উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহবান শিল্পমন্ত্রীর
প্রকাশিত : ১৮:৪২, ১ এপ্রিল ২০১৯
বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের আত্মবিশ্বাসের সাথে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। তিনি বলেন, সম্প্রতি শিল্প খাতে গ্যাস সংযোগ প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে দেশের উদ্যোক্তাদের মাঝে আস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সেই আস্থা ও বিশ্বাসে উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে হবে।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এর সভাপতি ওসামা তাসীর এর নেতৃত্বে ডিসিসিআই’র পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ শিল্পমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান। শিল্প মন্ত্রণালয়ে সোমবার এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
সাক্ষাৎকালে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ওসামা তাসীর শিল্পখাতের বহুমুখীকরণের প্রেক্ষিতে গার্মেন্টস শিল্পের ন্যায় অন্যান্য অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত শিল্পখাতে ব্যাক টু ব্যাক এলসি অনুমোদনের প্রস্তাব করেন। ডিসিসিআই সভাপতি জানান, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বৈশ্বিক বিদেশী বিনিয়োগ যেখানে ২৩% হ্রাস পেয়েছে, সেখানে বাংলাদেশে তা ৫.১২% বৃদ্ধি পেয়ে ২.৫৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। তিনি শিল্পখাতে বিদেশী বিনিয়োগ উন্নয়নের প্রেক্ষিতে ‘বিদেশী বিনিয়োগ উন্নয়ন টাস্কফোর্স’ গঠনের প্রস্তাব করেন।
শিল্পখাতে ঋণের সুযোগ বৃদ্ধি প্রসঙ্গে ডিসিসিআই সভাপতি দেশের শিল্পায়নের বিকাশ ও শিল্পপণ্যের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ঋণের সুদের হার এক অঙ্কে নিয়ে আসা এবং এসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য ঋণের সহজলভ্যতা একান্ত জরুরি বলে মত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, শিল্পখাতের বিকাশ ও বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য অবকাঠামো খাতের উন্নয়ন অপরিহার্য এবং সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য প্রতিযোগী দেশসমূহের মতো জিডিপির ৬-৮ শতাংশ বাজেটে বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করেন। ডিসিসিআই সভাপতি ব্যবসা পরিচালনার সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সংষ্কার কার্যক্রম ত্বরান্তিত করতে সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থাকে একযোগে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এ ছাড়াও ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বৈশ্বিক হালাল পণ্যের বাজারে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির জন্য দেশে বিশেষায়িত হালাল পণ্যভিত্তিক শিল্প উৎসাহিত করা উচিত এবং ঢাকা চেম্বার দেশে একটি আন্তর্জাতিক মানসম্মত হালাল পণ্যের সনদ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে স্থাপনে আগ্রহী বলে মন্তব্য করেন।
ঢাকা চেম্বারের প্রতিনিধি দলকে শিল্প মন্ত্রণালয়ে আসার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল রাখার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে, তাই এ খাতের উন্নয়নে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।
তিনি বলেন, আমাদের তৈরি পোশাকের পর চামড়া শিল্প অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এবং এ খাতে বিকাশের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হবে। মন্ত্রী জানান, ট্যানারি শিল্পের জন্য সরকারের পক্ষ হতে কেন্দ্রীয়ভাবে ইটিপি প্ল্যান্ট স্থাপন করা হবে এবং বেসরকারি উদ্যোক্তারা ইটিপি প্ল্যান্ট স্থাপনে আগ্রহী হলে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা দেওয়া হবে। তিনি ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়ন, পণ্যের বহুমুখীকরণ ও বাজার সম্প্রসারণের ওপর জোরারোপ করেন এবং একই সাথে এ খাতের উদ্যোক্তাদের ঋণ সুবিধা প্রাপ্তির বিষয়টি অত্যন্ত জরুরী বলে মত প্রকাশ করেন। তিনি ব্যবসায়ীদের সমস্যা দ্রুততম সময়ে নিষ্পত্তির আশ্বাস প্রদান করেন।
এ সময় ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী, সহ-সভাপতি ইমরান আহমেদ, পরিচালক আন্দালিব হাসান, আশরাফ আহমেদ, আলহাজ্ব দ্বীন মোহাম্মদ, এনামুল হক পাটোয়ারী, হোসেন এ সিকদার, মোঃ রাশেদুল করিম মুন্না, নূহের লতিফ খান এবং এস এম জিল্লুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরকে//
আরও পড়ুন