ঢাকা, বুধবার   ০৮ জানুয়ারি ২০২৫

উ. কোরিয়ার বোমা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বোমার চেয়েও শক্তিশালী!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৩১, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১৫:৫৩, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭

উত্তর কোরিয়া রোববার যে হাইড্রোজেন বোমাটি পরীক্ষা করেছে সেটির ধ্বংসক্ষমতার বিচারে সাধারণ পারমানবিক বোমার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি শক্তিধর

যদিও পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা এখনও নিশ্চিতভাবে বলেনি যে বোমাটি হাইড্রোজেন বোমা কিনা। তবে তারা স্বীকার করছেন, এখন পর্যন্ত উত্তর কোরিয়া যতগুলো পারমানবিক বোমার পরীক্ষা চালিয়েছে, এটি ছিল তার মধ্যে সবচেয়ে শক্তিধর।

মাটির নিচে দশ কিলোমিটার গভীরে এই বিস্ফোরণের পর রিক্টার স্কেলে ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়েছে যার ফলে পার্শ্ববর্তী চীনের বেশ কিছু এলাকাতেও ভূকম্পন হয়।

বিস্ফোরণের পর ভূকম্পনের মাত্রা বিবেচনা করে অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, উত্তর কোরিয়ার পরীক্ষা করা বোমাটির শক্তি ছিল ১০০ কিলোটনের মত।

অর্থাৎ ১৯৪৫ সালে জাপানের নাগাসাকি শহরে আমেরিকার যে পারমানবিক বোমা তাৎক্ষনিক ৭০ হাজার মানুষের জীবন নিয়েছিল, উত্তর কোরিয়ার বোমটির শক্তি তার চেয়ে পাঁচগুণ বেশি।

আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির অধ্যাপক ভিপিন নারাং বলেছেন, বোমাটি হাইড্রোজেন বোমা হোক আর না হোক, এটি দিয়ে আমেরিকার যে কোনো বড় একটি শহর পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে ফেলা সম্ভব।

এখন পর্যন্ত পৃথিবীর বুকে মানুষের সৃষ্ট সবচেয়ে বড় বিস্ফোরণ হয়েছিল ১৯৬১ সালে যখন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নে। `জার বোমবা` বা `বোমার রাজা` নামে পারমানবিক বোমাটির পরীক্ষা হয়। ঐ হাইড্রোজেন বোমার শক্তি ছিল ৫০ হাজার কিলোটন।

আর্কটিক অঞ্চলে নোভায়া জেমলিয়া নামে দ্বীপপুঞ্জের যে জায়গায় ঐ দানবীয় বোমাটি পরীক্ষা করা হয়েছিল, তার ৩৫ মাইলের মধ্যে সমস্ত ভবন, স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।

এমনকী শত শত কিলোমিটার দুরেও ভবনে ক্ষতি হয়েছিল। ফিনল্যান্ড, নরওয়ের মত অনেক দুরের দেশগুলোতেও বহু বাড়ির জানালার কাঁচ ভেঙ্গে পড়েছিল।

তবে বিশ্বের প্রথমবারের মত হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্র ১৯৫২ সালে, প্রশান্ত মহাসাগরের মার্শাল দ্বীপে। সেটির শক্তি ছিল ১০ হাজার কিলোটন।

৫০ কিমি দুরে একটি জাহাজে বসে সেই পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ করেছিলেন মার্কিন একজন পদার্থ বিজ্ঞানী হ্যারল্ড অ্যাগনিউ। তিনি পরে বলেছিলেন, অত দূরে বসে যে তাপ সেদিন বোধ করেছিলাম তা জীবনেও ভুলবোনা। ক্রমাগত তাপ আসছিলো। ভীতিকর এক অভিজ্ঞতা ছিলো সেটি। পরীক্ষার পর ধোঁয়ার কুন্ডুলি ৫০ কিমি উপরে উঠে গিয়েছিল, ছড়িয়ে পড়েছিল ১০০ কিমি পর্যন্ত।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে শক্তিশালী পারমানবিক পরীক্ষা ছিল ১৯৫৪ সালে ঐ মার্শাল দ্বীপেরই বিকিনি অ্যাটল এলাকায়। শক্তি ছিল ১৫ হাজার কিলোটন। পরীক্ষার পর ১১ হাজার কিমি পর্যন্ত তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছিলো। শত শত বহু মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিলো, যারা আর কখনই বাড়িতে ফিরতে পারেনি।

 

//আর//এআর


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি