ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছে মানুষ
প্রকাশিত : ১৯:৫১, ৯ জুন ২০১৯
ঈদের ছুটি শেষ। সরকারি ৫ দিন ছুটির পর আজ রোববার ছিল প্রথম অফিস। তাই গতকাল থেকেই কর্মবস্ত শহর ঢাকায় ফেরা শুরু করেছে কর্মজীবিরা। তবে ঢাকায় এখনও আগের সেই কর্মচঞ্চলতা ফিরে আসেনি। অনেকে আগামীকাল থেকেই শুরু করবেন অফিস। তাই আজও রাজধানীতে লঞ্চ ও বাস টার্মিনালে ঈদের ছুটি কাটিয়ে ঢাকায় ফেরা মানুষের ভিড়। ফেরার পথগুলো ছিলো ঢাকামুখী মানুষের ভীড়। তবে রাস্তায় গাড়ির চাপ তুলনামূলক কম। এখনো অনেকটা স্বস্তিতেই ফিরছেন যাত্রীরা।
দেশের উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চল থেকে রাজধানীতে প্রবেশের মুখ গাবতলী এলাকায় আজ ঘুরে দেখা যায়, দূরপাল্লার বাস থেকে নামা যাত্রী পরিবহনে সেখানে অপেক্ষায় রয়েছে শত শত সিএনজিচালিত অটোরিকশা। রয়েছে রাইড শেয়ারিং কোম্পানির গাড়িও। কিন্তু সেই তুলনায় যাত্রী উপস্থিতি কম। তবে বিকালে ও রাতে যাত্রী বাড়বে বলেই আশা করছেন অটোরিকশা চালকরা।
এবার ৪ জুন থেকে ৮ জুন পর্যন্ত মোট পাঁচদিন ঈদের ছুটি কাটান সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সেই হিসাবে শনিবারই শেষ হয়েছে ছুটি। পাঁচ দিনের অবকাশ কাটিয়ে জীবিকার তাগিদে ছুটে চলা শুরু হয়েছে। সরকারি বিভিন্ন অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনেকটা ফাঁকা। কিছু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী এলেও এখানো পুরোদমে অফিস চালু হয়নি।
একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় চাকরি করেন আরিফুজ্জামান। ঈদের ছুটি শেষ হয়ে যাওয়ায় শনিবার লঞ্চে ফিরে এসেছেন ঢাকায়। তিনি বলেন, রোববার থেকে অফিস খোলা। তাই রাজধানীতে ফিরে এলাম।
সকাল থেকেই ঢাকার রাস্তায় গণপরিবহন ছিল হাতেগোনা। রিকশাও খুব একটা চোখে পড়েনি। বেশির ভাগ দোকানপাটই ছিল বন্ধ। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। সিনেমা হলগুলোতে লাইন ধরে টিকেট কাটতে দেখা গেছে অনেককে।
যাত্রাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম। ঈদে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে রংপুর গিয়েছিলেন তিনি। অফিস রোববার থেকে খুলেছে। এ ছাড়া দুই সন্তানের স্কুলও কাল থেকে খুলছে। তাই ঈদের এক দিন পরই ঢাকায় ফিরতে হয়েছে। তিনি বলেন, ‘কাল থেকেই আবার সবকিছু আগের মতোই চলবে। ছেলেমেয়েদের স্কুল তো আর বাদ দেওয়া যাবে না।’
এদিকে রাজধানীর সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, মহাখালী ও গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে দেখা গেছে, বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে অনেকে।
কমলাপুর রেলস্টেশনেও ঢাকামুখী মানুষের ভিড় বাড়ছে। তবে ঈদের পর রিকশা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া কিছুটা বেশি দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন কেউ কেউ। পরিবহনের সংখ্যাও কিছুটা কম বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
সায়েদাবাদে কে কে ট্রাভেলস বাস কাউন্টারের কর্মকর্তা আবদুল জলিল বলেন, সকাল থেকে মানুষ ফেরা শুরু করেছে। কোনো বাসে সিট খালি নেই। অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে আসছে। এখন ফেরার পথেও ভাড়া কিছুটা বেশি গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের।
এ বিষয়ে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের দায়িত্বে থাকা বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, এবার ঈদে লোকজন নিরাপদে এবং অত্যন্ত সুন্দরভাবে লঞ্চে করে গ্রামে যেতে পেরেছে। এখন অফিসের ছুটি শেষে সবাই ফিরে আসছে। তবে মানুষের সমাগম কম। প্রতিদিনের মতো দক্ষিণাঞ্চল থেকে শতাধিক লঞ্চ ঢাকায় এসেছে।
রাস্তার অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে কল্যাণপুরের শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার মো. বাবলু জানান, শুক্র ও শনিবার কুষ্টিয়া, পাবনা, রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর ও পঞ্চগড় থেকে ছেড়ে আসা গাড়িগুলো নির্ধারিত সময়ের দেড় থেকে ২ ঘণ্টা আগেই চলে এসেছে। যাত্রীরাও কোনো অভিযোগ করেননি। তবে আজ থেকে কিছুটা যানজট হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে বাস, ট্রেন ও লঞ্চে না ওঠাসহ ঈদফেরত যাত্রীদের উদ্দেশে বেশকিছু সতর্কতামূলক পরামর্শ দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এর মধ্যে রয়েছে তাড়াহুড়ো করে কিংবা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় যানবাহনে না ওঠা, ট্রেন কিংবা বাসের ছাদে চড়া থেকে বিরত থাকা, নদীপথে ফেরার সময় ছোট শিশুদের হাতছাড়া না করা, রাস্তার পাশে ডাব বা পানীয়জাতীয় কিছু না খাওয়াসহ মোট ১৪টি সতর্কতামূলক পরামর্শ দেয়া হয়েছে ডিএমপির পক্ষ থেকে। রাস্তায় যেকোনো সহযোগিতার জন্য পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ০১৭১৩-৩৯৮৩১১ এবং ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমে ০১৭১১-০০০৯৯০ এই নম্বরে যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আরকে//
আরও পড়ুন