ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪

উচ্চশিক্ষার জন্য বৃত্তি নিয়ে জার্মানি যাবেন যেভাবে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:৩৮, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

জামার্নির ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপলায়েড সায়েন্স- সংগৃহীত

জামার্নির ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপলায়েড সায়েন্স- সংগৃহীত

জার্মানি শুধু ইউরোপ নয় বিশ্বের ধনী দেশগুলোর অন্যতম একটি। তথ্য-প্রযুক্তিতে অগ্রসরমান এই দেশটি শিক্ষাসহ নানা দিক দিয়ে ইউরোপের শীর্ষস্থানীয়। বিশেষ করে দেশটির শিক্ষাব্যবস্থা অত্যন্ত আধুনিক এবং যুগোপযোগী। রয়েছে বিশ্বের বহু নামিদামী বিশ্ববিদ্যালয়। উচ্চশিক্ষার জন্য স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের পছন্দের অন্যতম গন্তব্য এখন ইউরোপের সমৃদ্ধ দেশ জার্মানি। শিক্ষা ও গবেষণায় শূন্য টিউশন ফি ও শিক্ষাবৃত্তির সুবিধা। বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মেধাবীসহ সব ধরনের শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার জন্য জার্মানিকে নির্দ্বিধায় বেছে নিচ্ছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও দেশটির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ থেকে পিছিয়ে নেই।

ইউরোপের এ দেশটিতে উচ্চশিক্ষার জন্য প্রায় ৩০০ ইনস্টিটিউশন রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ৮২টি বিশ্ববিদ্যালয়, ১৩৬টি অ্যাপ্লাইড বিশ্ববিদ্যালয় এবং মিউজিক ও ফাইন আর্ট বিষয়ক প্রায় ৪৬টি কলেজ। 

উচ্চশিক্ষার জন্য আপনি যে দেশেই যান না কেন, এর জন্য আপনাকে ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে হবে। বলা হয়ে থাকে, যে যত ভালোভাবে প্রক্রিয়াগুলো জানবেন তার জন্য পড়াশুনার উদ্দেশ্যে বিদেশ যাত্রা তত সহজ হবে। অর্থাৎ আমাদের দেশের অনেক শিক্ষার্থীই বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করতে চান। তবে যথাযথভাবে প্রক্রিয়া না জেনেই তারা দিগ্বিদিক দৌড়ঝাপ করেন। তাই আগে থেকেই জেনেশুনে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে অগ্রসর হওয়া ভালো। 

জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে চান? কোথায় শুরু করবেন? কী কী লাগবে? বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার উপায় কী? কোর্স ফি এবং থাকা-খাওয়ার জন্য কত অর্থের প্রয়োজন?

এমন অনেক প্রশ্নের বিস্তারিত জবাব পাবেন study-in-germany.de এই ওয়েবসাইটে। রয়েছে জার্মান উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার কাঠামো সম্পর্কে অনেক মূল্যবান তথ্য। জার্মানির দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অনেক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কেও অনেক কিছু জানতে পারবেন এই একটিমাত্র ওয়েবসাইটে।

প্রথমত, অ্যাপ্লাইড বিশ্ববিদ্যালয় (Applied Science University)। যেখানে ছাত্রদের মূলত চাকরি অরিয়েন্টেড বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। গবেষণামূলক কাজ এখানে হয় না বললেই চলে।

দ্বিতীয়ত, টেকনিক্যাল বা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (Technical University), যেখানে প্রকৌশলসহ বিজ্ঞান বিভাগের বিষয়গুলো পড়ানো হয়। সঙ্গে সঙ্গে রয়েছে ব্যাপক গবেষণামূলক প্রকল্প।

কখন যাবেন জার্মানিঃ
জার্মানিতে পড়াশোনার জন্য যেতে পারেন কয়েকভাবে। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে কেউ জার্মানি যেতে চাইলে তাকে জার্মান ভাষা কোর্সে ভর্তি হতে হবে। খুব কম সংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট পর্যায়ে ইংলিশ ভাষায় কোর্স চালু আছে। প্রথম চেষ্টা করতে পারেন ইংলিশ ভাষায় পড়ানো হয় এমন কোনো সাবজেক্টে ভর্তি হতে। তা না পেলে ব্যাচেলর কোর্সে ভর্তি হওয়া যেতে পারে।

প্রথমত, বাংলাদেশে জার্মান ভাষার কিছু প্রাথমিক জ্ঞান নিয়ে সংশ্নিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদন করুন। ভর্তি হতে পারলে এখানে এসে মূল কোর্স শুরুর আগে ছয় থেকে এক বছরের মধ্যে জার্মান ভাষার বাকি কোর্স করে ফেলুন। 

অন্যভাবেও যাওয়া যায়। আপনি সরাসরি বাংলাদেশ থেকে জার্মানির যে কোনো ভাষা শিক্ষা কেন্দ্রে আবেদন করুন। ভর্তি হতে পারলে ভাষা শিক্ষার জন্য ভিসা পাবেন। এখানে এসে ভাষা শিক্ষা সমাপ্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার পছন্দের সাবজেক্টে ভর্তি হতে পারেন।

উচ্চশিক্ষার তথ্য:
জার্মানি ও এর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি তথ্য, ছাত্রবৃত্তিসহ অন্যান্য তথ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উৎসগুলোর মধ্যে জার্মান একাডেমিক একচেঞ্জ সার্ভিস (Technical University) বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এখানে বিভিন্ন সাবজেক্টের তালিকা ও স্কলারশিপের তথ্য পাবেন। স্কলারশিপের জন্য জার্মান সায়েন্স ফাউন্ডেশন DFG, (http://dfg.de/en জার্মান শিক্ষা ও গবেষণা মন্ত্রণালয় BMBF(http://www.bmbf.de/) উল্লেখযোগ্য। এসব সংস্থার ওয়েবসাইটের সংশ্লিষ্ট ইংলিশ সংস্করণে আপনাকে ব্যাপক সার্চ করতে হবে।

বৃত্তির সুযোগ:
প্রতি বছর দু'লাখ বিদেশি শিক্ষার্থী এবং ২৫ হাজার পিএইচডি গবেষক জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হন। এই বিশাল সংখ্যার শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৫ শতাংশ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বৃত্তি পেয়ে থাকেন। ডিএএডি বা জার্মান ছাত্রবিনিময় কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতি বছর অনেক শিক্ষার্থী জার্মানে পড়াশোনার সুযোগ পান।

জার্মানিতে পড়ার বিষয়:
বিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান ও মানবিক সব শাখাতেই উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ রয়েছে জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। জার্মানির উল্লেখযোগ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হচ্ছে- লুদভিক ম্যাক্সিমিলিয়ান ইউনিভার্সিটি অব মিউনিখ, ফ্রি ইউনিভার্সিটি অব বার্লিন, হাইডেলবার্গ ইউনিভার্সিটি, উলম ইউনিভার্সিটি, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাড হনেফ প্রভৃতি। প্রতিবছর আড়াই লাখ বিদেশি শিক্ষার্থী এবং ২৩ হাজার পিএইচডি গবেষক জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হন। এই বিশাল সংখ্যার শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৫ শতাংশ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বৃত্তি পেয়ে থাকেন। ডিএএডি বা জার্মান ছাত্রবিনিময় কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিবছর অনেক শিক্ষার্থী জার্মানি পড়াশোনার সুযোগ পান।

এছাড়াও ডিএএডি বা জার্মান ছাত্রবিনিময় কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিবছর অনেক শিক্ষার্থী জার্মানিতে পড়াশোনার সুযোগ পান। বর্তমানে ৪৫ হাজার বিদেশি শিক্ষার্থীকে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এই প্রতিষ্ঠানের বৃত্তিভোগীদের ৭০ শতাংশই আসেন বিদেশ থেকে। স্নাতক কোসের্র শিক্ষার্থীরা মাসে ৬৫০ ইউরো, স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীরা ৭৫০ ইউরো আর পিএইচডি গবেষকেরা এক হাজার ইউরো পেয়ে থাকেন বৃত্তি হিসেবে। তবে স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বৃত্তির সুযোগ সীমিত। বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বৃত্তি নিয়ে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি পর্যায়ে পড়াশোনার জন্য জার্মানিতে যান শিক্ষার্থীরা।

স্টিপেন্ডিয়াটেন ডেয়ার স্টুডিয়েনস্টিফটুং ডয়েচেস ফল্ক, ডয়েচলান্ড স্টিপেন্ডিয়ুম নামের বৃত্তিসহ বিভিন্ন ফাউন্ডেশনের বৃত্তি পাওয়ার সুযোগও রয়েছে। ডিএএডি কনরাড আডেনাওয়ার ফাউন্ডেশন, হাইনরিশ ব্যোল ফাউন্ডেশন, ফ্রিডরিশ এবার্ট ফাউন্ডেশন, বোরিংগার ইংগেলহাইম ফাউন্ডেশন প্রভৃতি ফাউন্ডেশন থেকে বৃত্তি পেয়ে থাকেন শিক্ষার্থীরা।

নিজ খরচে পড়াশোনা:
অনেকেরই জানার আগ্রহ থাকে যে, জার্মানিতে নিজ খরচে পড়াশোনায় কেমন টাকা লাগে। প্রশ্নটা অনেক সহজ হলেও এক কথায় উত্তর দেওয়া বেশ কঠিন! এর অন্যতম কারণ হল- কেউ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেছেন এবং সেখান থেকে অফার লেটার পেয়েছেন, আবার কেউ ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করে একটি থেকে অফার লেটার পেয়ে জার্মানিতে গিয়েছেন। কেউ ইউনি এসিস্ট দিয়ে আবেদন করেছেন আবার কেউ সরাসরি ভার্সিটিতে আবেদন করেছেন। যদিও সরাসরি আবেদনের সুযোগ খুবই কম। 

যেমন ধরুন- কারো ইউনি এসিস্ট ফি ও ব্লক একাউন্ট-এর টাকা তাদের বিদেশে থাকা আত্মীয় পরিশোধ করাতে তাদের ট্রান্সপার ফি দিতে হয়নি এবং ইউরোর রেট নিয়ে চিন্তা করতে হয়নি। কারো ক্ষেত্রে জার্মানিতে থাকা আত্মীয় তাকে স্পন্সর করতে রাজি হয়েছে, সে কারণে তাকে ব্লক একাউন্টে টাকা রাখতে হচ্ছে না। আবার কয়েকটা ভার্সিটি ডকুমেন্ট মূল্যায়ন করতে আলাদা করে টাকা নেয়। যেমন: Hochschule Worms

আবেদন খরচ:
ধরে নিলাম, আপনি ৫টি আবেদনই ইউনি এসিস্ট দিয়ে করবেন। সেক্ষেত্রে খরচ প্রথম আবেদনে ৭৫ ইউরো, এর পরে সবগুলোর জন্য ৩০ ইউরো করে। সেক্ষত্রে সর্বমোট পড়বে ১৯৫ ইউরো। ট্রান্সফার খরচসহ ২০০ ইউরো ধরে নিলাম। যেটা ১০০ টাকা ইউরো রেট ধরে ২০ হাজার টাকা। ডকুমেন্ট পাঠাতে ১ হাজার টাকা থেকে আড়াই হাজার পর্যন্ত খরচ হতে পারে। আমরা ২৫০০ কে-ই স্ট্যান্ডার্ড ধরবো। পরবর্তীতে আর্থিক লেনদেন করার জন্য আপনাকে বাংলাদেশের কোন ব্যাংকে স্টুডেন্ট ফাইল খুলতে হবে। স্টুডেন্ট ফাইলের খরচ ৫ হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে। আমরা ১৫ হাজার টাকা ধরে নিলাম। এছাড়াও ব্লক একাউন্ট করতে লাগবে ৮ হাজার ৬৪০ ইউরো। ব্লক একাউন্ট করতে আপনাকে জার্মান ব্যাংকে ফি দিতে হবে ৯৯ ইউরো থেকে ২০০ ইউরো। আপনি পার্টটাইম জব পাবার পর ওই টাকা আর খরচ করা লাগবে না, যদি আপনার যথেষ্ট ইনকাম থাকে। তবে, আপনাকে ১০০ টাকা রেটে ৮৬ লাখ ৪ হাজার টাকা ব্লক একাউন্টে রাখতে হবে। যা থেকে প্রতি মাসে ৭২০ ইউরো করে পাওয়া যাবে।

অনলাইনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের সব প্রক্রিয়া ও বৃত্তি সম্পর্কে জানা যায়।

জার্মানির কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়:
টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব মিউনিখ: জার্মানির দক্ষিণ দিকে অবস্থিত বাভারিয়ার রাজধানী মিউনিখে বিশ্বের সেরা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মিউনিখ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর মধ্যে অন্যতম। ২০১৩ সালের জরিপে দেখা গেছে, সেখানকার প্রতি পাঁচজনের একজন শিক্ষার্থী বিদেশি। বিস্তারিত দেখুন- https://www.tum.de/en/

বার্লিনের হুমবল্ট বিশ্ববিদ্যালয়: জার্মানির পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে আরেকটি হলো বার্লিনের হুমবল্ট বিশ্ববিদ্যালয়। বিস্তারিত দেখুন- www.hu-berlin.de

হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়: ১৩৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়টি জার্মানির সবচেয়ে পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয়। বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য তাই এটি অনেকটা তীর্থস্থানের মতো। বিশেষ করে যারা দক্ষিণ এশিয়া সম্পর্কে জানতে বা দক্ষিণ এশিয়ার কোনো ভাষা নিয়ে পড়াশোনা করতে চান। এর অবস্থান সপ্তম।

যা যা জানা প্রয়োজন:
প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থী জার্মানিতে উচ্চশিক্ষা নিতে আসেন। জার্মানিতে কম খরচে উচ্চমানের শিক্ষা পাওয়া যায়। তবে জার্মানির উদ্দেশ্যে বিমানে চড়ার আগে শিক্ষার্থীদের কিছু বিষয় জেনে রাখা প্রয়োজন। 

১. জার্মানির ১৬টি রাজ্যের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোনো টিউশন ফি নেই। এটা সত্য! তবে এক্ষেত্রে শর্ত প্রযোজ্য। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সুনির্দিষ্ট ডিগ্রি প্রোগ্রামে আবেদন করলে বিনা খরচায় পড়ার সুযোগ আছে। সেক্ষেত্রে স্থানীয়রা যেসব শর্ত মেনে লেখাপড়া করেন, বিদেশিদেরও সেগুলো মানতে হবে। স্টাডি এবরোড প্রোগ্রাম এবং প্রাইভেট ইন্সটিটিউটে পড়াশোনা ফ্রি নয়।

২. একজন বিদেশি শিক্ষার্থী হিসেবে পড়ালেখার ফাঁকে আপনি কতটা কাজ করতে পারবেন, সেটা নির্ধারণ করে দেওয়া থাকে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ-র কোনো দেশের পাসপোর্টধারী নয়, এমন শিক্ষার্থীরা বছরে ১২০ দিন পূর্ণদিবস কিংবা ২৪০ দিন অর্ধদিবস কাজ করতে পারেন। এছাড়া সেমিস্টার চলাকালে সপ্তাহে ২০ ঘণ্টার বেশি কাজ করা যাবে না। ভালো কথা, গোপনে বাড়তি কাজের চেষ্টা করবেন না। ধরা পড়লে বড় সমস্যা হতে পারে।

৩. আশার কথা হচ্ছে- বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন অনুদান এবং ফেলোশিপের ব্যবস্থা রয়েছে জার্মানিতে। আপনার বিষয় যাই হোক না কেন, আপনি যদি তাতে মেধাবী হন এবং উচ্চশিক্ষার জন্য পরিশ্রমে আগ্রহী হন, তাহলে অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারেন। জার্মান অ্যাকাডেমিক এক্সচেঞ্জ সার্ভিস বা ডিএএডি এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করে থাকে। তবে অনুদানের আবেদন প্রফেশনালদের মতো হওয়া চাই।

৪. উন্নয়নশীল দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে জার্মানিতে পড়তে আসার ভিসা পাওয়া একটু জটিল। তাঁদের বেশ কিছু দিন সময় হাতে রেখে ভিসার আবেদন করতে হয়। আর জার্মানিতে আসার পর মাঝেমাঝেই যেতে হয় আউসলান্ডারবেহ্যোর্ডে বা বিদেশিদের জন্য নির্ধারিত সরকারি কার্যালয়ে।

৫. জার্মানিতে আসার পর আপনি নিয়মিতই বিভিন্ন চিঠি পাবেন। এমনকি কবে কবে বাড়ির সামনে কোন কোন ধরনের ময়লা রাখা যাবে, সেটাও জানবেন চিঠির মাধ্যমে। বুদ্ধিমানের কাজ হবে সব চিঠি জমা করে রাখা। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী উত্তর দিতে ভুল করবেন না যেন। জার্মানিতে বসবাসের একটি বিরক্তিকর দিক হচ্ছে- দেশটির জটিল আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। সেই প্রক্রিয়ার অংশ এ সব চিঠি।

৬. এটাও সত্য, জার্মানির বড় শহরগুলোতে জার্মান না জেনেও বসবাস করা য়ায়। এছাড়া বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন ইংরেজিতে পড়ালেখার সুযোগ রয়েছে। তবে কিছুটা জার্মান ভাষা শিখতে পারলে দেশটিতে জীবনযাপন অনেক সহজ হয়ে যাবে। আর আপনি যদি পড়ালেখা শেষে জার্মানিতে চাকরি করতে চান, তাহলে ভাষা জানাটা অনেক জরুরি। এক্ষেত্রে ডয়চে ভেলের জার্মান ভাষা শিক্ষা কোর্স আপনাকে সহায়তা করতে পারে।

৭. জার্মানির বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিদেশি শিক্ষার্থীদের আবাসনের ব্যবস্থা করে থাকে। তবে তাদের সেবা নেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেছে দেওয়া অ্যাপার্টমেন্ট শিক্ষার্থীর পছন্দ হয় না। আশার কথা হচ্ছে- অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলো থেকে থাকার জায়গা বেছে নেওয়া যায়। যদিও কাজটা কঠিন। তবে চেষ্টা করবেন এমন জায়গায় থাকার, যেখানে জার্মান শিক্ষার্থীরা থাকেন। তখন ভাষা শেখাটা আপনার জন্য সহজ হবে।

আবেদন করবেন যেভাবে:
অনলাইনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের সব প্রক্রিয়া ও বৃত্তি সম্পর্কে জানা যায়। বাংলাদেশি স্টুডেন্ট অ্যান্ড অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন ইন জার্মানির ওয়েবসাইট (bsaagweb.de) থেকেও শিক্ষার্থীরা জার্মানিতে বর্তমানে পড়ছেন এমন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সরাসরি পরামর্শ নিতে পারেন। জার্মানির শিক্ষাব্যবস্থা, দৈনন্দিন জীবনযাপন, পড়ালেখা-চাকরির সুবিধাসহ যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাচ্ছে এ সাইট থেকে।

প্রয়োজনীয় ওয়েবসাইট:

১. স্টাডি ইন জার্মানি : study-in.de

২. ডিএএডি : daad.de/en

৩. ঢাকার জার্মান দূতাবাস : dhaka.diplo.de

৪. গ্যেটে ইনস্টিটিউট, ঢাকা : goethe.de/ins/bd/en/dha.html

এমএস/এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি