ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

উন্নয়নশীলতায় অর্জনের পাশাপাশি আছে চ্যালেঞ্জ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২৩:৪৭, ১৮ মার্চ ২০১৮

জাতিসংঘের সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) ঘোষণা দিয়েছে যে এলডিসি থেকে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের শর্ত হিসেবে তিনটি সূচকেই নির্ধারিত মান অর্জন করেছে বাংলাদেশ। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে উন্নয়নশীল দেশ হবে বাংলাদেশ। যা বাংলাদেশের জন্য বড় একটি অর্জন। তবে এ বড় অর্জনের জন্য বাংলাদেশকে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

জানা গেছে, এই উন্নতির ধারাবাহিকতা আরো তিন বছর বজায় রাখতে হবে। এরপর ২০২১ সালে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিল (ইকোসোক) স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা উত্তরণের সুপারিশ করবে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অনুমোদনের জন্য আরো তিন বছর অর্থাৎ ২০২৪ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বাংলাদেশকে। এরপরই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে জাতিসংঘের তালিকায় থাকবে।

পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউট (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের অর্জন ধরে রাখতে অনেক চ্যালেঞ্জ টপকাতে হবে বাংলাদেশকে। সেক্ষেত্রে আমাদের বিনিয়োগসহ পরিবহন ও আমদানি-রফতানির যে সব সমস্যা আছে তা দূর করতে হবে।

তবে প্রথমবারের মতো উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করার খবরটি বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক হিসেবে মনে করা হচ্ছে। ১৯৭৬ সালে এলডিসিভুক্ত হওয়ার পর এই প্রথম অর্থনৈতিক উন্নতির বড় ধরণের স্বীকৃতি পেল বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৫ সালে বিশ্বব্যাংকের তালিকায় নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হয়েছে বাংলাদেশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে আগামী ৯ বছরে বাজারসুবিধায় তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। ২০১৭ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত বাজারসুবিধা থাকবে। ওষুধশিল্পের মেধাস্বত্ব সুবিধা ২০৩৩ সাল পর্যন্ত থাকবে।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এ নিয়ে বলেন, দাতাদের কাছ থেকে যেহেতু রেয়াতি সুদে ঋণ প্রাপ্তি কমে যাবে, তাতেই বিকল্প অর্থায়নের দিকে জোর দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে কর আহরণ বৃদ্ধি করতে হবে। তিনি আরো বলেন, যেসব দেশ এলডিসি থেকে বের হয়েছে, তাদের বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কী হয়, তা দেখার বিষয়। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, নীতি ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ওপর জোর দিতে হবে। তার মতে অর্থনীতিতে যে কাঠামোগত দুর্বলতা আছে, তা দূর করতে হবে। কেননা এমন এক সময় বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বের হবে, তখন বৈরি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।

জানা গেছে, এলডিসি থেকে উত্তরণের কারণে বাণিজ্যিক সুবিধা কমা, রেয়াতি ঋণসুবিধা না পাওয়া, সুরক্ষার ক্ষমতা কমাসহ বেশকিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে বাংলাদেশকে।

বর্তমানে ইউরোপের ৪০টি দেশে অগ্রাধিকারমূলক বাজারসুবিধা পায় বাংলাদেশ। উন্নয়নশীল দেশ হলে এ সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার প্রশ্ন উঠবে। তবে একতরফা তাৎক্ষণিকভাবে এ সুযোগ শেষ হবে না, আলোচনার মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত হবে। দর কষাকষির মাধ্যমে জিএসপি প্লাসে বাংলাদেশ অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
অন্যদিকে এলডিসি হওয়ার কারণে প্রত্যক্ষভাবে দাতাদের দেশগুলোর কাছে রেয়াতি সুবিধা পায় না বাংলাদেশ। তবে কম মাথাপিছু আয়ের দেশ হিসেবে বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) থেকে মাত্র দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে ঋণ পায় বাংলাদেশ।

এছাড়া স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নিজের অভ্যন্তরীণ শিল্প সুরক্ষায় সম্পূরক শুল্ক, নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বসানোসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু এলডিসি থেকে বের হয়ে গেলে এ ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ সংকুচিত হতে পারে।

আরকে//এসি

 

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি