উত্তরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, সিলেটে খাদ্যসংকট
প্রকাশিত : ১৫:০০, ৬ জুলাই ২০২৪ | আপডেট: ১৫:০৩, ৬ জুলাই ২০২৪
সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দুর্দশা কাটছে না পানিবন্দি মানুষের। উত্তরের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ডুবে গেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাড়িঘর, রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি। পানবন্দি অবস্থায় মানবেতর দিনযাপন করছেন বন্যা কবলিতরা । উত্তরাঞ্চলের সবকটি নদ-নদীর পানি বেড়েছে। বানের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।
গাইবান্ধা, বগুড়াসহ বেশক’টি জেলার স্কুলে পানি ঢুকে পড়ায় পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে। এদিকে সিরাজগঞ্জে যমুনার ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি।
বগুড়ায় প্রবল বৃষ্টিতে সারিয়াকান্দি উপজেলায় যমুনা ও বাঙালি নদীতে পানি বেড়েই চলেছে। সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় ৩৭ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। এরফলে সারিয়াকান্দির ইছামারা, হাটশেরপুর, কর্ণিবাড়ি, সোনাতলার সুজাইতপুর এবং ধুনটের শহড়াবাড়ি বাঁধের ১০০০ মিটার ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
সোনাতলা উপজেলার ২০টিরও বেশি গ্রামে বিপুলসংখ্যক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। আটটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মাদ্রাসায় পানি ঢুকে পড়ায় পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে। ৮৫ হেক্টর ফসলি জমি এখন পানির নিচে।
জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ৫০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করেন। যতদিন বন্যা আছে ততদিন ত্রাণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য।
গাইবান্ধায় তিস্তার পানি কমলেও যমুনা, ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। প্লাবিত হয়েছে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটার ৩১টি ইউনিয়ন।
এদিকে সিরাজগঞ্জে যমুনার পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। শহর রক্ষা বাঁধের হার্ড পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর পানি বাড়ার সাথে তীব্র হয়েছে ভাঙন। শাহজাদপুর ও এনায়েতপুরের হাট পাঁচিল, সৈয়দপুর, ভেকা, জালালপুরে যমুনায় বিলীন হয়েছে শতাধিক ঘরবাড়ি।
টাঙ্গাইলে ঝিনাই নদীর পানি বিপদসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার এবং ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার ভুঞাপুর, কালিহাতী ও সদর উপজেলার চলাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে কুড়িগ্রামের। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী, নুনখাওয়া ও হাতিয়া এবং পাটেশ্বরী পয়েন্টে দুধকুমারের পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দী হয় পড়েছে প্রায় সোয়া লাখ মানুষ। জেলার নদী তীরবর্তী ৪৪টি ইউনিয়নের ৩ শতাধিক গ্রাম বন্যার পানিতে ভাসছে। সেই সাথে দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও জীবন রক্ষাকারী ওষুধের সংকট।
এদিকে, সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দুর্দশা কাটছে না পানিবন্দি মানুষের। একমাসের মধ্যে ৩ দফা বন্যায় খাদ্য সংকটে পড়েছেন বন্যাকবলিতরা। বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় পানি নামছে না সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জসহ বিভিন্ন বন্যাদুর্গত এলাকায়। উপজেলার গ্রামীণ সড়কগুলো তলিয়ে থাকায় দুর্গম এলাকায় যাচ্ছে না ত্রাণ সহায়তা।
এএইচ
আরও পড়ুন