘন ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত জাতি পরিণত হয়েছে  গোটা বিশ্বের অনুকরণীয়  আদর্শে । সে কালজ্বয়ী আদর্শ  শাশ্বত জীবন বিধান  ইসলাম পাঁচটি মূলভিতিত্তির উপর সুপ্রতিষ্ঠিত যথা- ১. ঈমান বা বিশ্বাস ২.সালাত বা নামাজ  ৩.সাওম বা রোজা ৪.হজ  ও  ৫. যাকাত।  আজকের আলোচ্য বিষয় হলো-ইসলামের পাঁচটি মূলভিত্তির পঞ্চম ভিত্তি যাকাত।

যাকাত শব্দের অর্থ:

যাকাত  শব্দের অর্থ  যা পরিশুদ্ধকর, এটি হলো ইসলাম র্ধমরে পঞ্চস্তম্ভবের একটি । প্রত্যকে স্বাধীন, র্পূণবয়স্ক মুসলমান নর-নারীকে প্রতি বছর স্বীয আয় ও সম্পত্তির একটি নির্দিষ্ট অংশ, ইসলামী শরিয়ত নির্ধারিত সীমা (নিসাব পরিমাণ) অতিক্রম করে তবে  তা গরীব-দুঃস্থদরে মধ্যে বিতরণের  নিয়মকে যাকাত বলা হয়।

 সাধারণত নির্ধারিত সীমার অধিক সম্পত্তি হিজরি ১ বছর ধরে থাকলে মোট সম্পত্তরি ২.৫ শতাংশ (২.৫%) বা ১/৪০ অংশ বিতরণ করতে হয়। ইসলামরে পঞ্চস্তম্ভের মধ্যে হজ্জ্ব এবং যাকাত শুধুমাত্র র্শতসাপক্ষে  সম্পদশালীদের জন্য ফরয বা আবশ্যিক হয়।

যাকাতের র্শতসমূহ:

স্বাধীন, র্পূণবয়স্ক মুসলিম নর-নারীর কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকলে কতিপয় র্শতসাপক্ষে তার উপর যাকাত ফরয হয়ে থাকে। যেমন:-

সম্পদের উপর র্পূণ মালিকানা:
সম্পদের উপর যাকাত ওয়াজিব হওয়ার জন্য সম্পদের মালকিানা সুনর্দিষ্টি হওয়া আবশ্যক। র্অথাৎ সম্পদ, মালিকের অধিকারে থাকা, সম্পদের উপর অন্যের অধিকার বা মালিকানা না থাকা এবং নিজের  ইচ্ছামতো সম্পদ ভোগ ও ব্যবহার করার র্পূণ অধিকার থাকা। যে সকল স¤পদের  মালিকানা সুস্প শীল ষ্ট নয়, সেসকল সম্পদের কোনো যাকাত নেই, যেমন: সরকারি মালিকানাধীন সম্পদ। অনুরূপভাবে জনকল্যাণমূলক কাজের জন্য ওয়াক্ফকৃত সম্পদের উপরে যাকাত র্ধায হবে না। তবে ওয়াক্ফ যদি কোনো ব্যক্তি বা গোত্ররে জন্য হয়, তবে তার উপর যাকাত দিতে হবে।

সম্পদ উৎপাদনক্ষম হওয়া:
যাকাতরে জন্য সম্পদকে অবশ্যই উৎপাদনক্ষম, প্রবৃদ্ধিশীল হতে হবে, র্অথাৎ সম্পদ বৃদ্ধি পাবার যোগ্যতাই যথেষ্ট। যেমন- গরু, মহিষ, ব্যবসার মাল, নগদ র্অথ ব্যবসায়িক উদ্দশ্যেক্রীত যন্ত্রপাতি ইত্যাদি মালামাল র্বধনশীল র্অথাৎ যেসকল মালামাল নিজের প্রবৃদ্ধি সাধনে সক্ষম নয়,সেসবের উপর যাকাত র্ধায হবে না, যেমন: ব্যক্তিগত ব্যবহারের মালামাল, চলাচলের বাহন ইত্যাদি।

নিসাব পরিমাণ সম্পদ:
যাকাত ফরয হওয়ার তৃতীয় র্শত হচ্ছে শরীয়ত নির্ধারিত সীমাতিরিক্ত সম্পদ থাকা। সাধারণ ৫২.৫ তোলা রূপা বা ৭.৫ তোলা র্স্বণ বা উভয়টি মিলে ৫২.৫ তোলা রূপার সমমূল্যরে সম্পদ থাকলে সে সম্পদরে যাকাত দিতে হয়। পশুর ক্ষেত্রে এই পরিমাণ বিভিন্ন (বিস্তারিত: যাকাত প্রদানের নিয়ম দ্রষ্টব্য)।

মৌলিক প্রয়োজনাতিরিক্ত সম্পদ থাকা:
সারা বছররে মৌলিক প্রয়োজন মটিয়ে যে সম্পদ উদ্ধৃত থাকবে, শুধুমাত্র তার উপরই যাকাত ফরয হবে। এ প্রসঙ্গে আল-কুরআনে  উল্লেখ রয়েছে-

’’ লোকজন আপনার নিকট (মুহাম্মদের (সা:) নিকট) জানতে চায়, তারা আল্লাহর পথে কী ব্যয়

করবে ? বলুন, যা প্রয়োজনের অতিরিক্ত। আল্লাহ এভাবেই তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট বিধান বলে দেন।”

মুহাম্মদ (সা:) এর সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:) (বলেছেন-

“ অতিরিক্ত বলতে পরিবারের ব্যয় বহনের পর যা অতিরিক্ত বা অবশষ্টি থাকে তাকে বুঝায়।”

 

 ইউসুফ আল-কারযাভী`র মতে স্ত্রী, পুত্র, পরিজন ও পিতা-মাতা এবং নিকটাত্মীয়দের ভরণ-পোষণও মৌলিক প্রয়োজনের অর্ন্তভুক্ত।

ঋণ মুক্ততা:

নিসাব পরিমাণ সম্পদ হলেও ব্যক্তির ঋণমুক্ততা, যাকাত ওয়াজিব হওয়ার অন্যতম র্শত। যদি সম্পদের মালিক এত পরিমাণ ঋণগ্রস্থ হন যা, নিসাব পরিমাণ সম্পদও মিটাতে অক্ষম বা নিসাব পরিমাণ সম্পদ তার চেয়ে কম হয়, তার উপর যাকাত ফরয হবে না। ঋণ পরেিশাধের পর নিসাব পরমিাণ সম্পদ থাকলেই কেবল যাকাত ওয়াজিব হয়। তবে এক্ষেতে  দ্বিতীয় মতটি হলো: যে ঋণ কিস্তিতে পরিশোধ করতে হয় সে ঋৃণের ক্ষেতে যে বছর যে পরিমাণ ঋৃণ পরিশোধ করতে হয়, সে বছর সে পরিমাণ ঋণ বাদ দিয়ে বাকিটুকুর উপর যাকাত দেিত হয়। কিন্তু ঋণ বাবদ যাকাত অব্যাহতি নেওয়ার পর অবশ্যই ঋণ পরিশোধ করতে হবে। অন্যথায় সে সম্পদরে উপর যাকাত দিতে হবে।

সম্পদ এক বছর আয়াত্তাধীন থাকা:
নিসাব পরিমাণ স্বীয় সম্পদ ১ বছর নিজ আয়াত্তাধীন থাকা যাকাত ওয়াজিব হওয়ার র্পূবর্শত।তবে কৃষিজাত ফসল, খনিজ সম্পদ ইত্যাদির যাকাত (উশর) প্রতিবার ফসল তোলার সময়ই দিতে হবে। ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ও কোম্পানীর ক্ষেতে বছর শেষে  (Balance Sheet)  র্বণিত সম্পদ ও দায়-দেনা অনুসারে যাকাতের পরমিাণ নির্ধারিত হবে।

বিশষে ক্ষেত্রে যাকাত –

*  অপ্রাপ্তবয়স্ক ও পাগলের যাকাত: সম্পদের মালিক অপ্রাপ্তবয়স্ক কিংবা পাগল হলে, তার যাকাত তার আইনানুগ অভিভাবককে আদায় করতে হবে।

 * যৌথ মালকিানাধীন সম্পত্তরি যাকাত: কোনো সম্পদে যৌথ মালিকানা থাকলে সম্পদের প্রত্যেক অংশীদার তাঁর স্ব-স্ব অংশের উপরে যাকাত দিবেন, যদি তা নিসাব পরিমাণ হয় বা তার অতিরিক্ত হয়। র্অথাৎ সম্পদের স্বীয় অংশের মূল্য অন্যান্য সম্পদের সাথে যোগ করে হিসাব করে যদি দেখা যায় তা নিসাব পরিমাণ হয়েছে বা অতিক্রম করেছে, তবে যাকাত দিতে হবে।

  * নির্ধারিত যাকাত: যাকাত নির্ধারিত হওয়াা সত্ত্বেও যে পরিশোধের আগেই সম্পদের মালিকের মৃত্যু হলে তার উত্তরাধীকারগণ অথবা তার তত্ত্বাবধায়ক তার সম্পত্তি থেকে প্রথমে যাকাত বাবদ পাওনা ও কোনো ঋণ থাকলে তা পরেিশাধ করবনে। এরপর অবশষ্টি সম্পত্তি, উত্তরাধকিারীদের মধ্যে ব›টিত হবে।

 * তত্ত্ববধায়কের দায়িত্বে ন্যস্ত সম্পদের যাকাত: মালিকের পক্ষ থেকে নিয়োগকৃত আইনানুগ তত্ত্বাবধায়কের কাছে সম্পত্তি ন্যস্ত থাকলে মালিকের পক্ষে উক্ত তত্ত্বাবধায়ক সে যাকাত পরেিশাধ করবনে।

 *  বিদেশস্থ সম্পদের যাকাত: যাকাত ওয়াজিব হবার জন্য সম্পত্তি নিজ দেশে থাকা র্শত নয়। বরং সম্পত্তি অন্য দেেশ থাকলেও তার উপর যাকাত দিতে হবে। তবে উক্ত দশে ইসলামী রাষ্ট্র হলে এবং দেশের সরকার যাবতীয় সম্পদের উপর যাকাত দিলে তা আর আলাদা করে দিতে হবে না।

   * যাকাত বণ্টনের খাতসমূহ:

পবিত্র কুরআনরে সূরা আত-তাওবা যাকাত বন্টনে আটটি খাত আল্লাহ তায়ালা নির্ধারণ করছেন  এই খাতগুলো সরাসরি কুরআন দ্বারা নির্দিষ্ট, এবং যেহতেু তা আল্লাহ`র নির্দেশে, তাই এর বাইরে যাকাত বণ্টন করলে যাকাত ইসলামী শরয়িত সম্মত হয় না

১. ফকির (যার কিছুই নেই)
২. মিসকীন (যার নেসাব পরিমাণ সম্পদ নেই)
৩. যাকাত আদায়ে নিযুক্ত র্কমচারী (যার অন্য জীবিকা নেই)
৪. অমুসলিমদের মন জয় করার জন্য
৫. ক্রীতদাস (মুক্তির উদ্দেশ্যে)
৬. ধনী সম্পদশালী ব্যক্তি যার সম্পদের তুলনায় ঋৃণ বেশী
৭. (স্বদেশ ধনী হলেও বিদেশে) আল্লাহর পথে জিহাদে রত ব্যক্তি
৮. মুসাফির (যিনি ভ্রমণকালে অভাবে পতিত)
    অনেকে যাকাতের র্অথে শাড়ী ক্রয় করে তা বন্টন করে থাকেন। এভাবে যাকাত আদায়  হয়ে গেলেও  আসলে প্রকৃতপক্ষে যাকাত গ্রহণকারীর তেমন উপকার হয়না। তাই যাকাত বন্টনের উত্তম পন্থা হলো যাকাত যাদেরকে প্রদান করা যায়, তাদেরে একজনকইে বা একটি পরবিারকেই যাকাতের সর্ম্পূণ র্অথ দিয়ে স্বাবলম্বী করে দেয়া ।

যাকাত গণনার নিয়ম:

প্রতিজন মুসলমানকে তাঁর যাবতীয় আয়-ব্যয়-সম্পদের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব সংরক্ষণ করতে হয় । হিসাব সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বাৎসরিক ভিত্তি একটি মৌলিক ধারণা। র্অথাৎ বছরে একটা নির্দিষ্ট দিন থেকে পরবর্তি বছরে একটি নির্দিষ্ট দিন র্পযন্ত যাবতীয় আয়-ব্যয়ের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব রাখতে হয়। এই `দিন` বাছাই করার ক্ষতে  কোনো বাধ্যবাধকতা নেই যে কোন মাসে দিন নির্ধারণ করতে হবে। সাধারণত কেউ কেউ হিসাব সংরক্ষণের সুবিধার্থে হিজরি বছরে প্রথম মাস মহররমের কোনো দিন কিংবা অধিক   পূণ্যের আশায় রমজান মাসের কোনো দিন বাছাই করে থাকেন। এই হিসাব সংরক্ষণ হতে হবে যথেষ্ট সূক্ষ্মতার সাথে। সংরক্ষিত হিসাবের প্রেক্ষিতে ইসলাম র্ধমের নিমানুযায়ী নিসাব পরিমাণ সম্পদ হলে তবেই উক্ত ব্যক্তির উপর যাকাত দেয়া বাধ্যতামূলক (ফরয) হয়, অন্যথায় যাকাত দিতে হয় না।

যাকাত প্রদানের নিয়ম:

যাকাতের `নিসাব পরিমাণ` বিভিন্ন দ্রব্যাদির ক্ষতে  বিভিন্ন হয়। নিচে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত দেয়া হলো-

যাকাতযোগ্য সম্পত্তির বিবরণ, তার নিসাব বা সর্বনিমণ পরিমাণ ও যাকাত আদায়ের হার সংক্রান্ত চার্ট নিম্নরূপঃ

ক্রম

যাকাতযোগ্য সম্পত্তির বিবরণ

যাকাতের নিসাব

(ন্যূনতম যে পরিমাণ ধন-সম্পদ থাকলে যাকাত আদায় করা ফরজ)

যাকাত পরিশোধের হার

       

১.

হাতে রক্ষিত অথবা ব্যাংকে নগদ গচ্ছিত অর্থ, শেয়ার সার্টিফিকেট, প্রাইজবন্ড ও সার্টিফিকেট সমূহ।

৫২.৫ তোলা রূপা বা তার সমপরিমাণ বাজার মূল্য।

    মোট অর্থের শতকরা ২.৫%।

২.

স্বর্ণ/রৌপ্য, মূল্যবান ধাতু ও স্বর্ণ বা রৌপ্যের অলংকার।

৭.৫ তোলা স্বর্ণ কিংবা ৫২.৫ তোলা রৌপ্য অথবা সমপরিমাণ অর্থ।

আদায়কালীন বাজার মূল্য     অনুযায়ী মোট অর্থের শতকরা ২.৫%।

৩.

বাণিজ্যিক সম্পদ ও শিল্পজাত ব্যবসায় প্রতিশ্রুত লভ্যাংশের ভিত্তিতে প্রদত্ত অর্থ।

৫২.৫ তোলা রূপার মূল্য।

আদায়কালীন বাজার মূল্যের শতকরা ২.৫%।

৪.

উৎপাদিত কৃষিজাত ফসল।

-

বৃষ্টির পানিতে উৎপাদিত ফসলের উশর  ১/১০ অংশ,  সেচে উৎপাদিত জমিরফসলের  ১/২০  অংশ  অথবা শস্যের বাজার মূল্যের সমপরিমাণ প্রতি মৌসুমে আদায়যোগ্য।

৫.

পশু সম্পদ

(ক) ভেড়া বা ছাগল প্রভৃতি।

১ থেকে ৩৯টি পর্যমত্ম

যাকাত প্রযোজ্য নয়।

৪০থেকে ১২০টি

১টি ভেড়া/ছাগল

 

 

১২১ থেকে ২০০টি

২টি ভেড়া/ছাগল

 

 

২০১ থেকে ৩০০টি

৩টি ভেড়া/ছাগল

 

 

এর অতিরিক্ত প্রতি ১০০টির যাকাত

১টি করে ভেড়া/ছাগল

 

(খ) গরম্ন, মহিষ ও অন্যান্য গবাদি পশু।

১ থেকে ২৯টি পর্যমত্ম

যাকাত প্রযোজ্য নয়।

 

 

৩০ থেকে ৩৯টি

এক বছর বয়সী ১টি বাছুর

 

 

৬০টি এবং ততোধিক

প্রতি ৩০টির জন্য ১ বছর বয়সী এবং প্রতি ৪০টির জন্য ২ বছর বয়সী বাছুর।

 

(গ) ব্যবসার উদ্দেশ্যে মৎস্য চাষ, হাঁস-মুরগী পালন এবং ব্যবসার উদ্দেশ্যে ক্রয়কৃত জমি, নির্মিত বাড়ী প্রভৃতির বাজার মূল্যের হিসাব হবে।

৫২.৫ তোলা রূপার মূল্য।

তবে বাজার মূল্যের ২.৫% অর্থ।

৬.

খণিজ দ্রব্য।

যে কোন পরিমাণ।

উত্তোলিত খণিজ দ্রব্যের শতকরা ২০ ভাগ।

৭.

প্রভিডেন্ট ফান্ডঃ

সরকারী প্রতিষ্ঠানে বা যে সকল কর্পোরেশনে সরকারী নিয়মানুযায়ী প্রভিডেন্ট ফান্ড কর্তন করা হয়, উক্ত প্রভিডেন্ট ফান্ডের কর্তৃনকৃত টাকার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে না। তবে এই টাকা গ্রহণ করার পর একবছর পূর্ণ হলে সম্পূর্ণ টাকার উপর যাকাত প্রদান করতে হবে।

৫২.5 তোলা রূপার মূল্য।

শতকরা ২.৫ ভাগ।

৮.

কোন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির উদ্যোগে প্রভিডেন্ট ফান্ড গঠন করা হলে প্রতি বছর তার উপর যাকাত দিতে হবে।

৫২.৫ তোলা রূপার মূল্য।

শতকরা ২.৫ ভাগ।

 

 

 

 

 

 

 

 

যাকাতমুক্ত সম্পদ:

যাকাতমুক্ত সম্পদ সর্ম্পকে মানবতার নবী মুহাম্মদ [স.] বলেছেন, বাসস্থানের জন্য নির্মিত ঘরসমূহ, ঘরে ব্যবর্হায দ্রব্যাদি, আরোহণের জন্য পশু, চাষাবাদ ও অন্যান্য আবশ্যকীয় কাজে ব্যবহৃত পশু ও দাস-দাসী, কাঁচা তরিতরকারিসমূহ এবং মৌসুমী ফলসমূহ যা বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায় না, অল্পদিনে নষ্ট হয়ে যায়, এমন ফসলে যাকাত নেই। যদিও হানাফি মাযহাব অনুসারে নিজে নিজে উৎপন্ন দ্রব্যাদি, যথা বৃক্ষ, ঘাস এবং বাঁশ ব্যতীত অন্য সমস্ত শস্যাদি, তরিতরকারি ও ফলসমূহের যাকাত দিতে হয়। হাদসিরে আলোকেযে সকল সম্পদসমূহকে যাকাত থাকে অব্যাহতি দেয়া  হয়েছে, সেগুলো হলো-জমি ও বাড়ি-ঘর, মিল, ফ্যাক্টরি, ওয্যারহাউজ বা গুদাম ইত্যাদি দোকান; এক বছরের কম বয়সের গবাদি পশু, ব্যবর্হায যাবতয়ীয়, পোশাক, বই, খাতা, কাগজ ও মুদ্রিত সামগ্রী,     গৃহের যাবতীয় আসবাবপত্র, বাসন-কোসন ও সরঞ্জামাদি, তৈলচিত্র ও স্ট্যাম্প; অফিসের যাবতীয় আসবাব, যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম ও নথি; গৃহপালতি সকল প্রকার মুরগী ও পাখি কল-কব্জা, যন্ত্রপাতি ও হাতিয়ার ইত্যাদি যাবতীয় মূলধন সামগ্রী, চলাচলের যšত্র ও গাড়ি,যুদ্ধাস্ত্র ও যুদ্ধ-সরঞ্জাম, ক্ষণস্থায়ী বা পঁচনশীল যাবতীয় কৃষপিণ্য, বপন করার জন্য সংরক্ষিত বীজ, যাকাত বর্ষের মধ্যে পেয়ে সে বছরই ব্যয়িত সম্পদ, দাতব্য বা জনকল্যাণমূলক প্রতষ্ঠিনের সম্পদ, যা জনর্স্বাথে নযিয়োজিত; সরকারি মালিকানাধীন নগদ অর্থ, র্স্বণ-রৌপ্য এবং অন্যান্য সম্পদ। যে ঋণ, ফেরত পাবার আশা নেই (স্থায়ী কু-ঋৃণ), তার উপর যাকাত র্ধায হব । 

শেষ কথা: ইসলাম আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা কতৃক মনোনীত একটি  পরিপুর্ন জীবন বিধান। তিনি মানুষে সর্বাঙ্গীন  কল্যাণের জন্য ’গাইডবুক’ হিসাবে মহা গ্রন্থ আল-কুরআনুল কারীম অবতীর্ণ করেছেন এবং মহানবী (সা:) কে সত্যের দিশারী হিসাবে এ দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। সুন্দর পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র  গঠনের জন্য দরকার সুসম ভারসাম্যপুর্ন অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, যাকাত তেমনি একটি । সুখী সমৃদ্ধিশালী মানবিক সমাজ গঠনে যাকাত আদায় ও  ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপুর্ন। আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার নির্দেশনা ও রাসুলে আকরাম (সা:) এর-অনুকরণের মাধ্যমে ই হতে পারে একটি  কল্যাণমূলক ব্যবধানহীন সুন্দও সমাজ।       

              গ্রন্থনা: আনোয়ারুল কাইয়ূম কাজল   

 

 

 

 

 

    


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি